স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর পরিবেশ রক্ষার দাবি জানিয়ে দুই উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) জেলা শাখা। রোববার সকালে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বরাবর এই স্মারকলিপি দেওয়া হয়। স্মারকলিপি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে কুলসুম সম্পা।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, সবুজ ও পরিচ্ছন্ন শহর হিসেবে খ্যাত রাজশাহী এখন পরিবেশ দূষণ, অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও জলাশয় ভরাটের কারণে চরম ঝুঁকির মুখে পড়েছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অব্যবস্থাপনা, রাস্তার অতিরিক্ত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল, রাসায়নিক সার ও প্লাস্টিক ব্যবহারের কারণে মহানগরীতে বায়ুদূষণ বাড়ছে। একই সঙ্গে শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় মশা-মাছির উপদ্রব এবং শ্বাসকষ্টজনিত রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এতে আরও বলা হয়, ১৯৯৬ সালে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তির মেয়াদ ২০২৬ সালে শেষ হবে। নবায়ন না হলে রাজশাহীর জলবায়ু ও পরিবেশ মারাত্মক হুমকিতে পড়বে। এছাড়া বরেন্দ্র অঞ্চলে অতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের ফলে পানির স্তর দ্রুত নিচে নেমে যাচ্ছে, যা কৃষি ও গৃহস্থালি কাজে তীব্র সংকট তৈরি করছে এবং মরুকরণের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
এছাড়া পুকুর ও জলাশয়ের অব্যবস্থাপনাও পরিবেশের জন্য হুমকি হয়ে উঠছে। সেপটিক ট্যাংক ও সোকওয়েলের সংযোগ, কৃত্রিম মাছ চাষের খাদ্য প্রয়োগ এবং নোংরা পানির কারণে এসব জলাশয় এখন মশা ও ক্ষতিকর জীবাণুর প্রজননকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। স্মারকলিপিতে উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন, আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, জলাশয় সংরক্ষণ, সঠিক পানি ব্যবস্থাপনা ও সমন্বিত পরিবেশবান্ধব নগর পরিকল্পনা গ্রহণেরও দাবি জানানো হয়।
স্মারকলিপি দেওয়ার সময় বাপার জেলার রাজশাহী সভাপতি জামাত খান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আফজাল হোসেন, রাজশাহী ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সার্ভে ইনস্টিটিউটের সাবেক অধ্যক্ষ মাহমুদ হাসান, সাবেক ছাত্রনেতা সম্রাট রায়হান, বাপার জেলা শাখার সহসভাপতি সেলিনা বেগম, ওয়েবের সভপতি আনজুমারা খাতুন লিপি, সংবাদিক হেলেন খান, সাবেক ছাত্রনেতা জাহিদ হাসান, রাজশাহী ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম নবী রনি, প্রকৌশলী আনিসুর রহমান, নারীনেত্রী রাশেদা বেগম, ব্যবসায়ী বাবলু রহমান প্রমুখ।