অনলাইন ডেস্ক : অর্থনৈতিক সংকটের জেরে চুক্তি নবায়ন করতে ব্যর্থ হলে ২০২১ সালে নাটকীয়ভাবে লিওনেল মেসিকে ছেড়ে দেয় বার্সেলোনা। এর মধ্যে দিয়ে শেষ হয় দু’পক্ষের দুই দশকের সম্পর্ক, অশ্রুসিক্ত বিদায় নেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা। কিন্তু এরপর আরও চার বছর পেরিয়ে গেলেও কাতালান ক্লাবটিতে মেসির পারিশ্রমিক বকেয়া থেকে যায়। অবশেষে তিনি প্রায় ৬ মিলিয়ন ইউরো (৮৫ কোটি টাকার বেশি) বকেয়া হাতে পেতে চলেছেন।
তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে বিদায়ের পর মেসি যোগ দিয়েছিলেন ফরাসি ক্লাব প্যারিস সেইন্ট জার্মেইতে (পিএসজি)। সেখানেও তার দুই মৌসুমের সময়টা ভালো কাটেনি। এর ভেতর অবশ্য বার্সায় ফেরার আলোচনা বেশ কয়েকবার উঠলেও, মেসি ২০২৩ সালের মাঝামাঝিতে যোগ দেন আমেরিকান মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) ক্লাব ইন্টার মায়ামিতে। তবে আড়ালেই ছিল তার বার্সা থেকে প্রাপ্য বকেয়ার বিষয়টি।
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘স্পোর্ত’ জানিয়েছে, ২০২০ সালে মেসির শেষ চুক্তি অনুযায়ী কয়েক ইন্সটলমেন্টে ৪৮ মিলিয়ন ইউরো পাওয়ার কথা ছিল কাতালান ক্লাবটি থেকে। তবে ওই সময়ে আর্থিক সংকটে ভোগা বার্সার শেষ ইনস্টলমেন্টটি বাকি রয়ে যায়। এক্ষেত্রে অবশ্য মেসি একা নন, স্প্যানিশ জায়ান্টদের কাছে পারিশ্রমিকের বকেয়া জমা পড়ে আরও কয়েকজন খেলোয়াড় ও কোচের। ২০২০ সালে করোনো মহামারির সময়কালে আর্থিক দুর্দশা শুরু হয় বার্সার। ফলে চুক্তি অনুযায়ী অর্থ পেতে বিলম্ব হয় স্যামুয়েল উমতিতি, সার্জিও বুসকেটস, ফিলিপে কৌতিনিয়ো, উসমান দেম্বেলে ও সাবেক ম্যানেজার রোনাল্ড ক্যোমানের।
ওই সময় বার্সেলোনার সভাপতি ছিলেন জোসেফ মারিয়া বার্তামেউ। যাকে মেসির সঙ্গে ক্লাবের বিচ্ছেদের জন্যও অনেকাংশে দায়ী করা হয়। করোনা পরবর্তী সময়কালে তিনি আর্থিক বিষয়াদি সামলাতে হিমশিম খেয়েছিলেন। তবে সেই ইস্যুর সেখানেই শেষ হয়নি। নতুন করে আলোচনা এসেছে মেসিকে বকেয়া পরিশোধ নিয়ে স্প্যানিশ গণমাধ্যমের শিরোনামে। সদ্য সমাপ্ত মৌসুমের শুরুতেও দানি ওলমো এবং পাউ ভিক্টরদের লা লিগায় রেজিস্ট্রেশন করা নিয়ে ঝামেলায় পড়ে বার্সা। যা পরে আদালতের রায়ে মীমাংসা হয়।
এদিকে, সম্প্রতি বর্তমান ক্লাব ইন্টার মায়ামিতে রেকর্ড পারিশ্রমিক ইস্যুতে আলোচনায় আসেন মেসি। বার্তা সংস্থা এপি’র তথ্যমতে, মায়ামিতে মেসির বার্ষিক আয় দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৪ লাখ ৪৬ হাজার ৫৫৭ ডলারে, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ২৪৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা। যা এমএলএসের ২১টি দলে থাকা খেলোয়াড়দের মোট বেতনের চেয়েও বেশি। মেসির মতো উচ্চ বেতনধারী তারকা যে দলে থাকেন, স্বভাবতই তারা লিগেও খরচের দিক থেকে শীর্ষ সারিতেই থাকবে। ২৩ মে পর্যন্ত হিসাব মতে, এমএলএসে মেসির মায়ামি লিগের রেকর্ড সর্বোচ্চ ৪৬.৮ মিলিয়ন ডলার খরচ করে বছরে।
বর্তমানে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের খেলায় ব্যস্ত মেসি ও তার দল মায়ামি। প্রথমবার টুর্নামেন্টটিতে অংশ নিয়ে ফ্লোরিডার ক্লাবটি দ্বিতীয় রাউন্ডেও উঠেছে। শেষ ষোলোর আসন্ন ম্যাচে তারা লড়বে মেসির সাবেক ক্লাব পিএসজির বিপক্ষে। আজ (রোববার) বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় উভয় দল মুখোমুখি হবে। গ্রুপপর্বে ৩ ম্যাচে এক জয় ও দুই ড্র নিয়ে ৫ পয়েন্ট পায় মায়ামি, ‘এ’ গ্রুপে তাদের অবস্থান ছিল দুইয়ে।