স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের কর্মসূচিতে ‘শাহাবাগবিরোধী ঐক্য’ নামে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরাই হামলা করেছেন বলে অভিযোগ জোটের নেতাকর্মীদের। অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছে ‘শাহাবাগবিরোধী ঐক্য’-এর নেতাকর্মীরা।
বুধবার বেলা সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবহন মার্কেটে সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র গণমঞ্চের আহবায়ক নাসিম সরকার লিখিত বক্তব্যে বলেন, জামায়াত নেতা এটিএম আজহারকে যুদ্ধাপরাধের মামলা থেকে খালাস দেওয়ার প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাতে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট মশাল মিছিল ডাকে। আর শিবিরের একটি আনন্দ মিছিল পরিবহন মার্কেটে বামপন্থীদের আড্ডার স্থলকে ঘিরে বারবার প্রদক্ষিণ করতে থাকে। পরে সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রশিবিরের প্রচার সম্পাদক ও ছাত্র আহবায়কসহ অনেকে আনুমানিক ২০০ জনের একটি মব আমাদের দিকে তেড়ে আসে এবং অতর্কিত ইট পাটকেল, চেয়ার ও লাঠি ছুঁড়ে মারতে শুরু করে। এতে আমাদের কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়।’
তিনি বলেন, ‘২৪ পরবর্তী ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ কায়দায় এই ভয়াবাহ সন্ত্রাসী আক্রমণের বিচার চাইতে গেলে প্রক্টরিয়াল বডি এটাকে পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলা ও মারামারি হিসেবে চালিয়ে দেয়। আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলের প্রশাসনকে দেখতাম ছাত্রলীগের সন্ত্রাসকে প্রত্যক্ষভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করতে। আজ অভ্যুত্থান পরবর্তী রাবি প্রশাসনকেও আমরা দেখতে পেলাম ছাত্রশিবিরের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকে সমর্থন যোগাতে। যেন এটাও ফ্যাসিবাদী আমলের সেই দলীয় প্রশাসন, কেবল দলটা ভিন্ন।’
একইদিন বেলা ১১টায় ‘শাহাবাগবিরোধী ঐক্য’ পরিবহন মার্কেটে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তথাকথিত গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের ব্যানারে বাম-শাহবাগী গোষ্ঠী সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মশাল মিছিল ডাকে। আমরা আমাদের পূর্বঘোষিত শাহাবাগবিরোধী কর্মসূচিতে পরিবহন চত্বরে আসার পর সবার উদ্দেশ্যে বক্তব্য দিচ্ছিলেন ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্য’র বিভিন্ন সংগঠক ও নেতৃবৃন্দ। ঠিক তখনই পেছন থেকে বাম সংগঠনের গুটিকয়েক মশালধারী আমাদের শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকার, জামায়াত-শিবির’ বলে বুলিং করে। তারা স্লোগান দিয়ে বারবার মশাল নিয়ে আমাদের দিকে তেড়ে আসে। ইচ্ছে করেই একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করে ভিকটিম কার্ড খেলার পুরোনো চেষ্টা চালায়।’
শিবিরের সংশ্লিষ্টতার প্রশ্নে ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্য’র আহবায়ক রাকিবুল ইসলাম বলেন, বিগত সময়ে ছাত্রশিবির ও ছাত্রদলসহ অধিকাংশ ছাত্রসংগঠনগুলো শাহাবাগীদের রোষানলে ছিল। আমরা শাহাবাগ বিরোধী কর্মসূচি ঘোষণা করলে সেখানে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা সংহতি জানায়। তার হামলার ঘটনায় জড়িত নয়। বরং ছাত্রজোট আমাদের ওপর হামলা চালায়।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে ঘটনার পরই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর দুই গ্রুপ লিখিত অভিযোগ দেয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, ‘আমরা দুই পক্ষের অভিযোগ পেয়েছি। আমি ক্যাম্পাসের বাইরে থাকায় বিষয়টি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাইনি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রক্টরিয়াল বডি কাজ করছে। ক্যাম্পাসে এখন পর্যন্ত যেহেতু ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হয়নি, সেহেতু সবাই সবার মতো কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে। কেউ কাউকে কোন বাধা দেবে না। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ এবং ভিডিগুলো দেখে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।’