নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঢাকা বৃহস্পতিবার। রাত ৮:২৯। ১৯ জুন, ২০২৫।

২১ দিনে সেনা অভিযানে গ্রেপ্তার ৯৯৬

জুন ১৯, ২০২৫ ৪:৩২
Link Copied!

অনলাইন ডেস্ক : চিহ্নিত সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার ও অস্ত্র গোলাবারুদ উদ্ধার অভিযানে গত তিন সপ্তাহে সেনাবাহিনী ৫৬টি অবৈধ অস্ত্র ও ৯৯০ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। এছাড়াও অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত ৯৯৬ জনকে এবং এ পর্যন্ত মোট ১৫ হাজার ২৬২ জনকে সেনাবাহিনী গ্রেপ্তার করেছে।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মিলিটারি অপারেশনস ডিরেক্টরেটের (স্টাফ কর্নেল) কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ৯৯৬ জন গ্রেপ্তারের মধ্যে কিশোর গ্যাং, তালিকাভুক্ত অপরাধী, ডাকাতসহ অন্যান্য অপরাধী উল্লেখযোগ্য। সেনাবাহিনী গত ২৭ মে একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে কুষ্টিয়া জেলা থেকে শীর্ষ তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে ফতেহ আলী ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী মোল্লা মাসুদ ওরফে আবু রাসেল মাসুদকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে হাতিরঝিল এলাকা থেকে সুব্রত বাইনের অপর দুই সহযোগী শুটার আরাফাত এবং শরীফকে ৫টি অত্যাধুনিক বিদেশি পিস্তল, ১০টি ম্যাগাজিন, ৫৩ রাউন্ড অ্যামোনিশন ও ১টি স্যাটেলাইট ফোনসহ সেনাবাহিনী গ্রেপ্তার করে।

এছাড়াও একইদিনে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় আরও একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে বুড়িগঙ্গা ফিলিং স্টেশন এলাকা থেকে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ফরিদ আহমেদ বাবু ওরফে এক্সেল বাবুসহ আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় হত্যা, অপহরণ, চাঁদাবাজি এবং ভূমি দখলের মতো গুরুতর অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে। অভিযানের ফলে স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ও নিরাপত্তা বিরাজ করছে।

আরও পড়ুনঃ  ফরিদপুর শহর ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সজীব গ্রেপ্তার

কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, গত ৪ জুন মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্প এলাকা থেকে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী বুনিয়া সোহেলকে ১০ জন সহযোগীসহ সেনাবাহিনী গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার বুনিয়া সোহেলের বিরুদ্ধে ৩০টির বেশি মামলা রয়েছে। এসময় তাদের কাছ থেকে নগদ অর্থ, বিভিন্ন ধরনের ধারালো দেশীয় অস্ত্র এবং মাদক উদ্ধার করা হয়।

গত ৫ জুন কক্সবাজারের মাঝিরকাটা এলাকায় কুখ্যাত শাহীনুর রহমান ওরফে শাহীন ডাকাতকে তার দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, অপহরণ, মাদক, চাঁদাবাজিসহ ২০টির বেশি মামলা রয়েছে। এসময় ১টি স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রসহ মোট ৪টি অস্ত্র, গোলাবারুদ, দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করা হয়।

গত ৬ জুন কুষ্টিয়া জেলার দূর্বাচর এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে শীর্ষ সন্ত্রাসী জাহাঙ্গীর কবির লিপটনসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানে ৬টি বিদেশি পিস্তল, ১টি লং ব্যারেল গান, ১০টি পিস্তল ম্যাগাজিন এবং সর্বমোট ১১৯ রাউন্ড অ্যামুনিশন উদ্ধার করা হয়।

আরও পড়ুনঃ  বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডে ছাত্রদলের লিফলেট বিতরন

তিনি আরও বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানে গত তিন সপ্তাহে ৪৫২ জন মাদক কারবারি এবং আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৫ হাজার ৪৭৬ জনকে সেনাবাহিনী গ্রেপ্তার করেছে। উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অবৈধ মাদকদ্রব্য, যেমন ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজা, অবৈধ মদ ইত্যাদি উদ্ধার করা হয়েছে, যার মাধ্যমে এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ও নিরাপত্তা বিরাজ করছে। গত ৬ জুন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সাভারের লুটেরচর এলাকায় একটি মদ তৈরির কারখানায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ কারখানায় গ্যাস লাইটার তৈরির নামে অবৈধভাবে মদ তৈরি করা হচ্ছিল। পরে কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। অভিযানে ৮ হাজার ৬২০ লিটার মদ এবং মদ উৎপাদনের বিভিন্ন কাঁচামাল জব্দ করা হয়।

কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার জুঁইদন্ডী ইউনিয়নে অতিবৃষ্টিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার ফলে সমগ্র এলাকা প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। সেনাবাহিনীর একটি দল জরুরি ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দ্রুততার সঙ্গে বাঁধ মেরামতের কার্যক্রম শুরু করে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। যার ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দুর্ভোগ লাঘব হয় ও জনমনে স্বস্তি ফিরে আসে।

আরও পড়ুনঃ  কোনোদিন ২০ ঘণ্টা কাজ করিনি : কাজল

তিনি আরও বলেন, টানা ভারী বর্ষণে হবিগঞ্জের কিছু এলাকায় বন্যার সৃষ্টি হয়। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পূর্বের ন্যায় বন্যা দুর্গত পানিবন্দি মানুষের পাশে দাঁড়ায়। গত ৭ জুন পবিত্র ঈদুল আজহার দিন সেনাবাহিনীর ১৭ পদাতিক ডিভিশনের সেনা সদস্যরা হবিগঞ্জ এলাকায় বন্যা দুর্গতদের মধ্যে খাবার বিতরণ করে।

সেনাবাহিনীর এ কর্মকর্তা বলেন, শিল্পাঞ্চল এলাকায় নিরাপত্তা বিধানে ৫ আগস্ট পরবর্তী সময় থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত সার্বিক নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সার্বিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। গত ২৭ মে সেনা সদরে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভায় সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে ঈদের আগেই শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করা হয় ও উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ভেজাল খাদ্যদ্রব্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ও কারখানায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ভ্রাম্যমাণ আদালতের সহায়তায় মিরপুরের একটি চকলেট কারখানাকে ৭ লাখ টাকা জরিমানাসহ সাময়িক বন্ধের আদেশ জারি করে। যার মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে সেনাবাহিনী বিশেষ সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।-ঢাকা পোস্ট

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।