নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বাংলাদেশ শুক্রবার। সকাল ১০:০০। ১৭ অক্টোবর, ২০২৫।

রাবিতে তৃতীয় দিনের মতো চলছে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’

সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৫ ১২:৩৭
Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় দিনের মতো চলছে ‘পূর্ণাঙ্গ শাটডাউন’ কর্মসূচি। আজ মঙ্গলবার সকাল নয়টা থেকে এ কর্মসূচি শুরু হয়। এর অংশ হিসেবে প্রশাসন, একাডেমিক ভবনসহ বিভিন্ন দপ্তরে তালা খোলা হয়নি। শিক্ষার্থীদের আনাগোনা নেই বললেই চলে। পোষ্য কোটা ইস্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য, প্রক্টরসহ অন্যান্য শিক্ষক-কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে এ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

আজ সকাল নয়টার পর থেকেই প্রশাসন ভবনের পশ্চিম পাশে লিচুতলায় চেয়ার পেতে বসতে শুরু করেন কর্মবিরতিতে যাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাঁরা জানান, জরুরি সেবা বিদ্যুৎ, পানি ইত্যাদি ছাড়া ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব দাপ্তরিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

আজ সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সব দপ্তরেই তালা ঝুলছে। ব্যস্ততম পরিবহন মার্কেট এলাকার অধিকাংশ দোকান বন্ধ আছে। ক্যাম্পাসের ভ্রাম্যমাণ খাবার ও চায়ের দোকানও বসেছে অনেক কম। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ একাডেমিক ভবনসহ অনেক ভবনের ফটকের তালা খোলা হয়নি।

আরও পড়ুনঃ  তামান্না ৭০ বছরের বাচ্চাদের ঘুম পাড়ান: বলে বিতর্কে অভিনেতা

জামাল নজরুল বিজ্ঞান ভবনের পাশে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে কথা হয় ময়না খাতুনের সঙ্গে। তিনি সেখানকার একটি দোকানের মালিক। কমপ্লিট শাটডাউন থাকায় গত দুই দিন ধরে তিনি দোকান বন্ধ রেখেছেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কী করে খুলব রে বাবা, লোকজন না আসলে, বেচাকেনা না হলে, খুলে কী করব। ক্লাস নাই। এ জন্য শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আসে না। বেচাকেনা না থাকায় দোকান বন্ধ রেখেছি।’

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পাঠকক্ষ খোলার দাবিতে প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন একদল শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশী। সকাল আটটায় পাঠকক্ষ খোলার কথা থাকলেও তাঁদের দাবির মুখে সাড়ে ৯টায় কক্ষ খুলে দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা জানান, আগামী ১০ অক্টোবর বিশেষ বিসিএস পরীক্ষাসহ সামনে বেশ কিছু চাকরির পরীক্ষা আছে। শাটডাউন থাকলেও তাঁদের দাবি, দুটো পাঠকক্ষ যেন খোলা রাখা হয়। এই দাবিতে প্রশাসন ভবনের ফটকে অবস্থান নিয়ে প্রতীকী বই পড়েছেন তাঁরা।

আরও পড়ুনঃ  বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে “শার্শা উপজেলা সাংবাদিক ঐক্য পরিষদ যশোর” এর পক্ষ থেকে গাছের চারা বিতরণ

এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত রাকসু নির্বাচন নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল ক্যাম্পাসে। প্রার্থীরা নানাভাবে প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলেন। এর মধ্যে সেদিন সন্ধ্যায় বাতিল হয়ে যাওয়া পোষ্য কোটা ১০ শর্তে ফিরিয়ে আনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর পর থেকে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের একপর্যায়ে গত শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। পরে রোববার শিক্ষক-কর্মকর্তারা লাঞ্ছনাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও পোষ্য কোটা পুনর্বহালের দাবিতে এক দিনের পূর্ণদিবস কর্মবিরতি ঘোষণা করেন। পরদিন সোমবার থেকে তাঁরা অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণাঙ্গ শাটডাউন কর্মবিরতি পালন করছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ক্যাম্পাসের বিরাজমান পরিস্থিতিতে গতকাল বিকেল কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ে জরুরি সভায় বসে নির্বাচন কমিশন। সিদ্ধান্ত আসতে দেরি হওয়ায় ২৫ সেপ্টেম্বরই নির্বাচনের দাবিতে ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা ৬টা ৩৫ মিনিটের দিকে কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। অন্যদিকে ‘ভোটারবিহীন রাকসু চাই না’ দাবি করে বাম সংগঠন মনোনীত প্যানেলসহ স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পাল্টা স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এদিকে ৭টা ৫ মিনিটের দিকে রাকসুর কোষাধ্যক্ষ কার্যালয়ের সামনে বাম সংগঠন মনোনীত প্যানেলসহ স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে যোগ দেয় ছাত্রদল। এ সময় উভয় পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেয়।

আরও পড়ুনঃ  স্বর্ণের দামে ফের রেকর্ড, প্রতি ভরি ২ লাখ ১৬ হাজার ৩৩২ টাকা

সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে নির্বাচন পেছানোর কথা জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিরাজমান পরিস্থিতি বিবেচনায় রাকসু নির্বাচন উৎসবমুখর, অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার স্বার্থে কমিশন ২৫ সেপ্টেম্বরের পরিবর্তে আগামী ১৬ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।