স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী নগরীর চন্দ্রিমা থানার মেহেরচণ্ডি এলাকায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক ছাত্রী উত্যক্তের ঘটনা ঘটেছে। এর প্রতিবাদ করায় ওই ভুক্তভোগী ও তার বন্ধুকে শারিরীকভাবে হেনস্থা এবং মারপিট করা হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে মেহেরচণ্ডির জলিলের মোড়ের নজরুলের দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় রাতেই চন্দ্রিমা থানায় লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। ওই অভিযোগে তিনি দাবি করেন, নগরীর সন্ত্রাসী যুবকরা শারীরিক হেনস্থার পর তার সঙ্গে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনতাই করে নিয়ে যায়।
আরএমপির চন্দ্রিমা থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, রাতে অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও ঘটনার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করেন। রাতে রাবি প্রক্টরিয়াল বডি ও এলাকার লোকজন বসে ঘটনা মীমাংসা করে দেন। ভুক্তভোগী ছাত্রী নিজের অভিযোগ তুলে নেবেন বলে মেস মালিকের পক্ষ থেকে পুলিশকে জানানো হয়েছে।
লিখিত অভিযোগ বলা হয়, বৃহস্পতিবার বিকালে রাবির কারুশিল্প বিভাগের ২০২২-২৩ বর্ষের ছাত্রী ও তার বন্ধু জলিলের মোড় এলাকার নজরুলের দোকানে কেনাকাটা করছিলেন। এ সময় ওই এলাকার সামসুলের ছেলে সোহান (২০), মামুনের ছেলে শিথল (২২), রেজাউলের ছেলে রাজুসহ (২৩) আরও কয়েক যুবক ছাত্রীর পোশাক নিয়ে অশ্লীল কথা বলেন ও কটুক্তি করেন। ওই ছাত্রী সঙ্গে সঙ্গে এর প্রতিবাদ করেন।
এ সময় ছাত্রীর সঙ্গে থাকা বন্ধুও প্রতিবাদ করেন। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে যুবকরা ওই ছাত্রী ও তার বন্ধুকে টানা হেঁচড়া শুরু করেন। যুবকরা ছাত্রী ও তার বন্ধুকে শারিরীকভাবে হেনস্থা শুরু করলে এলাকার লোকজন এসে তাদেরকে নিবৃত করার চেষ্টা করেন।
অভিযোগে ওই ছাত্রী দাবি করেন, সন্ত্রাসী যুবকরা তার হাতঘড়ি ও একটি আংটি খুলে নেয় হাত থেকে। ব্যাগ ছিনতাইয়ের চেষ্টা করা হয়। পাশাপাশি অশ্লীল গালাগাল ও শরীরের পোশাক ধরে টানাটানি করে। যুবকেরা তার চশমা খুলে নিয়ে ভেঙে ফেলে এবং বন্ধুকে মারপিট করেন। ঘটনার খবর পেয়ে রাতে মেস মালিক ও এলাকার লোকজন বিষয়টি নিয়ে বসেন।
ভুক্তভোগী ছাত্রী জানান, বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মেহেরচন্ডি এলাকার বিভিন্ন মেসে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকশ ছাত্র-ছাত্রী থাকেন। এলাকার কিশোর গ্যাংয়ের সন্ত্রাসীরা ছাত্রীদের প্রায়শ উত্যক্ত করে। মেস থেকে জিনিসপত্র চুরি-ছিনতাই করে নিয়ে যায়। ছাত্র-ছাত্রীরা সার্বক্ষণিক নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে বসবাস করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাবির প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটা বেশ খারাপ। আমরা শক্ত আইনি পদক্ষেপের পক্ষেই ছিলাম। পরে আমাকে বলা হয়েছে ঘটনাটি স্থানীয়রা মীমাংসা করবেন। মীমাংসার সময়ে প্রক্টরিয়াল বডির কেউ উপস্থিত ছিলেন না। সহকারি প্রক্টর অধ্যাপক আব্দুস ছালামকে বিষয়টি দেখার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
অধ্যাপক আব্দুস ছালাম বলেন, ‘আমিও মীমাংসার সময় ছিলাম না। তবে, শুনেছি ছাত্রীটি যে মেসে থাকেন সেই মেসের মালিক ও এলাকার গণ্যমান্য লোকজন বসে বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছেন। কি শর্তে মীমাংসা হয়েছে সেটা বিস্তারিত জানি না। ঘটনার শিকার ছাত্রীটিও আমাদেরকে এখনো কিছু জানায়নি।