অনলাইন ডেস্ক : ভারতের মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের (এমপিসিএ) সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ২৯ বছর বয়সী মহানার্যমান সিন্ধিয়া। ১৯৫৭ সালের পর এত কম বয়সে আর কেউ ভারতীয় ক্রিকেটের এত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আসেননি।
সভাপতি পদে মহানার্যমানের নির্বাচিত হওয়ার নেপথ্যে খানিকটা রাজনৈতিক যোগ রয়েছে। মঙ্গলবার ইন্দোরে অনুষ্ঠিত মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সাধারণ সভায় উপস্থিত ছিলেন তার পিতা ও কেন্দ্রীয় বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, যিনি নিজেও বহু বছর ধরে এই অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বে ছিলেন। তার দাদাও—ক্যারিশম্যাটিক নেতা মাধবরাও সিন্ধিয়া—প্রথমবারের মতো রাজ্যের ক্রিকেট ইতিহাসে ‘সিন্ধিয়া’ নামটি জোরালোভাবে প্রতিষ্ঠিত করেন।
অবশ্য শুধু পারিবারিক জোরেই নয়, গোয়ালিয়র রাজপরিবারের সন্তান মহানার্যমান সিন্ধিয়া যথেষ্ট উচ্চশিক্ষিত। ২০০৮ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন দুন স্কুলে। ২০১৯ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞান এবং প্রশাসন নিয়ে স্নাতক করেছেন আমেরিকার ইয়েল ইউনিভার্সিটি থেকে। লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়েও পড়াশোনা রয়েছে মহানার্যমানের।
রাজপরিবারের সন্তান হলেও শৈশব থেকেই নানা বিষয়ে আগ্রহ ছিল মহানার্যমানের। দুন স্কুলের পাঠ শেষ হওয়ার পর ২০১৪ সালে ভুটানের ‘গ্রস ন্যাশনাল হ্যাপিনেস টেন্টার’-এ ইন্টার্নশিপ করতে যান তিনি। ইন্টার্ন হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ে। দেশ-বিদেশের নানা সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থায় শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করেছেন। চাকরিরও অভিজ্ঞতা রয়েছে।
২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত মুম্বাইয়ের ‘বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপে’ কাজ করেছেন অ্যাসোসিয়েট হিসেবে। ২০২১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ‘আন্ডারসাউন্ড এন্টারটেনমেন্ট’ এবং ‘জয় বিলাস প্যালেস’র ডিরেক্টর ছিলেন। তার সঙ্গেই ২০২২ সাল থেকে নিজের ব্যবসা শুরু করেন মহানার্যমান।
ক্রিকেট প্রশাসক হিসেবে মহানার্যমানের হাতেখড়ি বছর তিনেক আগে। ২০২২ সালে গোয়ালিয়র ডিভিশন ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০২৪ সালে মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের আজীবন সদস্যপদ পান। সভাপতি পদে নির্বাচিত হওয়ার আগেই তার উদ্যোগে এ বছর থেকে শুরু হয়েছে মধ্যপ্রদেশ টি-টোয়েন্টি লিগ।
পরিবারের সঙ্গে গোয়ালিয়র জয় বিলাস প্যালেসেই থাকেন মহানার্যমান। ১৫ একর জায়গার ওপর তৈরি ৪০০০ কোটি টাকার রাজপ্রাসাদে। ৪০০টি ঘরের ফরাসি এবং পার্সি স্থাপত্যের প্রাসাদে ব্যবহার করা হয়েছে ৫৬০ কেজি সোনা। প্রাসাদে রয়েছে রুপার রথ। ডাইনিং হলে এখনও ব্যবহার হয় রুপার ট্রেন।
বিপুল বৈভব, পারিবারিক ইতিহাস-আভিজাত্যের মধ্যে বড় হলেও প্রথম থেকে নিজস্ব পরিচয় তৈরির চেষ্টা করেছেন ২৯ বছরের ক্রিকেট প্রশাসক। দেশ-বিদেশে পড়াশোনা, নিজস্ব একাধিক ব্যবসায় সাফল্যের পর এবার ক্রিকেট প্রশাসনে সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মাধবরাও সিন্ধিয়ার নাতি।