নাটোর প্রতিনিধি : আওয়ামী লীগ সরকার সময়ের নাটোরের শীর্ষ সন্ত্রাসী মো. কোয়েলের জামিনের তথ্য গোপন না রাখায় নাটোর জেলা কারাগারের জেলারকে এমপি শিমুল পরিচয় দিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে পরিবারসহ প্রাণে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা চেয়ে নাটোর জেলা কারাগারের জেলার শেখ মো. রাসেল বৃহস্পতিবার বিকালে নাটোর থানায় জিডি করেছেন।
নাটোর কারাগারের জেলার শেখ মো. রাসেল জানান, প্রথমে বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভারতীয় হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার থেকে নাটোর সদরের সাবেক এমপি আওয়ামী লীগ নেতা শফিকুল ইসলাম শিমুল পরিচয় দিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেন। তিনি কথা বলে নিশ্চিত হন কলদাতা নাটোর সদরের সাবেক এমপি আওয়ামী লীগ নেতা শফিকুল ইসলাম শিমুল।
এ সময় শিমুল জেলারকে বলেন- এমপির ঘনিষ্ঠ সহচর নাটোরের শীর্ষ সন্ত্রাসী হত্যাসহ ১০টি মামলার আসামি মো. কোয়েল বৃহস্পতিবার কুষ্টিয়া জেলা কারাগার থেকে জামিনে ছাড়া পাবেন- এ বিষয়ে নাটোর কারাগারে জামিনের কাগজপত্র পৌঁছলে তিনি (জেলার) যেন কাউকে না জানান। বুধবার রাতেও জামিনের বিষয় গোপন রাখতে এমপি শিমুল একই হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার থেকে একটি অডিও বার্তাও পাঠিয়ে হুমকি দেন।
নাটোর কারাগারে থাকা বন্দি কোয়েলকে ১৫ দিন আগে অন্য মামলায় হাজিরা দেওয়ার জন্য কুষ্টিয়া কারাগারে পাঠিয়েছিল নাটোর কারাগার কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার কুষ্টিয়া জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার সাথে সাথে কুষ্টিয়ার গোয়েন্দা পুলিশ কোয়েলকে পুনরায় আটক করে।
এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে একই নাম্বার থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা ১ মিনিট ও ২টা ৯ মিনিটে একই নাম্বার থেকে হুমকি দিয়ে জেলার শেখ মো. রাসেলকে তার হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে পরপর দুটি মেসেজ পাঠায়।
প্রথম ম্যাসেজে বলা হয়- ‘আপনি যে অন্যায় কাজটা করলেন, আল্লাহ যদি আমাকে বাঁচিয়ে রাখেন, মনে রাখবেন আপনার বৌসহ আপনার পরিবার কিভাবে বাঁচাবেন, রক্ষা করবেন, সেটা অবশ্যই ঠিক করে রাখবেন’।
অপর মেসেজে বলা হয়, ‘আপনার বিষয়টি নোট করে রাখা হয়েছে’।
এই হুমকি ও জিডির ঘটনায় নাটোরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
নাটোর কারাগারের জেলার শেখ মো. রাসেল বলেছেন, এমন হুমকিতে তিনি ভয় পাননি, নিয়মের কারণে এবং পরিবারের কথা বিবেচনা করে থানায় জিডি করেছেন।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দিন দুপুর থেকে নাটোর সদরের সাবেক এমপি আওয়ামী লীগ নেতা শফিকুল ইসলাম শিমুল আত্মগোপনে রয়েছেন। তার স্ত্রী-সন্তান কানাডার বেগমপাড়ার জান্নাতি প্যালেসে বসবাস করলেও তিনি কখনো কারো সামনে আসেননি। এমনকি কোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তার উপস্থিতি দেখা যায় না।

