অনলাইন ডেস্ক : বাধ্যতামূলক লাইসেন্স সংক্রান্ত শর্ত ভঙ্গ করে ফ্লাইট পরিচালনার অভিযোগে ভারতীয় বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়ার ২ পাইলটকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)। রোববার (২ নভেম্বর) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া ও হিন্দুস্তান টাইমস।
মূলত এয়ার ইন্ডিয়ায় সময়সূচী এবং রোস্টারিংয়ের সমস্যা এখনও অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যেই ৫ মাস আগে এই বিষয়টি নিয়ে তাদের তিরস্কার করেছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিজিসিএ। এরই মধ্যে জানা যায়, গত মাসে মাত্র প্রয়োজনীয় লাইসেন্স ছাড়াই ফ্লাইট চালিয়েছেন দুই পাইলট।
আর এর জেরে এয়ারলাইন্সটি একজন কো-পাইলট এবং একজন সিনিয়র ক্যাপ্টেনকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছে বলে সম্প্রতি জানা গেছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া দুই পাইলটের একজনের ইংরেজি ভাষা দক্ষতা (ইএলপি) লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল। আর এক সহকারী-পাইলট দ্বি-বার্ষিক পাইলট প্রফিশিয়েন্সি চেক (পিপিসি) ইনস্ট্রুমেন্ট রেটিং টেস্টে উত্তীর্ণ হননি। ডিজিসিএ এই ঘটনার তদন্ত করছে এবং বিমান সংস্থার কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়েছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, একজন কো-পাইলট নির্ধারিত সময়ের ‘ইন্সট্রুমেন্ট রেটিং-পাইলট প্রফিসিয়েন্সি চেক’ (আইআর-পিপিসি) পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার পরও সংশোধনী প্রশিক্ষণ না নিয়েই ফ্লাইট পরিচালনা করেন। নিয়ম অনুযায়ী, কোনো পাইলট এই পরীক্ষায় ফেল করলে তাকে পুনরায় প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষতা প্রমাণ করতে হয়। কিন্তু ওই এয়ারবাস এ-৩২০-এর ওই কো-পাইলট তা না করেই দায়িত্ব পালন করেন। বিষয়টিকে গুরুতরভাবে দেখছে কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে, একজন সিনিয়র কমান্ডার মেয়াদোত্তীর্ণ ইংরেজি ভাষা দক্ষতা (ইএলপি) লাইসেন্স নিয়েই ফ্লাইট চালিয়েছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী, বৈধ ইএলপি ছাড়া কোনো পাইলটের ফ্লাইট পরিচালনা করার অনুমতি নেই।
এ বিষয়ে এয়ার ইন্ডিয়ার মুখপাত্র জানান, “একজন ফার্স্ট অফিসার পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার পরও ফ্লাইট পরিচালনা করেছিলেন— এমন একটি ঘটনা প্রশিক্ষণ দল শনাক্ত করেছে। বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গেই ওই পাইলট ও ক্রু শিডিউলারকে রোস্টার থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনা ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশনকে (ডিজিসিএ) জানানো হয়েছে।”
একইভাবে সিনিয়র পাইলটের ঘটনাতেও বিমান সংস্থাটি জানায়, ইএলপি লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও একজন সিনিয়র পাইলট ফ্লাইট পরিচালনা করেন। বিষয়টি জানার পর তাকে সঙ্গে সঙ্গে রোস্টার থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনাটি ডিজিসিএ-কে রিপোর্ট করা হয়েছে।”
এর আগেও গত ১২ জুন আহমেদাবাদ দুর্ঘটনার এক সপ্তাহ পর এয়ার ইন্ডিয়ার রোস্টার ব্যবস্থাপনায় গুরুতর অনিয়ম খুঁজে পায় ডিজিসিএ। সেসময় সংস্থাটি তিনজন সিনিয়র কর্মকর্তাকে সরিয়ে দিতে নির্দেশ দেয় এবং সতর্ক করে জানায়, ভবিষ্যতে পাইলটদের লাইসেন্স, বিশ্রাম বা ফ্লাইট সময় সংক্রান্ত নিয়ম ভঙ্গ হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এমনকি সম্ভাব্য এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থার মধ্যে জরিমানা, লাইসেন্স স্থগিতকরণ বা ফ্লাইট পরিচালনের অনুমতি বাতিলও থাকতে পারে।

