নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঢাকা শনিবার। ভোর ৫:৩০। ৫ জুলাই, ২০২৫।

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজন সংস্কার, সেই সংস্কার আদায় করে ছাড়ব

জুলাই ৪, ২০২৫ ৯:৩৮
Link Copied!

অনলাইন ডেস্ক : জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কতগুলো মৌলিক সংস্কার অবশ্যই করতে হবে। আমরা সেই সংস্কারগুলোর কথা বলেছি। আমরা সংস্কারগুলো আদায় করে ছাড়ব। সুষ্ঠু নির্বাচনও ইনশাআল্লাহ আদায় করে ছাড়ব।’

শুক্রবার (৪ জুলাই) সন্ধ্যায় রংপুর জিলা স্কুল মাঠে জামায়াতে ইসলামীর বিভাগীয় জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রংপুর মহানগরী ও জেলা জামায়াত এ জনসভার আয়োজন করে।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘কেউ যদি আওয়ামী ফ্যাসিবাদের আমলের নির্বাচনের স্বপ্ন দেখে থাকেন, আমরা মহান আল্লাহর সাহায্যে সেই স্বপ্নকে দুঃস্বপ্নে পরিণত করব। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে দেয়া হবে না। কোনো প্রশাসনিক ক্যু করতে দেওয়া হবে না। ভোটকেন্দ্রে কোনো মাস্তানতন্ত্র চলতে দেওয়া না, কালো টাকার কোনো খেলা সহ্য করা হবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা বহু ধরনের ষড়যন্ত্রের কথা শুনতে পাচ্ছি, বহু ধরনের কথা ময়দানে শুনতে পাচ্ছি। বহু ধরনের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আলামত বুঝতে পারছি। আমরা সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেই- এই শেখ হাসিনা, তার হাতে সকল বাহিনী ছিল। দোর্দণ্ড প্রতাপ ছিল, জায়গায় জায়গায় নিজের লোক বসিয়েছিল। মান্তানদের দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছিল। কিন্তু যখন জনগণের জাগরণ, জনগণের বিস্ফোরণ হয়েছে, তখন কি তাকে আর কেউ রক্ষা করতে পেরেছে? তাহলে যেই জনগণ এতো মূল্য দিয়ে একটা পরিবর্তন এনেছে, সেই জনগণ আরেকটা ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে দেবে না ইনশাআল্লাহ।

আরও পড়ুনঃ  অপতথ্য মোকাবিলায় জাতিসংঘকে কার্যকর ব্যবস্থা গড়ে তোলার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

জামায়াতের আমির বলেন, আমরা কথা দিচ্ছি ফ্যাসিবাদ বিরোধী এই লড়াই ততদিন চলবে, যতদিন দেশে ফ্যাসিবাদের সামান্য চিহ্নও থাকবে। ফ্যাসিবাদেকে নিশ্চিহ্ন না করা পর্যন্ত আমাদের লড়াই কেউ থামাতে পারবে না।

তিনি আরও বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫৪ বছরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সাধ্যমতো জনগণের সুখে দুঃখে পাশে থাকার চেষ্টা করেছে। জনগণের প্রত্যেকটি ন্যায় দাবি আদায়ের জন্য সমানতালে ঘরে বাইরে লড়াই করেছে। এদেশের জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন আমির অধ্যাপক গোলাম আযম সর্বপ্রথম কেয়ারটেকার সরকারের প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেছিলেন। যার ভিত্তিতে ১৯৯১ সালে একটা, পরপর আরও দুটি-তিনটি নির্বাচন হয়েছে। তারপর থেকে সেই কেয়ারটেকার সরকারকে খেয়ে ফেলা হয়েছে।’

জামায়াতের আমির বলেন, ‘সাড়ে পনোরো বছরে আমাদের অনেক নেতৃবৃন্দকে খুন করা হয়েছে। দুইজন আমির, দুইজন নায়েবে আমির, দুইজন অ্যাসিস্টেন্ট সেক্রেটারি জেনারেল ও একজন নির্বাহী পরিষদ সদস্যসহ এ রকম করে একদম মাথা থেকে শুরু করে ১১ জন নেতাকে আমাদের বুক থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। আজকে জীবন্ত যে শহীদ (এটিএম আজহারুল ইসলাম) আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে তার জীবনকে মহান আল্লাহর জন্য এবং বাংলাদেশের জনগণের জন্য কাজ করার যে আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করলেন, আমাদের ওই সমস্ত নেতৃবৃন্দ বেঁচে থাকলে বাংলার প্রতিটি প্রান্তরে ঘুরে ঘুরে আজকের এই হতাশাগ্রস্ত জাতিকে আশা জাগানিয়া কথা বলতেন। জাতিকে নতুন করে পথ দেখাতেন।’

আরও পড়ুনঃ  ইনসাফ ও মর্যাদার বাংলাদেশের জন্য লড়াই করছে এনসিপি : নাহিদ ইসলাম

বিএনপিকে ইঙ্গিত করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আবু সাঈদদের শাহাদতের জীবন বাজি রাখা লড়াই এবং জীবন উৎস্বর্গ করার বিনিময়ে আজকে বাংলাদেশের মানুষ আমরা যারা মুক্তি পেলাম, তারা কেন ধৈর্য ধরতে পারছি না। চতুর্দিকে পত্রিকার পাতা খুললে, স্যাটেলাইট মিডিয়ার সামনে দাঁড়ালে-বসলে আজকে বাংলাদেশের কোনো না কোনো এলাকায় আমরা বিভৎস কিছু মানুষের থাবা দেখতে পাচ্ছি। আমার মায়ের ইজ্জতের ওপর এই থাবা দেখছি। মানুষের জীবনের ওপর এই থাবা দেখছি। জনগণের সম্পদের ওপর এই থাবা দেখছি। এমনকি দিশাহারা হয়ে তাদের যখন হুঁশ ঠিক থাকে না, তখন নিজের লোককেও নিজেরা খুন করতে কুণ্ঠাবোধ করে না। কেনরে ভাই, তোমাদের এই অবস্থা?’

আরও পড়ুনঃ  ‘ব্যথা তো সাময়িক, সিনেমার কাজও শেষ’

নির্বাচনের পরিবেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সারা বাংলাদেশকে পাটগ্রাম বানিয়ে ফেলছে একদল। এই অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচনের কল্পনাও করা যায় না।’

জনসভায় আরও বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এটিএম আজহারুল ইসলাম, নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আব্দুল হালিম, উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন প্রমুখ।

দীর্ঘ ১৭ বছর পর রংপুরে আয়োজিত এই জনসভা বিকেল ৩টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও জুমার নামাজের পরই জনসভার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সমাগমে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় রংপুর জিলা স্কুল মাঠ। লোকসমাগম মাঠ ছেড়ে উপচে পড়ে সড়কে। জনসভা থেকে আগামী নির্বাচনে রংপুর বিভাগের ৩৩টি আসনে জামায়াতের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।