নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বাংলাদেশ মঙ্গলবার। সকাল ৯:০৮। ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫।

হারানো অস্ত্রের মধ্যে ৮০ শতাংশ উদ্ধার হয়েছে

সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৫ ১১:৩৮
Link Copied!

অনলাইন ডেস্ক : গত বছরের ৫ আগস্টে হারানো অস্ত্রের মধ্যে ৮০ শতাংশ ইতোমধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে উল্লেখ করে সেনা সদরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হারানো ১২ হাজার ১১৯টি অস্ত্রের মধ্যে ৯ হাজার ৭৯৪টি এবং ৩ লাখ ৯০ হাজার রাউন্ড গোলাবারুদের মধ্যে ২ লাখ ৮৭ হাজার ৩৫৯ রাউন্ড উদ্ধার করা হয়েছে। বাকিগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে উদ্ধার করা সম্ভব হবে।

সোমবার দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসে এক ব্রিফিংয়ে সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশনস ডিরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, ‘চিহ্নিত সন্ত্রাসী গ্রেফতার ও অস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধার অভিযানে গত এক মাসে সেনাবাহিনী ৬৫টি অবৈধ অস্ত্র ও ২৯৭ রাউন্ড গোলাবারুদ এবং গত বছরের আগষ্ট থেকে এ পর্যন্ত ১২ হাজার ১১৯টি হারানো অস্ত্রের মধ্যে ৯ হাজার ৭৯৪টি অস্ত্র ও ৩ লাখ ৯০ রাউন্ড হারানো গোলাবারুদের মধ্যে ২ লাখ ৮৭ হাজার ৩৫৯ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। এছাড়াও, সেনাবাহিনী বিভিন্ন অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত এ পর্যন্ত সর্বমোট ১৭ হাজার ৯২৬ জন এবং গত এক মাসে ১ হাজার ২৯৪ জনকে গ্রেফতার করেছে। যাদের মধ্যে কিশোর গ্যাং, তালিকাভুক্ত অপরাধী, ডাকাত, চাঁদাবাজসহ অন্যান্য অপরাধী রয়েছে।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্রিক দায়িত্ব পালনে সেনাবাহিনী প্রস্তুত উল্লেখ করে শফিকুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। তবে শিগগিরই ইসির নির্দেশনা পাওয়া যাবে বলে আমরা আশা করছি।

আরও পড়ুনঃ  তানোরে ভূল চিকিৎসা ও অনীয়মের অভিযোগে মহানগর ক্লিনিকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ইউএনও

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন থেকে যে দায়িত্ব দেওয়া হবে সেনাবাহিনী সে অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবে এবং সর্বোচ্চ পেশাদারির সঙ্গেই সেনাবাহিনী সেই দায়িত্ব পালন করবে।

গত ২৯ আগস্ট কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গণঅধিকার পরিষদ ও জাতীয় পার্টির কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ওই সময় সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ব্যর্থ হলে সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করে।

তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য বারবার অনুরোধ জানালেও পুনরায় উত্তেজিত নেতাকর্মীরা সহিংসতা শুরু করে। এতে সেনাবাহিনীর ৫ জন এবং পুলিশের ৬ জন সদস্য গুরুতর আহত হন। একই ঘটনায় সেনাবাহিনীর একটি পিকআপের উইন্ডশিল্ড ভেঙে যায়।

কর্নেল শফিকুল ইসলাম জানান, গত ৩১ আগস্ট রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শিক্ষার্থী ও স্থানীয় গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ব্যর্থ হলে গভীর রাতে সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করে ভোররাতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। ওই সংঘর্ষে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর এবং কিছু পুলিশ সদস্য আহত হন।

তিনি জানান, ২ সেপ্টেম্বর নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে এভারগ্রিন কোম্পানির শ্রমিকরা বকেয়া বেতন ও অবৈধভাবে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। তারা পুলিশের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং একজন সদস্যের অস্ত্র ও গোলাবারুদ ছিনিয়ে নেয়। এতে বহু পুলিশ আহত হয় এবং ছয়জন সেনাসদস্য আহত হন, যার মধ্যে একজন বর্তমানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ  ছয় মাসে গ্রেপ্তার ১১৩২৩, মামলা নিষ্পত্তি ৫৫৫৮

মাদকবিরোধী অভিযানে সেনাবাহিনী গত এক মাসে ঢাকার খিলগাঁও, কাফরুল, কলাবাগান, নাখালপাড়া ছাড়াও যশোর, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর, হবিগঞ্জ ও ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩৭৮ জনকে গ্রেফতার করেছে। গত বছরের আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত মাদক সংশ্লিষ্ট সর্বমোট ৫ হাজার ৯৫৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

চোরাচালান প্রতিরোধেও সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। গত আগস্ট মাসে সিলেট ও সুনামগঞ্জ এলাকায় চোরাকারবারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ২ কোটি ১৯ লাখ টাকার পণ্য জব্দ করা হয়।

স্বাস্থ্য খাতে অনিয়ম প্রতিরোধে সেনাবাহিনী ২৬ আগস্ট মহাখালী ক্যান্সার হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে দালাল চক্রের মূল হোতাসহ ৬২ জনকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। একইভাবে, ১৭ আগস্ট মুন্সিগঞ্জে ভেজাল প্রসাধনী উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠান সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং অপরাধীদের গ্রেফতার করা হয়।

অবৈধভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলন প্রতিরোধে গত এক মাসে মানিকগঞ্জে অভিযান চালিয়ে ৯টি ড্রেজার মেশিন জব্দ করা হয় এবং ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

আরও পড়ুনঃ  আরও তিন দলের ২০২৬ বিশ্বকাপ নিশ্চিত, এখন পর্যন্ত উঠল যারা

জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের সুচিকিৎসায় সেনাবাহিনী এ পর্যন্ত ৫ হাজার ৫৬ জনকে দেশের বিভিন্ন সিএমএইচে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। ঢাকায় এখনো ৩৫ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে।

পার্বত্য চট্টগ্রামে বিগত এক মাসে ৮টি গোয়েন্দা তথ্য নির্ভর অভিযান পরিচালনা করা হয়। এতে ১৮টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৬১ রাউন্ড গোলাবারুদ ও মাদকসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে। এসব অভিযানে জেএসএস (মূল), ইউপিডিএফ (মূল) ও এমএলপি’র সদস্যসহ মোট ৩৭ জন সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করা হয়। বান্দরবানের রুমা উপজেলায় দীর্ঘমেয়াদি অভিযানে কেএনএ-এর একটি প্রশিক্ষণ ঘাঁটি ধ্বংস এবং সামরিক সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত ও এফডিএমএন ক্যাম্পে গত এক মাসে প্রায় ৭৫০ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। যৌথ বাহিনীর অভিযানে ৯ লাখ ১২ হাজার ইয়াবা, ১ কেজি ক্রিস্টাল আইস, ১৭ লাখ টাকার চোরাই পণ্য, ৯টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৫২৯ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়। এ সময় এফডিএমএন ক্যাম্প এলাকায় একাধিক অভিযান চালানো হয়।

ডাকসু নির্বাচনে সেনাবাহিনীর ভূমিকা সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচনের সঙ্গে সেনাবাহিনীর কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তবে এই নির্বাচন গণতন্ত্রের চর্চায় ভূমিকা রাখবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’-বাসস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।