অনলাইন ডেস্ক : ঢাকাই সিনেমার একসময়ের শীর্ষ নায়িকা শাবানা ৫ বছরের দীর্ঘ বিরতির পর দেশে ফিরেছেন। বর্তমানে তিনি রাজধানীর বারিধারা ডিওএইচএসের নিজ বাসায় অবস্থান করছেন। বহু বছর ধরে প্রবাসজীবনে অভ্যস্ত এই নায়িকা এবারও বেশিরভাগ সময় কাটাচ্ছেন অন্তরালে।
শাবানার দেশে শেষ আসা ছিল ২০২০ সালের জানুয়ারিতে। তখন তিনি জানিয়েছিলেন, সুযোগ ও অনুকূল পরিবেশ পেলে কিছু কাজ করতে চান। স্বামী ও প্রযোজক ওয়াহিদ সাদিকও জানিয়েছিলেন, পরিস্থিতি অনুকূল হলে শাবানার প্রযোজনায় ফেরা সম্ভব। কিন্তু সে ইচ্ছা পূরণ হয়নি, যুক্তরাষ্ট্রেই ফিরে যেতে হয়েছিল তাকে। তার আগে ২০১৭ সালেও তিনি দেশে এসেছিলেন।
ষাটের দশকে শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় শুরু করা শাবানা নায়িকা হিসেবে অভিষেক করেন নাদিমের বিপরীতে ‘চকোরী’ চলচ্চিত্রে। পরবর্তীতে তিনি হয়ে ওঠেন ঢাকাই সিনেমার সবচেয়ে জনপ্রিয় ও আলোচিত নায়িকাদের একজন।
তিন দশকের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে ২৯৯টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন শাবানা। এর মধ্যে ১৩০টি সিনেমায় তার বিপরীতে ছিলেন আলমগীর। এছাড়াও রাজ্জাক, জসিম, সোহেল রানা, ফারুকসহ বেশ কয়েকজন গুণী অভিনয়শিল্পীদের সঙ্গে জুটি বেঁধে উপহার দিয়েছে অসংখ্য জনপ্রিয় সিনেমা।
অভিনয়জীবনের ২৯৯টি ছবির মধ্যে ১৩০টিতে জুটি হয়ে অভিনয় করেন শাবানা ও আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত
শাবানা অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হচ্ছে- ‘ভাত দে’, ‘ছুটির ঘণ্টা’, ‘দোস্ত দুশমন’, ‘সত্য মিথ্যা’, ‘রাঙা ভাবী’, ‘অবুঝ মন’, ‘বাংলার নায়ক’, ‘ওরা এগারো জন’, ‘বিরোধ’, ‘আনাড়ি’, ‘সমাধান’, ‘জীবনসাথী’, ‘মাটির ঘর’, ‘লুটেরা’, ‘সখি তুমি কার’, ‘কেউ কারো নয়’, ‘পালাবি কোথায়’, ‘স্বামী কেন আসামি’, ‘দুঃসাহস’, ‘পুত্রবধূ’, ‘আক্রোশ’ ও ‘চাঁপা ডাঙার বউ’ প্রভৃতি।
১৯৮০ সালে আবদুল্লাহ আল মামুন পরিচালিত ‘সখি তুমি কার’ সিনেমার জন্য প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান শাবানা। এরপর অভিনয়ে অসামান্য অবদানের জন্য মোট নয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন গুণী এই অভিনেত্রী। এছাড়া বাচসাস পুরস্কার, আর্ট ফোরাম পুরস্কার, নাট্যসভা পুরস্কার, কামরুল হাসান পুরস্কার, নাট্য নিকেতন পুরস্কার, ললিতকলা একাডেমি ও কথক একাডেমি’সহ আরও অনেক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি।
স্বামী ওয়াহিদ সাদিকের সঙ্গে শাবানা। ছবি: সংগৃহীত
১৯৭৩ সালে সরকারি কর্মকর্তা ওয়াহিদ সাদিককে বিয়ে করেন শাবানা। তাদের চলচ্চিত্র প্রযোজনা সংস্থা এস এস প্রোডাকশন প্রতিষ্ঠা করেন ১৯৭৯ সালে। ওই বছর প্রথম সিনেমা নির্মাণ করেন ‘মাটির ঘর’। এটি পরিচালনা করেন প্রয়াত আজিজুর রহমান। এরপর একে একে ‘ছুটির ঘণ্টা’, ‘আমি সেই মেয়ে’, ‘স্বামী কেন আসামি’সহ স্থানীয় ও যৌথ প্রযোজনায় প্রায় দুই ডজন সিনেমা নির্মাণ করেন তারা। যার বেশিরভাগই ব্যবসা সফল।
১৯৯৭ সালে শাবানা হঠাৎ চলচ্চিত্র থেকে বিদায় দেন। ২০০০ সালে সপরিবারে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। শাবানা-সাদিক দম্পতির দুই মেয়ে ও এক ছেলে। তারা হলেন- সুমি, উর্মি ও নাহিন।