নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বাংলাদেশ শুক্রবার। বিকাল ৪:১০। ৭ নভেম্বর, ২০২৫।

ভোট দিয়ে খুশি ভোটাররা

জুলাই ১৭, ২০২৩ ৯:২০
Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিয়ান ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল এক যুগ আগে। তারপর সীমানা সংক্রান্ত জটিলতায় আর ভোট হয়নি। আইন-আদালত হয়ে অবশেষে এই ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো সোমবার। এক যুগ পর ভোট দিতে পেরে খুশি ভোটাররা। উৎসবমুখর পরিবেশে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে।

সকাল সাড়ে ৯টায় হরিয়ানের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আদর্শ ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেল, নারী ও পুরুষদের দুই লাইনেই ভোটারদের উপচেপড়া ভিড়। জুলেখা খাতুন নামের এক নারী ভোট দিয়ে বেরিয়ে এসে বললেন, ‘সেই কবে চেয়ারম্যান-মেম্বারের ভোট দিয়েছি! এরপর তো আর ভোটই হয়নি। অ্যাতদিন পর আবার ভোট দিনু। ভালই লাগল।’

সকাল ১০টায় সুচরণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, তীব্র রোদের মধ্যেও লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন নারীরা। একটু ছায়া পেতে পুরুষেরা স্কুলভবনের পাশ ঘেঁষে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। আফজাল হোসেন নামের এক ভোটার বললেন, ‘যতুই কষ্ট হোক, আইজ ভোট দিবই। অ্যাতদিন পর ভোট আইস্যাছে, ভোট না দিলে কি হয়! ভোটও সুন্দর হোছে। সভাই তো শান্তিপূর্ণভাবে যে যার ভোট দিয়ে বাহির হইয়্যা আইসছে।’ বিকাল পর্যন্ত এই কেন্দ্রের ৮৩ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।

হরিয়ান ইউনিয়নের দুটি ওয়ার্ড পড়েছে পদ্মা নদীর ওপারে ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষে। ওয়ার্ড দুটি ভাঙতে ভাঙতে এখন সামান্য অংশই বিদ্যমান। ওই এলাকার ৮০ শতাংশ ভোটার পদ্মার ভাঙনে নিজেদের ঘরবাড়ি হারিয়ে এপারে বসতি গেঁড়েছেন। দুপুরে রাজশাহী নগরীর বড়কুঠি ও মিজানের মোড় ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, পদ্মা নদী পার হয়ে ভোটাররা ভোট দিতে যাচ্ছেন। পদ্মা পাড়ি দেওয়ার পর কেউ মোটরসাইকেলে, কেউ ইঞ্জিনচালিত যানবাহনে চড়ে ভোটকেন্দ্রে যাচ্ছেন।

চরখিদিরপুর ভোটকেন্দ্রের ভোটার আম্বিয়া খাতুন বললেন, ‘ছ’বচ্ছর আগে বাড়িঘর নদীত নাইমি গেছে। আমরাও চর ছাইড়ি ওপারে চলি গেনু। এ পারে অল্প কিছু জমি ছিল। বাড়ির ব্যাটা মানুষরা চাষবাস করতে আসে। আমরা বহু-বিটির আর আসা হয় না। আইজ আনু ভোট দিতে।’

চর তারানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা বৃদ্ধ আবদুল জাব্বার বলেন, ‘আমার যেখানে বাড়ি ছিল, সেখানে এখন বালুচর। বর্ষায় জায়গাটা পানিতে ভইরি থাকে। আসার সময় তাকানু, আইডিয়া করনু, কিন্তু চিনতে পারনু না। বাড়ি ভাইঙ্গা যাওয়ার পর তো আর চরে আসাই হয় না। ১২ বছর পর ভোট, এই ভোট দিতিই আনু। আবার আসা হবে কি না জানি না।’

এ দিন ৯টি ভোটকেন্দ্রে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হয়। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটাররা ভোট দিয়েছেন। ভোটগ্রহণ চলাকালে কোথাও কোন গোলযোগের খবর পাওয়া যায়নি। এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ছয়জন, সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৯ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৫১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১৯ হাজার ৫২৮ জন।

নির্বাচনের প্রিসাইডিং অফিসার শহিদুল ইসলাম প্রামানিক বলেন, ‘ভোটগ্রহণ চলাকালে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আমরা সবাই সতর্ক ছিলাম। দীর্ঘদিন পর এই ইউনিয়নে ভোট হলো বলে ভোটাররা ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ভোট দিয়েছেন।’

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।