স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীতে শিক্ষার্থীদের খাদ্যাভ্যাসের সুরক্ষা নিশ্চিত এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নিরাপদ খাদ্যের বার্তা পৌঁছে দিতে জনসচেতনতামূলক কর্মসূচির আয়োজন করেছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। রোববার (১২ অক্টোবর) দুপুরে হাজী মুহম্মদ মুহসীন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হাজী মুহম্মদ মুহসীন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আঞ্জুমান আরা বেগম।
কর্মসূচিতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা ইয়ামিন হোসেন। তিনি শিক্ষার্থীদেরকে নিরাপদ খাদ্যের গুরুত্ব, অনিরাপদ খাদ্যের ক্ষতি, খাবার সংরক্ষণ, রান্নার সঠিক তাপমাত্রা, হাত ধোয়ার সঠিক পদ্ধতি এবং নিরাপদ পানি ব্যবহারের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানান। তিনি শিক্ষার্থীদের নির্দেশ দেন, বিদ্যালয় ও আশেপাশের খাদ্যস্থাপনায় নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে।
জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা ইয়ামিন হোসেন বলেন,“নিরাপদ খাদ্য শুধু স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয় নয়, এটি জাতির ভবিষ্যতের সুরক্ষার সঙ্গে সম্পর্কিত। শিক্ষার্থীরা যদি ছোটবেলা থেকেই নিরাপদ খাদ্যের গুরুত্ব বোঝে, তারা নিজেদের পরিবার ও সমাজকে সচেতন করতে পারবে। অনিরাপদ খাদ্য ব্যবহারের কারণে শিশুদের মধ্যে নানা রোগব্যাধি ও স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য সোনার দেশ পত্রিকার সম্পাদক আকবারুল হাসান মিল্লাত বলেন,“বর্তমানে বাজারে বিক্রি হওয়া অনেক খাবারে রাসায়নিক পদার্থের অপব্যবহার হচ্ছে, যা মানুষের দেহে ধীরে ধীরে ক্ষতি করছে। শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টি করা একান্ত জরুরি। তারা ভবিষ্যতে পরিবার এবং সমাজকে নিরাপদ খাদ্যের বিষয়ে সচেতন করতে পারবে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে হাজী মুহম্মদ মুহসীন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন,“শিক্ষার্থীদের সুস্থ ও শক্তিশালী প্রজন্ম হিসেবে গড়ে তুলতে নিরাপদ খাদ্যের বিকল্প নেই। কীটনাশকের অপব্যবহার, খোলা খাবারের ঝুঁকি ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার প্রস্তুত করার ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সচেতন করা আমাদের দায়িত্ব।” তিনি আরও শিক্ষকদের আহ্বান জানান, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা তৈরি করতে এবং দেশীয় ফলের পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভ্যাস শেখানোর ওপর গুরুত্ব দিতে।
উক্ত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ শিক্ষকদের হাতে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক পারিবারিক নির্দেশিকা, গণবিজ্ঞপ্তি, পোস্টার, বুকলেট ও লিফলেট বিতরণ করে। এতে শিক্ষকদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরাও নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য ও জ্ঞান অর্জন করেন। কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে সচেতনতা লাভের পাশাপাশি সমাজে অন্যদের সচেতন করার দায়িত্বও বুঝতে শিখেছেন। আয়োজকরা আশা প্রকাশ করেছেন, এই ধরনের সচেতনতা কার্যক্রম শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্থায়ী অভ্যাস হিসেবে গড়ে উঠবে এবং ভবিষ্যতের প্রজন্মের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।