নাটোর প্রতিনিধি : লায়লা আফরোজ তাঁর প্রাণোচ্ছল মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে নিয়ে ফিরলেন নিজ বাসায়; তবে ফ্রিজিং ভ্যানে, লাশ হয়ে। এমন ফিরে আসা কেউই মেনে নিতে পারছেন না। রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাসায় ঢুকে হত্যার শিকার মা-মেয়ের মরদেহ মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে নাটোরে নিজ বাসায় এসে পৌঁছেছে। আজ সকাল ৬টায় লাশবাহী ফ্রিজিং ভ্যানটি নাটোর পৌরসভার দক্ষিণ বড়গাছায় নিজ বাসভবনের সামনে পৌঁছালে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনেরা।
নিহত লায়লা আফরোজের ছোট ভাই উত্তরায় বসবাসরত ফরহাদ হোসেন জানান, বড় বোনের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল সবচেয়ে বেশি। দিনে বেশ কয়েকবার তাঁদের মধ্যে ফোনে কথা হতো। রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ভিডিও কল করে লায়লা জানান, তাঁর বাসার চাবি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। চাবি হারানোর ঘটনায় তাঁকে বেশ উদ্বিগ্ন মনে হচ্ছিল। নতুন কাজের মেয়ে বাসায় কাজ শুরুর পর চাবি হারানো স্বাভাবিকভাবে নেননি তিনি। দু-এক মিনিটের এই কথোপকথনই তাঁদের শেষ কথা ছিল।
ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘অনেকটা মানবিকতার খাতিরেই লায়লা গৃহপরিচারিকার কাজ দিয়েছিলেন আয়শাকে। আয়শা তখন জানিয়েছিল, রংপুরে তাদের বাড়িতে আগুন লেগে মা-বাবা মারা গেছে। তার গলা থেকে বুক পর্যন্ত ও হাতের কিছু অংশ আগুনে পোড়া। এ কারণে তাকে কেউ কাজে নিতে চাননি। আয়শার এ কথা লায়লাকে ভীষণভাবে নাড়া দেয়। তখন তাকে বাসায় কাজের জন্য রাখেন লায়লা।’
নাটোরে লায়লার প্রতিবেশী মামুন শিকদার বলেন, ‘লায়লাদের পুরো পরিবারকে আমরা ভালোভাবে চিনি। তাদের পরিবারের কেউ কাউকে কষ্ট দিয়ে কোনো দিন কথা বলেছে, এমনটি শুনিনি। অথচ এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড তাদের সঙ্গেই ঘটল, যা মেনে নেওয়া কঠিন।’
আজ জোহরের নামাজের পর জানাজা শেষে দক্ষিণ বড়গাছা কবরস্থানে দাফন করা হবে লায়লা ও তাঁর কন্যা নাফিসাকে।
