নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঢাকা বুধবার। রাত ৯:৫৭। ১৬ জুলাই, ২০২৫।

রাজশাহীতে জুলাই শহীদ দিবসে স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল

জুলাই ১৬, ২০২৫ ৪:৫৪
Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার : জুলাই শহীদ দিবস উপলক্ষে রাজশাহী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৬ জুলাই) সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই মাসের গণহত্যায় নিহত শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার এর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার মো. খন্দকার আজিম আহমেদ। তিনি শহীদ পরিবার এবং আহতদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও সমবেদনা জানান।

বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান, রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত জিআইজি মো. সারোয়ার জাহান এবং পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম।

আরও পড়ুনঃ  ভিক্ষুকদের নিয়ে মন্তব্য করে মন্ত্রিত্ব হারালেন কিউবার শ্রমমন্ত্রী

সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে শহীদ পরিবারের সদস্যরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তারা বলেন, আজও তাদের প্রিয়জনদের হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়ায় তারা কষ্ট নিয়ে বেঁচে আছেন। কেউ কেউ শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের দাবিও জানান।

আহত আন্দোলনকারী অপূর্ব বলেন, “গুলিটা আমার গায়ে লেগেছে—এটা হয়তো আমারই ভাগ্যে ছিল। আমার গায়ে না লাগলে, হয়তো কোনো ভাইয়ের গায়ে লাগতো।”

শহীদ মিনারুল ইসলামের স্ত্রী নূরেজান খাতুন বলেন, “আমার মন বলে, আমার স্বামী এখনো বেঁচে আছেন। তিনি শহীদের মর্যাদা পেয়েছেন। আমার সন্তান এখন ছোট, বড় হলে তাকে বাবার শহীদ হওয়ার গল্প শোনাবো।”

শহীদ আলী রায়হানের পিতা মসলে উদ্দিন আহমেদ বলেন, “বিকেলে খবর পাই, ছেলের মাথায় গুলি লেগেছে। অপারেশনের পর মারা যায়। যারা এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

আরও পড়ুনঃ  নিয়ামতপুরে দলিল লেখক সমিতি নিয়ে অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

শহীদ শাকিব আনজুমের পিতা মাইনুল হক বলেন, “জুলাই আন্দোলনে আমার তিন ছেলে মিছিলে গিয়েছিল। ছোট ছেলে সাহসী ছিল, সামনে থাকতো। দেড়টার দিকে গুলিবিদ্ধ হয়। মনে হয়েছিল, আমিও গুলি খেয়েছি। এই স্বাধীন দেশে যেন আর কোনো অন্যায় হত্যাকাণ্ড না ঘটে।”

মাহবুব সিদ্দিকী বলেন, “শহীদ পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা আমার জানা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে সেই আন্দোলন বেগবান হয়েছিল। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ঘটনা বিরল।”

পুলিশ কমিশনার আবু সুফিয়ান বলেন, “জুলাই আন্দোলনের শহীদরা দেশের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ে জীবন উৎসর্গ করেছেন। আমরা তাদের গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করি। তাদের পরিবারের শোক আমরা উপলব্ধি করি। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ সবসময় তাদের পাশে থাকবে।”

আরও পড়ুনঃ  ‘অগ্নি নির্বাপন বিষয়ে জ্ঞান এখন সময়ের দাবি’- উপাচার্য রুয়েট

জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার বলেন, “জুলাই আন্দোলনের শহীদদের আত্মত্যাগ আমাদের ইতিহাসের গৌরবময় অধ্যায়। আমরা নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমিক হিসেবে গড়ে তুলতে চাই, শহীদদের স্মরণ রেখেই।”

আলোচনা শেষে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। বক্তারা বলেন, ‘জুলাই আন্দোলন’ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের ইতিহাসে এক গৌরবময় মাইলফলক হয়ে থাকবে।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।