নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বাংলাদেশ শনিবার। রাত ৮:৩৬। ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫।

মিয়ানমারে স্কুলে জান্তার বিমান হামলায় ১৯ শিক্ষার্থী নিহত

সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৫ ৬:৫৫
Link Copied!

অনলাইন ডেস্ক : মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের সামরিক জান্তা বাহিনীর বিমান হামলায় অন্তত ১৯ শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। শনিবার রাখাইনের জাতিগত সংখ্যালঘু সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) জান্তার বিমান হামলায় প্রাণহানির এই তথ্য জানিয়েছে। নিহতদের মধ্যে কয়েকজন শিশুও রয়েছে।

রাখাইনের দখল নিয়ে বর্তমানে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে তীব্র লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে আরাকান আর্মি (এএ)। গত এক বছরে ওই অঞ্চলের বিশাল অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে স্থানীয় এই সশস্ত্র গোষ্ঠী।

মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে গত ৫ দশকেরও বেশি সময় ধরে দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলছে বিভিন্ন সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর। তবে এই লড়াই নতুন গতি পেয়েছে ২০২১ সালে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর থেকে।

ওই বছরের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সুচিকে হটিয়ে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। দেশটির সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইং এই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন।

আরও পড়ুনঃ  কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর অপতথ্য নিয়ন্ত্রণ

সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করার পরপরই ফুঁসে উঠেছিল মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী জনতা। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবিতে দেশজুড়ে আন্দোলন শুরু করেন তারা। কিন্তু মিয়ানমারের পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভ দমনে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা শুরু করার পর ২০২২ সালের দিকে গণতন্ত্রপন্থীদের একাংশ জান্তাবিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোতে যোগ দেওয়া শুরু করে।

২০২২ সালে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর বেশিরভাগই সুচির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক জোট ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টে (নাগ) যোগ দেন। তারপর থেকে মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী লড়াই নতুন মাত্রা পেয়েছে। ২০২৩ সালে বছরজুড়ে দেশের বেশ কিছু এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে জান্তা। এসব এলাকার মধ্যে ভারত ও চীন সীমান্তও রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  প্রযুক্তি নির্ভর বন নজরদারিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ:পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা

মিয়ানমারের জান্তার সঙ্গে আরাকান আর্মির বিদ্রোহীদের সংঘাতের অন্যতম কেন্দ্র রাখাইন। শনিবার টেলিগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে আরাকান আর্মি বলেছে, শুক্রবার মধ্যরাতের কিছুক্ষণ পর কিয়াউকতাও শহরের দুটি বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে বিমান হামলা চালিয়েছে জান্তা বাহিনী। এতে ১৫ থেকে ২১ বছর বয়সী ১৯ শিক্ষার্থী নিহত ও আরও ২২ জন আহত হয়েছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা নিরপরাধ শিক্ষার্থীদের প্রাণহানির ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের মতোই শোকাহত। গোষ্ঠীটি এই হামলার ঘটনায় জান্তা বাহিনীকে দায়ী করেছে। তবে এই হামলার বিষয়ে মন্তব্যের জন্য জান্তার মুখপাত্রকে টেলিফোন করা হলেও কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাও বলেছে, রাতে শিক্ষার্থীরা ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন। সেই সময় জান্তার একটি যুদ্ধবিমান থেকে স্কুল ভবন লক্ষ্য করে ৫০০ পাউন্ডের দুটি বোমা নিক্ষেপ করা হয়।

আরও পড়ুনঃ  ভারতে গণেশ বিসর্জনের শোভাযাত্রায় ট্রাকের ধাক্কা, নিহত ৯

জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক তহবিল ইউনিসেফ এক বিবৃতিতে এই ‌‌‘‘নৃশংস হামলার’’ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছে, শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে এই হামলা রাখাইনে ক্রমবর্ধমান সহিংসতার বহিপ্রকাশ। জান্তার এই ধরনের হামলায় শিশু ও তাদের পরিবারগুলোকে চড়া মাশুল গুনতে হচ্ছে।

কিয়াউকতাও অঞ্চলে ইন্টারনেট এবং ফোন সেবা সীমিত থাকায় সেখানকার স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা যায়নি বলে জানিয়েছে এএফপি। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী বর্তমানে দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াইয়ের মুখোমুখি হয়েছে। বেসামরিক এলাকায় জান্তা বাহিনী বিমান হামলার পাশাপাশি কামানের গোলা ছুড়ছে বলে অভিযোগ করছেন বিদ্রোহীরা।

সূত্র: এএফপি।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।