নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঢাকা রবিবার। রাত ১২:০০। ৬ জুলাই, ২০২৫।

রাজশাহীতে মব সৃষ্টি করে লুটপাটের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

জুলাই ৫, ২০২৫ ৭:৩৮
Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী নগরীর ভদ্রা পারিজাত আবাসিক এলাকায় মব সৃষ্টি করে ফ্ল্যাটে ঢুকে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার লুট এবং নির্যাতনের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক ভুক্তভোগী নারী। শনিবার সকালে নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন ভুক্তভোগী হাবিবা আক্তার মুক্তা। তিনি জানান, তিনি ভদ্রা পারিজাত এলাকার ২ নম্বর রোডের ১৫ নম্বর বাড়ির ৫ তলার ৬ নম্বর ফ্ল্যাটে বসবাস করেন। গত ৩ জুলাই দুপুর আনুমানিক ২টার দিকে তার জামাইয়ের ছোট ভাই মাহমুদ হাসান শিশির একদল সন্ত্রাসী নিয়ে তাদের বাসার সামনে মব সৃষ্টি করে। এরপর তার ফ্ল্যাটে ঢুকে নগদ ২ লাখ টাকার বেশি এবং ১২ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে যায়। একইসঙ্গে তাকে নির্যাতনও করা হয়। হাবিবার ভাষ্য, ‘এটি সরাসরি ডাকাতির শামিল।’

তিনি জানান, ঘটনার সময় তিনি একাই বাসায় ছিলেন। ঘটনার প্রায় দুই ঘণ্টা পর বিকেল ৪টার দিকে শিশির আবারও পুলিশ ও স্থানীয় কিছু লোক নিয়ে এসে ‘তল্লাশির নামে নাটক’ করেন। এই সময়ের সম্পূর্ণ সিসি ক্যামেরা ফুটেজ তাদের কাছে এবং পুলিশের কাছেও রয়েছে বলে জানান হাবিবা।

আরও পড়ুনঃ  নিউইয়র্কের মেয়র পদে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী মামদানি

ঘটনার নেপথ্যে পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের কথা তুলে ধরে হাবিবা বলেন, ‘সিসিল দীর্ঘদিন ধরে আমার জামাই মেহেদী হাসান সিজারকে পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্র করে আসছে। আমার জামাইয়ের বাবা মাহবুব কন্টাকটর ছিলেন একজন সুপরিচিত ঠিকাদার। তার মৃত্যুর পর তার সম্পত্তি এককভাবে দখলের জন্য আমার জামাতা সিজারকে নানাভাবে হয়রানি করছে শিশির।’

তিনি আরও বলেন, গত ২৯ জুন সিজারের নিজ বাড়িতে হামলারও ঘটনা ঘটায় শিশির ও তার অনুসারীরা। সেই ঘটনার সিসি ক্যামেরা ফুটেজও তাদের কাছে রয়েছে।

‘আমার স্বামী, আমি ও জামাইকে জিম্মি করে নিয়ন্ত্রণে আনতেই শিশিল এই ষড়যন্ত্র করেছে’, বলেন হাবিবা। তিনি এই হামলার পেছনে রাজনৈতিক কোনো উদ্দেশ্য নেই বলেও দাবি করেন। তবে অভিযুক্ত শিশিল আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি।

আরও পড়ুনঃ  সুস্থ ধারার সাংবাদিকতা চর্চার আহবান রাজশাহী এডিটরস ফোরামের

ঘটনার পরপরই হাবিবা আক্তার মুক্তা চন্দ্রিমা থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। পাশাপাশি ঘটনার সব তথ্যপ্রমাণ পুলিশকে দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

অভিযুক্ত মাহমুদ হাসান শিশিল বলেন, “অভিযান চলাকালে সেখানে নেতাকর্মী, পুলিশ, এমনকি সাংবাদিকরাও উপস্থিত ছিলেন। আমি কাউকে বাড়িতে ঢুকতে দিইনি। বরং আমার বড় ভাইয়ের শাশুড়ি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।”

তিনি দাবি করেন, তাঁর ভাই ক্ষমতাসীন আমলে ছাত্রলীগ ও যুবলীগকে অর্থ সহায়তা দিয়েছেন এবং বর্তমানে সম্পদের কারণে তাঁকে (শিশিলকে) হেনস্তা করা হচ্ছে। তিনি আরও দাবি করেন, “তার ভাই একসময় ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন এবং যুবলীগের সাধারন সম্পাদক রনির সাথে তার সম্পর্ক আছে। তার শশুরের পরিবার আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত।”

চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিয়ার রহমান বলেন, “বাড়ি ঘেরাও ও ভেতরে ঢুকে লুটপাটের অভিযোগে মামলা নেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তিনি জানান, ‘‘শুক্রবার (৫ জুলাই) দুপুরে নগরের চন্দ্রিমা থানায় মামলাটি করেন ভুক্তভোগী নারী হাবিবা আক্তার। তিনি মামলায় তাঁর জামাতার ভাই এবং রাজশাহী মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মাহমুদ হাসান শিশিলসহ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৮-১০ জনকেও আসামি করা হয়েছে।’’

আরও পড়ুনঃ  আইজিপির সঙ্গে ইউনেস্কো প্রতিনিধির সাক্ষাৎ

গত বুধবার দুপুরে নগরীর পদ্মা পারিজাত এলাকার একটি আটতলা ভবন ঘেরাও করেন স্থানীয় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের একদল নেতাকর্মী। তাঁদের দাবি ছিল, এই ভবনে অবস্থান করছেন নগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌরিদ আল মাসুদ রনি। তবে অনেক আগে থেকেই তিনি বিদেশে অবস্থান করছেন বলে এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল সরকারকে ফোন করে রনি বলেন, “আমি অনেক দূরে, এত কষ্ট করে লাভ নেই। সময় হলে নিজেই ফিরে আসব।”

 

 

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।