নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঢাকা বুধবার। দুপুর ২:৪৪। ১৪ মে, ২০২৫।

রেমিট্যান্স বাড়ায় রিজার্ভে স্বস্তি

জুলাই ৯, ২০২২ ১০:০৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আসন্ন কুরবানির ঈদে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের কারণে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে সাময়িক স্বস্তি ফিরে এসেছে। অপ্রয়োজনীয় আমদানি নিরুৎসাহিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বহুমুখী পদক্ষেপের ফলে আমদানিতেও কিছুটা লাগাম পড়েছে।

এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দেনা বাবদ ১৯৬ কোটি ডলার পরিশোধের পরও রিজার্ভ ৪ হাজার কোটি ডলারের উপরে রয়েছে। অনেকেই আশঙ্কা করেছিলেন একসঙ্গে বড় অঙ্কের ওই দেনা পরিশোধের পর রিজার্ভ ৪ হাজার কোটি ডলারের নিচে নেমে আসবে।

সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক মে ও জুনের আকুর দেনা বাবদ ১৯৬ কোটি ডলার পরিশোধ করেছে। ওই দেনা পরিশোধের আগে রিজার্ভ ছিল ৪ হাজার ১৮৮ কোটি ডলার। ফলে আকুর দেনা পরিশোধের পর রিজার্ভ ৪ হাজার কোটি ডলারের নিচে নামার কথা। কিন্তু জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে অর্থাৎ ১ থেকে ৬ জুলাইয়ের মধ্যে প্রবাসীদের কাছ থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ৭৪ কোটি ১০ লাখ ডলার।

ফলে রিজার্ভ বেড়ে ৪ হাজার ২৬২ কোটি ডলারে উঠে। আকুর দেনা পরিশোধের পরও রিজার্ভ ৪ হাজার ৬৬ কোটি ডলার রয়েছে। এর মধ্যে আমদানির দেনা পরিশোধের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিছু ডলার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে বিক্রি করেছে। গত অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমদানির দেনা পরিশোধে মোট ৭৬২ কোটি ডলার বিক্রি করেছে।

আরও পড়ুনঃ  রাজশাহীতে আগেই আম পাড়ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা

সূত্র জানায়, রেমিট্যান্স আসার ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশে কিছু সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। বিদেশের মানি চেঞ্জারগুলো প্রবাসীদের কাছ থেকে রেমিট্যান্স নিয়ে সময়মতো তা ব্যাংকে জমা দিচ্ছেন না। ফলে রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়ে স্বস্তি বোধ করছেন না। এতে তারা হুন্ডিতে রেমিট্যান্স পাঠানোয় উৎসাহিত হচ্ছেন। এ সমস্যা সমাধানে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এর আলোকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি দূতাবাসগুলোর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।

সূত্র জানায়, আমদানি ব্যয় নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। ফলে বিলাসী পণ্যের আমদানিতে লাগাম পড়েছে। কিন্তু সার্বিকভাবে আমদানি ব্যয় কমছে না। বরং বেড়েই চলেছে। তবে আমদানি ব্যয়ের প্রবৃদ্ধি কমেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরের মে মাসে আমদানি ব্যয় বেড়েছিল ৭৪ শতাংশ। মে মাসে তা কমে ১৯ শতাংশে নেমে এসেছে। জুলাই-এপ্রিলে আমদানি বেড়েছিল ৪৪ শতাংশ। মে মাসে তা ৩৯ শতাংশে নেমে এসেছে।

আরও পড়ুনঃ  তানোরে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৫ উদযাপন

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিলাসী পণ্য আমদানিতে শতভাগ মার্জিন আরোপ ও ঋণ বন্ধ করায় আগামী মাসে আমদানি আরও কমে যেতে পারে। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল, গ্যাস, সারসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম হু হু করে বাড়ছে। এতে করে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। একই সঙ্গে দেশের রিজার্ভ চাপে পড়তে পারে। কেননা আগামী মাস থেকে রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধির হার কমে যেতে পারে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ আরও কমবে।

এদিকে রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক শিল্পের যন্ত্রপাতি আমদানির দেনা পরিশোধের মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়িয়েছে। অন্যান্য আমদানির দেনার মেয়াদও বাড়ানো হয়েছে। ফলে এসব দেনা পরিশোধের সময় এলে রিজার্ভে আরও চাপ বাড়বে। ওই চাপ মোকাবিলা করতেই এখন আমদানি ব্যয় নিয়ন্ত্রণ ও বৈদেশিক মুদ্রা আয় বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এজন্য আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ঋণ নিচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ  বাগমারায় জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

আকুর সদস্য ৯টি দেশ বাকিতে পণ্য আমদানি-রপ্তানি করে। প্রতি দুই মাস পরপর দায়দেনা সমন্বয় করে। আকুর সদস্য দেশগুলো হচ্ছে-বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার, ভুটান, ইরান, নেপাল, শ্রীলংকা ও মালদ্বীপ। এর মধ্যে বাংলাদেশ আকুর সদস্য দেশগুলো থেকে প্রতি মাসেই রপ্তানির চেয়ে আমদানি বেশি করে। ফলে বাংলাদেশকে প্রতি দুই মাস পরপর দেনা শোধ করতে হয়।

বৃহস্পতিবার মে ও জুনের দেনা বাবদ ১৯৬ কোটি ডলার পরিশোধ করেছে। এর আগে মার্চ ও এপ্রিলের দেনা বাবদ ২২৪ কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়। মার্চ-এপ্রিলের তুলনায় মে-জুনে আমদানি কমায় দেনা বাবদ ৩০ কোটি ডলার কম পরিশোধ করতে হয়েছে।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।