নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বাংলাদেশ রবিবার। রাত ৮:৩৪। ১২ অক্টোবর, ২০২৫।

২০০ তালেবান যোদ্ধা, ৫৮ পাকিস্তানি সেনা নিহত

অক্টোবর ১২, ২০২৫ ৬:২৭
Link Copied!

অনলাইন ডেস্ক : আফগানিস্তানের পক্ষ থেকে বিনা উসকানিতে চালানো হামলার পর সীমান্তে সংঘর্ষে পাকিস্তানের ২৩ জন সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। পাল্টা অভিযানে অন্তত ২০০ জন তালেবান ও তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) যোদ্ধা নিহত হয়েছেন।

রোববার (১২ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে এই দাবি করেছে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

অন্যদিকে সীমান্তে রাতভর গোলাগুলির সময় তারা ৫৮ পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা করেছে বলে দাবি কাবুলের। আফগানিস্তান জানিয়েছে, তারা ৫৮ জন পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা করেছে আর তাদের পক্ষে ২০ আফগান সেনা নিহত বা আহত হয়েছেন। তবে রয়টার্স জানিয়েছে, কতজন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছেন তা তারা কীভাবে জানল সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি তালেবান প্রশাসন।

আইএসপিআর জানায়, ১১ থেকে ১২ অক্টোবর রাতভর আফগান তালেবান ও ‘ভারত-মদদপুষ্ট ফিতনা-আল-খাওয়ারিজ’ পাকিস্তানের সীমান্তে আকস্মিক আক্রমণ চালায়। ‘ফিতনা-আল-খাওয়ারিজ’ শব্দটি নিষিদ্ধ তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) জন্য এবং ‘ফিতনা-আল-হিন্দুস্তান’ বেলুচিস্তানের বিদ্রোহী সংগঠনগুলোর জন্য ব্যবহৃত হয়।

আরও পড়ুনঃ  রাজশাহীতে বিভিন্ন অপরাধে গ্রেপ্তার ১১

তাদের দাবি, আফগান ভূখণ্ডে তালেবান শিবির, পোস্ট, সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং সমর্থন নেটওয়ার্কে নির্দিষ্টভাবে হামলা চালানো হয়েছে। এসব অভিযানে আইএসকেপি/দায়েশ-সম্পৃক্ত উপাদানও টার্গেট করা হয়েছে। রাতভর সংঘর্ষে আফগান সীমান্তের অন্তত ২১টি ক্যাম্প পাকিস্তানি বাহিনী সাময়িকভাবে দখল করে। একইসঙ্গে পাকিস্তানের ওপর হামলার জন্য ব্যবহৃত বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ ক্যাম্প ধ্বংস করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, “এই জঘন্য আক্রমণের বিরুদ্ধে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার লড়াইয়ে ২৩ জন বীর সৈনিক শাহাদাত বরণ করেছেন এবং ২৯ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে পাল্টা অভিযানে ২০০ জনেরও বেশি তালেবান ও তাদের মিত্র সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। সীমান্তে তালেবান পোস্ট, সদর দপ্তর ও সহায়তা নেটওয়ার্কে ‘ব্যাপক ও কৌশলগত ক্ষয়ক্ষতি’ হয়েছে বলেও দাবি করা হয়।”

আরও পড়ুনঃ  যানজট নিরসনে দূরপাল্লার বাস স্থানান্তরে নওদাপাড়া টার্মিনাল পরিদর্শনে পুলিশ কমিশনার

এতে আরও বলা হয়েছে, আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাম্প্রতিক ভারত সফরের সময়েই এই হামলা চালানো হয়, যা ‘গুরুতর উসকানি’ বলে আখ্যা দিয়েছে পাকিস্তান। বিবৃতিতে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ‘তালেবান সরকার যদি ভারতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা চালায়, তবে আফগানিস্তান থেকে উদ্ভূত সন্ত্রাসবাদ সম্পূর্ণরূপে নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত পাকিস্তান বিশ্রাম নেবে না।’

রাষ্ট্র পরিচালিত রেডিও পাকিস্তান জানিয়েছে, পাল্টা অভিযানে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আফগান সীমান্তের একাধিক পোস্টে ‘অত্যন্ত নির্ভুল হামলা’ চালায় এবং ১৯টি তালেবান পোস্ট দখল করে। নোশকি সেক্টরের দুররানি ও মনোজবা ক্যাম্প, গজনালী সদর দপ্তরসহ বেশ কয়েকটি ঘাঁটি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা হয়েছে। একইসঙ্গে স্পিন বোলদাক এলাকায় আফগান তালেবানদের ‘আসমাতুল্লাহ কারার ক্যাম্প’ (পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলার অন্যতম ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত) ধ্বংস করা হয়েছে বলে জানায় নিরাপত্তা সূত্র।

আরও পড়ুনঃ  রাজশাহীতে গাছ হত্যা বন্ধে চিঠি প্রদান সচেতন নগরবাসীর

পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ও প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ আলাদাভাবে বিবৃতি দিয়ে বলেন, ‘দেশের সার্বভৌমত্বের সঙ্গে কোনো আপস করা হবে না।’

প্রেসিডেন্ট জারদারি জাতিসংঘের প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, আফগান মাটি থেকে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলার প্রমাণ সুস্পষ্ট। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘দীর্ঘমেয়াদে আঞ্চলিক শান্তি টিকিয়ে রাখতে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও যৌথ সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাই একমাত্র পথ। ভারত-সমর্থিত খারিজ সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে পাকিস্তানের ভেতরে হামলা চালানো একটি সুপ্রমাণিত বাস্তবতা, যা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ধারাবাহিক প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।’

সূত্র: রয়টার্স, জিও নিউজ, দ্য ডন

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।