অনলাইন ডেস্ক : লন্ডনে অবস্থিত তুরস্কের কনস্যুলেটের সামনে কোরআন পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক জনশৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধে তুর্কি বংশোদ্ভূত এক ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন আদালত। সোমবার লন্ডনের একটি আদালত ওই ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় ঘোষণা করে।
লন্ডন থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
৫০ বছর বয়সী হামিত কোসকুন নামের ওই ব্যক্তি গত ফেব্রুয়ারিতে লন্ডনের কেন্দ্রস্থলে তুরস্কের কনস্যুলেটের সামনে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে ইসলাম ধর্ম নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেন। ওই সময় কোরআনে আগুন ধরিয়ে বিভিন্ন ধরনের আপত্তিকর মন্তব্য করেন তিনি।
লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জেলা জজ জন ম্যাকগারভা কোসকুনকে ‘কোন ব্যক্তির শ্রবণশক্তি বা দৃষ্টিশক্তির জন্য হয়রানি, শঙ্কা বা কষ্টের কারণ হতে পারে’ এমন উচ্ছৃঙ্খল আচরণ ও ব্যবহারের জন্য দোষী সাব্যস্ত করেছেন। একই সাথে আদালত ২৪০ পাউন্ড বা প্রায় ৩২৫ মার্কিন ডলার জরিমানা করেছেন।
‘বিচারক বলেন, ‘কোরআন পোড়ানোর ক্ষেত্রে আপনার কাজগুলো অত্যন্ত উস্কানিমূলক ছিল এবং কিছু ক্ষেত্রে ধর্মের প্রতি নির্দেশিত অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করায় ঘটনাটি জনশৃঙ্খলা ভঙ্গের পর্যায়ে পড়ে এবং অন্তত আংশিকভাবে ধর্মের অনুসারীদের প্রতি ঘৃণা দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল।’
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বলেছেন কোরআন পোড়ানোর জন্য কোসকুনের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে না।
ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিসের ফিলিপ ম্যাকগি বলেন, ‘জনসমক্ষে তার উচ্ছৃঙ্খল আচরণের জন্য তার বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে’।
আদালতের শুনানিতে বলা হয়েছে, এক পথচারী ঘটনাটি ভিডিও করেছেন, যেখানে একজন ব্যক্তিকে ছুরি বা ব্লেডযুক্ত জিনিস ধরে কোসকুনের দিকে এগিয়ে আসতে এবং তাকে আঘাত করতে দেখা যায়।
যুক্তরাজ্যে আশ্রয় দাবি করা নাস্তিক কোসকুন সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টে বলেছেন, তিনি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগানের ‘ইসলামপন্থী সরকারের’ বিরুদ্ধে এক ধরনের প্রতিবাদ হিসেবে এটা করেছেন।
কোসকুনের আইনি ব্যয় বহনকারী ব্রিটেনের দ্য ফ্রি স্পিচ ইউনিয়ন (এফএসইউ ) এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ন্যাশনাল সেক্যুলার স্যোসাইটি বলেছে, ব্রিটেনের বাকস্বাধীনতার নিশ্চয়তা থাকা সত্ত্বেও তাকে মূলত ব্লাসফেমির জন্য বিচার করা হচ্ছে।
এফএসইউ তাদের এক্স-এ এক পোস্টে এই রায়কে ‘গভীর হতাশাজনক’ বলে অভিহিত করেছে।
এতে বলা হয়েছে, ‘প্রত্যেকেরই শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করার এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ থাকা উচিত, তা কিছু লোকের কাছে যতই আপত্তিকর বা বিরক্তিকর হোক না কেন’।
এফএসইউ এক বিবৃতিতে বলেছে, কোসকুন বলেছেন, তার দোষী সাব্যস্ত হওয়া ‘বাকস্বাধীনতার ওপর আক্রমণ’।