স্টাফ রিপোর্টার : সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, শিশুরা একটি জাতির ভিত্তি। শিশুদের সার্বিক উন্নয়নের জন্য শিশুর প্রারম্ভিক যত্ন ও বিকাশ নিশ্চিত করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। এলক্ষ্যে সরকার শিশুদের জন্য বাধ্যতামূলক ও বিনামূল্যে শিক্ষা, মৌলিক চাহিদা পূরণ, সুযোগের সমতা, অধিকার ও দায়িত্ব, জনস্বাস্থ্য এবং নৈতিকতা রক্ষার বিষয়গুলো রাষ্ট্র পরিচালনার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আজ ঢাকায় ব্রাক ইউনিভার্সিটিতে দু দিনব্যাপী জাতীয় ইসিডি সম্মেলন ২০২৫ উদ্বোধন উপলক্ষ্যে শিশুর প্রারম্ভিক যত্ন ও বিকাশের সমন্বিত নীতির ১২ বছর- আমরা কোথায় শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার এর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে ইউনিসেফ বাংলাদেশের নিউট্রিশন সেকশনের প্রধান এম এস দীপিকা মেহরিস শর্মা, বাংলাদেশ ইসিডি নেটওয়ার্কের চেয়ারপার্সন ডক্টর মঞ্জুর আহমেদ, ইসিডির সদস্য সচিব এম এস সৈয়দা সাজিয়া জামান প্রমূখ বক্তৃতা করেন।
উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, শিশুদের সুরক্ষা অধিকার নিশ্চিত করতে মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যের উপর জোর দিতে হবে। নিরাপদ মাতৃত্বের জন্য মাকে পুষ্টিকর এবং প্রাকৃতিক খাবার নিশ্চিত করতে হবে।কারণ গর্ভাবস্থায় মায়ের পুষ্টি ও মানসিক স্বাস্থ্য শিশুর প্রাথমিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ । তাই সুস্থ ও স্বাস্থ্যসম্মত শিশুর ভ্রুন বেড়ে উঠতে উপযুক্ত পরিবেশ ও পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করা সকলের দায়িত্ব। এ বিষয়ে পরিবারগুলোকে সহায়তা করার জন্য প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা যার আওতায় পুষ্টি, সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বিদ্যমান সেবাগুলোকে আরও উন্নত ও সহজলভ্য করা। শৈশবকালীন সুষম খাদ্যের সংকট বৃদ্ধির পেছনের কারণ গুলোর মধ্যে রয়েছে, পুষ্টিকর খাদ্য কেনার পরিবারের অক্ষমতা, শিশুকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানোর সম্পর্কে বাবা- মায়েদের সচেতনতার অভাব, প্রক্রিয়াজাত খাবার ও চিনি মিশ্রিত কমল পানীয় এর ব্যাপক বিপণন ও এসব খাবার খাওয়ার বদঅভ্যাস এবং জলবায়ু পরিবর্তন জনিত দুর্যোগের ব্যাপকতা বৃদ্ধি যা খাদ্য ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, জলবায়ু পরিবর্তন জনিত বিপর্যয় বিশেষ করে সতেজ খাবারের প্রাপ্যতা, কৃষি ক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা কমে যাওয়ায় খাদ্য দাম বেড়ে যাওয়া। শৈশবকালীন সুষম খাদ্যের সংকট ও অপুষ্টি দূর করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সেবা প্রদানে সামাজিক সুরক্ষার ক্ষেত্রে ইউনিসেফ বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা করছে।
শিশুর প্রান্তিক যত্ন ও বিকাশে জন্ম পূর্ব ও জন্ম পরবর্তী পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ তাই পরিবার ও সমাজে শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশের গুরুত্ব সম্পর্কে প্রচারণা করতে হবে। সরকার, পরিবার ,সমাজ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সম্মিলিত প্রচেষ্টার উপর এই জাতীয় নীতির সফলতা নির্ভর করছে। প্রাথমিক শিক্ষা ও শিশু সুরক্ষায় সরকার কাজ করে চলেছে এবং উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এবং বাংলাদেশের নিরাপদ নিশ্চিত করতে এবং উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিতে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।