স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের প্রচারণা আজ সোমবার থেকে শুরু হয়েছে। প্রচারণা চলবে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা পর্যন্ত। নির্বাচনি প্রচারণায় অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের কঠোরভাবে মানতে হবে নির্বাচনি আচরণবিধি। আচরণবিধি ভঙ্গ করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে প্রার্থীদের।
নির্বাচনি আচরণবিধি অনুযায়ী, প্রার্থীতালিকা চূড়ান্ত হওয়ার দিন থেকে ভোটগ্রহণের ২৪ ঘণ্টা আগ পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত প্রচারণা চালানো যাবে। তবে প্রার্থী ও ভোটার ছাড়া অন্য কেউ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না।
প্রচারণায় সাদা-কালো পোস্টার ব্যবহার করা যাবে, যার আকার হবে সর্বোচ্চ ৬০ সেমি দৈর্ঘ্য এবং ৪৫ সেমি প্রস্থ। ভবনের দেয়ালে লেখালেখি বা পোস্টার লাগানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। প্রার্থী পরিচিতি সভা ছাড়া অন্য কোনও সভায় মাইক ব্যবহার করা যাবে না।
এ ছাড়া শুধু সংশ্লিষ্ট হলের রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে ছাত্রদের আবাসিক হলে ছাত্রী এবং ছাত্রীদের আবাসিক হলে ছাত্ররা পরিচিতি সভায় প্রবেশ করতে পারবেন। ক্যাম্পাসে কোনও সভা আয়োজনের জন্য প্রক্টরকে সভার স্থান ও সময় সম্পর্কে আগাম জানাতে হবে। নির্বাচনি কার্যক্রম চলাকালে সবাইকে পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে হবে এবং বহিরাগত কাউকে আবাসিক হলে থাকতে দেওয়া যাবে না।
আচরণবিধিতে আরও বলা হয়েছে, কোনও প্রার্থী বা তার পক্ষে কেউ প্রতিদ্বন্দ্বীকে ভয়ভীতি দেখাতে, বলপ্রয়োগ করতে বা ভোটদানে বাধা সৃষ্টি করতে পারবেন না। হল ও অ্যাকাডেমিক ভবনের অভ্যন্তরে মিছিল বা সমাবেশ নিষিদ্ধ। এ ছাড়া প্রচারণায় মিডিয়ার মাধ্যমে মানহানিকর, অশালীন বা উসকানিমূলক কথাবার্তা বলা যাবে না।
এসব নিয়ম লঙ্ঘন করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে তাৎক্ষণিকভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট করার চেষ্টা বা নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গ করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
এ বিষয়ে রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আজ থেকে রাকসুর নির্বাচনি প্রচারণা শুরু হয়েছে। প্রার্থীদের অবশ্যই আচরণবিধি মেনে প্রচারণা চালাতে হবে। কোনও প্রার্থী আচরণবিধি ভঙ্গ করলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। এ ছাড়া আচরণবিধিতে আরও কিছু বিষয় এখনও সংযোজন করা হয়নি, তা আজকের মধ্যেই চূড়ান্ত করা হবে।’
এদিকে, গতকাল রবিবার বিকালে লটারির মাধ্যমে ব্যালট নম্বর দেওয়ার পর থেকেই ক্যাম্পাসজুড়ে নির্বাচনি আমেজ বিরাজ করছে। প্রার্থীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যালট নম্বর-সংবলিত কার্ডসহ প্রচারণার কাজ শুরু করে দিয়েছেন। কার্ডে বিভিন্ন ধরনের নির্বাচনি ইশতেহারও দিচ্ছেন প্রার্থীরা। এর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন চত্বরে, আড্ডাস্থলে, হলে এবং আশপাশের মেসগুলোতে ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা।
উল্লেখ্য, রাকসু নির্বাচনে মোট ২৮ হাজার ৯০৫ জন ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে রাকসু, সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি ও হল সংসদ নির্বাচনে মোট ৯০৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে রাকসু, হল সংসদ ও সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি মিলিয়ে একজন ভোটারকে ৪৩টি ভোট প্রদান করতে হবে। ভোট প্রদানের পর গণনা শেষে ২৫ সেপ্টেম্বরই ফল প্রকাশ করা হবে।