হেলাল উদ্দীন, বাগমারা : রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার নরদাশ ইউনিয়নের পারিলা কুঁড়োল বিলে মাছ চাষের অর্থ আত্মসাতের ভুয়া তথ্য প্রচারের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে কুঁড়োল বিলের পাড়েই এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
কুঁড়োল বিলের ক্যাশিয়ার ও বাগমারা উপজেলা মৎস্যজীবী দলের সভাপতি কছিমউদ্দিন জোয়ার্দারের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আবু হুরায়রার করা একটি পোস্টে মিথ্যা অপপ্রচার চালানোয় এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কছিমউদ্দিন জোয়ার্দার বলেন, “গতকাল মঙ্গলবার ‘Abu Huraira’ এবং ‘বাগমারা উপজেলার খবর’ নামের দুটি ফেসবুক আইডি থেকে আমার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন ও মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হয়েছে। এতে আমার সামাজিক ও রাজনৈতিক সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে। বিষয়টি জানার পর আমি প্রকল্পের সকল সদস্যকে অবগত করি। গত ৫ আগস্টের কিছুদিন পর নরদাশ ইউনিয়নের পারিলা গ্রামের মোস্তফা কবিরাজের ছেলে আবু হুরায়রা (২৫) আমার কাছে মোবাইল ফোনে মোটা অঙ্কের টাকা চাঁদা দাবি করে। আমি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে নামে।”
তিনি আরও জানান, কুঁড়োল বিল প্রকল্পে মোট ৩৮ জন সদস্য পাঁচ বছরের জন্য যৌথভাবে মাছ চাষ শুরু করেন। প্রত্যেকে ৭০ হাজার টাকা করে বিনিয়োগ করেন। দুই বছরের চাষ শেষে সদস্যদের ৭৫ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত ফেরত দেওয়া হয়, আর পরবর্তী চাষের জন্য কিছু লভ্যাংশ গচ্ছিত রাখা হয়।
কছিমউদ্দিন জোয়ার্দার অভিযোগ করে বলেন, “গত ৫ আগস্টের পর আবু হুরায়রা কথিত সমন্বয়ক পরিচয়ে প্রশাসনের সহায়তায় বিলের পানি ছেড়ে দেয়। পরে মাছ চাষ করতে নিষেধ করে এবং বিষ প্রয়োগের হুমকি দেয়। একবার বিষ প্রয়োগও করা হয়। ফলে বর্তমানে মাছ চাষ বন্ধ রয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ এখনও প্রায় আড়াই বছর বাকি, তাই জমির মালিকদের টাকা পরিশোধসহ নতুন করে মাছ চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
তিনি আরও বলেন, “আবু হুরায়রা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে যোগাযোগ আছে বলে হুমকি দেয় এবং এসব কথা প্রচার করে। আমি বিএনপির একজন কর্মী হিসেবে দলের ভাবমূর্তি রক্ষার জন্য আজ সংবাদ সম্মেলন করছি। আমাকে সামাজিকভাবে হেয় ও দলকে বিতর্কিত করতেই তার এসব অপপ্রচার।”
সংবাদ সম্মেলনে প্রকল্পের অন্যান্য সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, সুলতান হোসেন, হবিবর রহমান, রফিক উদ্দিন, রেজাউল করিম ও আব্দুস সালামসহ অধিকাংশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তারা কছিমউদ্দিন জোয়ার্দারের বক্তব্যের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন।
তারা বলেন, “আমরা প্রকল্পের মেয়াদ পর্যন্ত মাছ চাষ চালিয়ে যেতে চাই, কিন্তু আবু হুরায়রা প্রকল্পের সদস্য নন। তার বাবা সদস্য হলেও সে বারবার আমাদের কাজে বাধা দিচ্ছে এবং কৃষকদের ক্ষতিগ্রস্ত করছে। আমরা তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।”

