অনলাইন ডেস্ক : জুলাই সনদের বাস্তবায়ন আদেশ, গণভোটের কাঠামো এবং সংস্কার প্রক্রিয়া সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়ার আগে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এতে সই করবে না বলে জানিয়েছেন দলটির মূখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) রাজধানীর বাংলামোটরের অস্থায়ী কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা জুলাই ঘোষণাপত্র থেকে শিক্ষা নিয়ে সেখানে কিন্তু সাইন করতে চাইনি। আমরা বলেছিলাম আপনি যে আদেশটা দেবেন, এই আদেশের ড্রাফটটা আমাদেরকে আগে দেখাতে হবে। কিন্তু সরকার এই ড্রাফটটা না দেখিয়ে নিজস্ব ক্ষমতা বলে একটা আদেশ জারি করেছে। যিনি ড্রাফটটা করেছেন, তার মনে যদি বাংলাদেশের জনগণ থাকত, এই ধরনের ড্রাফট উনি তৈরি করতেন না। এ ধরনের আদেশ তিনি তৈরি করতেন না ‘
তিনি আরও বলেন, ‘এটা আদেশ হয়েছে কিন্তু একটা জনবিরোধী আদেশ হয়েছে। উনার মাথায় ছিল বিএনপির প্রেসক্রিপশন। কারা এই আদেশটা দিয়েছে, এটা বাংলাদেশের সব মানুষ জানে। উনি গত গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে এই পর্যন্ত গণঅভ্যুত্থানকে কীভাবে মুজিবীয় সংবিধানের ভেতরে ঢুকানো যায় এই প্রচেষ্টাই করে যাচ্ছেন। উনি আমাদের আইন উপদেষ্টা হিসেবে আছেন। উনি যদি জনগণকে মাথায় রাখতেন এই ধরনের আদেশের ড্রাফটিংটা করতেন না।’
নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘জুলাই সনদের বাস্তবায়ন আদেশ, গণভোট এবং সংস্কার প্রক্রিয়ায় নিয়ে এখনো অস্পষ্টতা রয়ে গেছে। অন্তর্বর্তী সরকার এসব বিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিলে আমরা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবো।’
গণভোটের জন্য সরকার যে চার-প্রশ্নের প্যাকেজ প্রস্তাব করেছে, তাতে নির্দিষ্টতার অভাব রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ থেকে ডি পর্যন্ত যেসব পয়েন্ট রয়েছে, সেগুলো স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে।’
এনসিপির এ নেতা অভিযোগ করেন, সরকার চলমান রাজনৈতিক সংকট সমাধানের বদলে তা আরও ঘনীভূত করছে। তিনি বলেন, ‘গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একই দিনে কীভাবে অনুষ্ঠিত হবে— এ নিয়ে এখনো কোনো স্পষ্ট রোডম্যাপ নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমত, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন আদেশ স্পষ্ট হতে হবে। দ্বিতীয়ত, সংস্কার প্রক্রিয়া ও গণভোটকে কোনো রাজনৈতিক দলের ভোটব্যাংক রক্ষার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। করলে জনগণ শেষ পর্যন্ত তা প্রত্যাখ্যান করবে।’
নতুন সনদ আইনি ভিত্তি পেলেও এখনো নৈতিক বৈধতা অর্জন করতে পারেনি বলে মন্তব্য করেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। দুই প্রধান দলের কারণে সরকারের সদিচ্ছা থাকার পর সনদ বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ তোলেন তিনি।
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ এখনো অস্পষ্ট, ফলে এটি কখনো পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়িত হবে কি না— তা অনিশ্চিত। গণভোটের প্রশ্নগুলো রাজনৈতিক দলের বিবেচনার ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এবং সেই দলগুলোর ভিন্নমতকে অযথা গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।’
এনসিপির এ নেতা বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে বিষয়টি এমন দাঁড়িয়েছে যে, ক্ষমতাসীনরা নিজেদের স্বার্থে এসব ধারা ব্যাখ্যা করে সেভাবেই বাস্তবায়ন করতে পারবে।’-ইত্তেফাক

