পাবনা প্রতিনিধি : পাবনা পৌরসভার উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া এলাকায় ৯ বছরের শিশু শিক্ষার্থী হাফসাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। সোমবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে নিহতের মা রিতু খাতুন বাদী হয়ে পাবনা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। এতে তিনজন নামীয়সহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় নতুন করে পান্না সরদার (২৮) নামে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে মামলার তিন নামীয় আসামিকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে পাবনা টেক্সটাইল কলেজ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে ঘটনাদিন রাতেই সাব্বির ও রমজান নামের দুজনকে আটক করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া এলাকার টিপু সরদারের ছেলে সাব্বির সরদার (২৬), ছবেদ আলীর ছেলে রমজান আলী (৩০) ও খালেক সরদারের ছেলে পান্না সরদার (২৮)। সাব্বির ও রমজানকে রবিবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। সোমবার বিকেলে পান্নাকেও আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সদর থানার ওসি (অপারেশন) সঞ্জয় কুমার সাহা বলেন, মরদেহের সুরতহালে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। প্রাথমিক তদন্তেও ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। হাসপাতালের চিকিৎসকরাও একই ধরনের তথ্য দিয়েছেন।
নির্মম এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সোমবার সকালেই উত্তাল হয়ে ওঠে উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া এলাকা। নিহত হাফসার স্বজন ও এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল বের করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।
পরে তারা শহরের প্রধান সড়ক অবরোধ করে সকল আসামিকে গ্রেপ্তারের দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন। প্রায় এক ঘণ্টার এ অবরোধে যান চলাচল বন্ধ হয়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে সদর থানার ওসি আব্দুস সালাম ঘটনাস্থলে এসে আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা।
উল্লেখ্য শনিবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ছয়টার পর থেকে শিশু হাফসাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরিবারের পক্ষ থেকে মাইকিং করে খোঁজাখুঁজি চলতে থাকে। প্রায় দুই ঘণ্টা পর রাত আটটার দিকে বাড়ির পেছনের জঙ্গলের মধ্যে পাটিতে মোড়ানো কাদামাখা অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। হাফসা সদর উপজেলার মালঞ্চি ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামের প্রবাসী হাফিজুর রহমানের মেয়ে এবং স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেনের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
স্থানীয়রা জানান, হাফসার নানার বাড়ির পাশের বাগানটি দীর্ঘদিন ধরে বখাটে, মাদকসেবী ও জুয়াড়িদের আড্ডাস্থল ছিল। তাদেরই এ হত্যার সাথে সম্পৃক্ততা থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

