ঢাকা সকাল ১১:০৭। বুধবার ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ। ৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ।
  1. অপরাধ
  2. আইন আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. আবহাওয়া
  5. আরো
  6. এক্সক্লুসিভ নিউজ
  7. কবিতা
  8. কলাম
  9. কোভিড-১৯
  10. খুলনা
  11. খেলা
  12. চট্টগ্রাম
  13. চাকুরী
  14. চাঁপাইনবাবগঞ্জ
  15. জয়পুরহাট
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বাঁশির সুরে ৩৬ বছর

Asha Mony
মে ২৩, ২০২৩ ২:১২ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার: প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাঁশি ভর্তি ব্যাগ কাঁধে নিয়ে ছুটে চলেন ক্যাম্পাসের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সারাদিনই বিচরণ ঘটে তার। ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের কাছেও তিনি খুব পরিচিত মুখ। বাঁশির মূর্ছনায় মাতিয়ে তোলেন পুরো পরিবেশ। এভাবেই ক্যাম্পাসে সুর তুলে বাঁশি বিক্রি করেন গনেশ চন্দ্র দাস। ৩৬ বছর ধরে এই ক্যাম্পাসেই বাঁশি বিক্রি করেন তিনি। যা দিয়ে কোনো রকম খুঁড়িয়ে চলছে তার সংসার।
রাজশাহী নগরীর পুঠিয়া উপজেলার কান্দ্রা গ্রামের বাসিন্দা গনেশ চন্দ্র দাস। তিন ছেলে ও এক মেয়ের জনক তিনি। তিন ছেলেই বিবাহিত। তবে ১৫ বছর আগে চিকিৎসার অভাবে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় তার একমাত্র মেয়ে। পারিবারিক অস্বচ্ছলতার কারণে পড়াশোনা করার সুযোগ হয়নি তার। তারপরও নিজের তীব্র ইচ্ছায় পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন তিনি। কিন্তু অভাবের কারণে আর লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারেননি গনেশ চন্দ্র। শেষে ব্যক্তি জীবনের উত্থান পতনে বাঁশি বিক্রিকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন তিনি।
গনেশ চন্দ্র দাস বলেন, আমি এই ক্যাম্পাসে তিনযুগ ধরে বাঁশি বিক্রি করছি। এক সময় পেশা হিসেবে বাঁশি বিক্রি করেই আমার সংসার ভালোভাবে চলে যেত। কিন্তু এখন বয়সের ভারে নুইয়ে পড়েছি। আমার স্ত্রী খুবই অসুস্থ। স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য প্রায় ৬০ হাজার টাকা লাগবে। তার চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে পারি না। আগের মতো বাঁশি বিক্রি না হওয়ায় খুব অভাব-অনটন আর মানসিক অবসাদের মধ্যে দিয়ে দিন যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ৩৬ বছর আগে এই ক্যাম্পাসে বাঁশি বিক্রির আলাদা একটা হিড়িক ছিল। আমার ব্যবসার ছিল রমরমা অবস্থা। তখন মানুষের সঙ্গীতের প্রতি প্রবল আবেগ ও আস্থা ছিল। কিন্তু দিন যত গড়িয়েছে ততই মানুষের সঙ্গীতের প্রতি আবেগ-অনুভ‚তি কমে গিয়েছে। তাছাড়া যখন থেকে ইন্টারনেট আর মোবাইল সবার হাতে হাতে চলে এসেছে তখন থেকেই সঙ্গীতের প্রতি মানুষের আস্থা হারাতে শুরু হয়েছে। যা এখন প্রায় তলানিতে পৌঁছেছে। ভাটা পড়েছে আমার বাঁশি বিক্রিতেও।
এখন কেমন বাঁশি বিক্রি হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিদিন সকালে একটি ব্যাগে করে শতাধিক বাঁশি নিয়ে বের হই। কোনো দিন ৪-৫টি বাঁশি বিক্রি হয়, আবার কখনো একটি বাঁশিও বিক্রি হয় না, ফিরতে হয় খালি হাতেই।
বাঁশির দাম নিয়ে তিনি বলেন, বাঁশির বিভিন্ন গ্রেড আছে। সে অনুযায়ী বাঁশির দাম নিয়ে থাকি। কোনোটি ১৫০ টাকা, কোনোটি ২২০, আবার কোনোটি ৪০০ টাকা। তবে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকার বাঁশিও রয়েছে। বাঁশ কিনে নিজেই এই বাঁশিগুলো তৈরি করেন বলে জানান তিনি।
৩৬ বছর বাঁশি বিক্রি করে কাটিয়ে দিলেও ভবিষ্যতে কী করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যদিও এখন আর তেমন বাঁশি বিক্রি হয় না। তবে এই পেশাকে আমি ছাড়তে চাই না। আমৃত্যু এই পেশাতেই থাকতে চাই। কারণ ৩৬ বছর ধরে যে বাঁশির ওপর আমার জীবিকা নির্বাহ হয়ে আসছে, আশা করি বাকি দিনগুলোও তার ওপর দিয়েই কাটবে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
ঢাকা অফিসঃ ১৬৭/১২ টয়েনবি সার্কুলার রোড, মতিঝিল ঢাকা- ১০০০ আঞ্চলিক অফিস : উত্তর তেমুহনী সদর, লক্ষ্মীপুর ৩৭০০