স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী নগরীর আহম্মেদপুর এলাকায় নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ এবং মানবাধিকার সংরক্ষণে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) স্থানীয় উন্নয়ন সংগঠন এ্যাসোসিয়েশন ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট (এসিডি) এর উদ্যোগে ১২ জন নারী সদস্য নিয়ে গঠিত হয় “মানবাধিকার নারী পরিষদ দল”। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা প্রতিরোধ, সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি, এবং স্থানীয় পর্যায়ে সহায়তার একটি কার্যকর নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা।
এ দল গঠনের সময় উপস্থিত সদস্যরা প্রথমেই নিজেদের এলাকায় বিদ্যমান সমস্যা চিহ্নিত করেন। তারা বলেন, অনেক সময় নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুরা ভয়ে মুখ খোলেন না, আইনগত সহায়তা নিতে পারেন না কিংবা সমাজের চাপের মুখে চুপ থাকতে বাধ্য হন। এসব সমস্যা চিহ্নিত করে দলটি একটি সুপরিকল্পিত কর্মপন্থা তৈরি করে।
দলটির সদস্যরা প্রত্যেকে নিজ নিজ এলাকার সক্রিয় ও সচেতন নারী। তারা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মানবাধিকার বিষয়ক জ্ঞান অর্জন করেছেন এবং প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছেন সমাজের সুবিধাবঞ্চিত নারী ও শিশুদের পাশে দাঁড়ানোর। গঠনের দিন তারা দলগতভাবে শপথ গ্রহণ করেন—‘নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আমরা একতাবদ্ধ, নীরবতা নয়, প্রতিরোধই আমাদের অঙ্গীকার’।
এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (এএসকে) এবং অর্থায়ন করছে সিভিক এনগেজমেন্ট ফান্ড, যা পরিচালিত হচ্ছে জি এফ এ কনসাল্টিং গ্রুপের মাধ্যমে।
এসিডি-র সমন্বয়ক জানান, “এই ধরনের উদ্যোগ শুধু নারী নির্যাতন প্রতিরোধ নয়, বরং নারীর ক্ষমতায়ন, নেতৃত্ব বিকাশ এবং সমাজে মানবাধিকার চর্চা বৃদ্ধির এক কার্যকর পদক্ষেপ। আমরা চাই প্রতিটি গ্রামে এমন দল গঠিত হোক।”
স্থানীয় এক নারী প্রতিনিধি বলেন, “আমরা এতদিন যে সমস্যাগুলো নিয়ে একা ভাবতাম, আজ একত্র হয়ে সেই সমস্যার সমাধানের রূপরেখা তৈরি করেছি। এটা শুধু একটি দলের গঠন নয়, এটি একটি আন্দোলনের সূচনা।”
স্থানীয় জনগণ এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এবং আশা প্রকাশ করেছেন, এই দলটির কার্যক্রমের ফলে এলাকায় নারী ও শিশু নির্যাতন কমবে এবং ক্ষতিগ্রস্তরা সাহস পাবে এগিয়ে আসতে।
উল্লেখ্য, নারী নির্যাতন বাংলাদেশের অন্যতম সামাজিক সমস্যা। এই সমস্যার সমাধানে স্থানীয় পর্যায়ে এমন স্বেচ্ছাসেবী উদ্যোগ সময়ের দাবি। আহম্মেদপুরের এই দল গঠন সেই পথেই এক দৃঢ় পদক্ষেপ।