নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঢাকা শুক্রবার। রাত ১০:১৭। ৬ জুন, ২০২৫।

২০০ গাড়ি কেনা হচ্ছে পুলিশের জন্য, ব্যয় ১৭২ কোটি টাকা

জুন ৫, ২০২৫ ১১:৩৫
Link Copied!

অনলাইন ডেস্ক : গত বছরের জুলাই মাসে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থানে আগুনে পুড়ে যাওয়া ও ক্ষতিগ্রস্ত পুলিশ যানবাহনের জায়গায় নতুন গাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রথম ধাপে পুলিশের জন্য ২০০টি ডাবল কেবিন পিকআপ (জিপ) কেনা হবে। প্রতিটি গাড়ির দাম ধরা হয়েছে ৮৬ লাখ টাকা, যার মোট ব্যয় দাঁড়াবে ১৭২ কোটি টাকা।

বুধবার (৫ জুন) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ-সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদন পায়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে উপস্থাপিত এ প্রস্তাবের ভিত্তিতে রাষ্ট্রমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে গাড়িগুলো কেনা হবে।

অনুমোদনের পক্ষে যুক্তি দিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘পুলিশের অনেক গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাড়িগুলো কেনার জন্য অর্থ বরাদ্দ দিয়েছি।’ ঢাকার কাছাকাছি কোথাও পুলিশের জন্য হাউজিং কমপ্লেক্স নির্মাণের চিন্তাও করা হয়েছে বলে জানান অর্থ উপদেষ্টা।

সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে গাড়িগুলো কেনার প্রস্তাব এর আগে গত ২৯ এপ্রিল অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। জননিরাপত্তা বিভাগ ওই সময় অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটিকে জানিয়েছিল, ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থান ও এর জেরে উদ্ভূত ঘটনায় ৪৬০টি থানার পাশাপাশি পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনায়ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ কারণে পুলিশের বিপুলসংখ্যক যানবাহন পুড়ে যায়। সে জন্য দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জরুরি ভিত্তিতে গাড়ি কেনা দরকার।

আরও পড়ুনঃ  পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সকল ভাতা সঠিক মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে : উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ

দেশে বর্তমানে ৬৬৪টি থানা, ২১৫টি তদন্তকেন্দ্র, ৪৫৯টি ফাঁড়ি এবং ১৬৭টি ক্যাম্প রয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তর সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কাছে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনার মাধ্যমে সম্প্রতি জানিয়েছে, জুলাই আন্দোলনে পুলিশের অপেশাদার, অসৎ, ক্ষমতালিপ্সু ও উচ্ছৃঙ্খল কর্মকর্তাদের কারণে গোটা পুলিশ বাহিনীর ওপর ক্ষোভ তৈরি হয় মানুষের। দীর্ঘদিনের ক্ষোভের কারণে কিছু দুষ্কৃতকারী পুলিশের স্থাপনাসহ যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে ৫২৬টি গাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে যায়, আর ভাঙচুর করা হয় ৫৩৩টি গাড়ি। সব মিলিয়ে মোট ১ হাজার ৫৯টি যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে যায়, যাতে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৩৬০ কোটি টাকা।

আরও পড়ুনঃ  বাজেটে দাম কমার যত সুখবর

সূত্রগুলো জানায়, পুলিশ সদর দপ্তর যানবাহন কেনার প্রস্তাব জন নিরাপত্তা বিভাগে পাঠায় গত বছরের শেষ দিকে। এতে জানানো হয়, গত বছরের ১ জুলাই থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশে ১০৫টি থানা ও পুলিশ ফাঁড়িতে যানবাহন ভস্মীভূত হয়।

পুলিশের কার্যক্রম পুরোদমে শুরু ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সদর দপ্তর শুরুতে ৩৬০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব পাঠায় জননিরাপত্তা বিভাগে। এরপর গত ৮ জানুয়ারি জননিরাপত্তা বিভাগ যানবাহন কেনার যৌক্তিকতা তুলে ধরে চিঠি পাঠায় অর্থ বিভাগে।

পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, পুলিশের জন্য ৩৮টি জিপ, ২৫০টি ডাবল কেবিন পিকআপ, ৫৬টি সিঙ্গেল কেবিন পিকআপ, ২টি করে প্যাট্রল কার ও মাইক্রোবাস,২টি অ্যাম্বুলেন্স, ২০টি ট্রাক, ২টি বাস, ১২টি প্রিজন ভ্যান, ২৮৫টি মোটরসাইকেল, ৮টি রেকার, ৪টি এপিসি (আর্মার্ড পারসোনাল ক্যারিয়ার), ১টি জলকামানসহ মোট ৭২২টি যানবাহন কেনা দরকার। পরে যাচাই-বাছাই করে গাড়ির সংখ্যা অবশ্য কমিয়ে আনা হয়।

আরও পড়ুনঃ  বাগমারায় মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন নির্দেশিকা বিষয়ক উপজেলা কমিটির প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

ক্রয় কমিটিতে গাড়ি কেনার প্রস্তাব অনুমোদিত হওয়ার পর গতকাল অর্থ বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট থেকেই পুলিশের জন্য গাড়িগুলো কেনা হবে। সূত্রগুলো জানায়, গতকাল অনুষ্ঠিত ক্রয় কমিটির বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে এ প্রস্তাব ছিল না। ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার আগের দিন অনুষ্ঠিত এ প্রস্তাব তাৎক্ষণিকভাবে উপস্থাপন করা হয় টেবিলে।

যোগাযোগ করলে পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (গণমাধ্যম ও জনসংযোগ) ইনামুল হক সাগর গতকাল বলেন, ‘পুলিশের অনেক গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ দফায় ২০০ গাড়ি কেনার অনুমোদন পাওয়া গেছে, যা নিঃসন্দেহে পুলিশের অপারেশনাল সক্ষমতা বাড়িয়ে দেবে।’ ক্ষতিগ্রস্ত অন্য গাড়িগুলো কেনার কার্যক্রম কী অবস্থায় আছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলেও তিনি কোনো জবাব দেননি।-ইত্তেফাক

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।