নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঢাকা শনিবার। রাত ৮:২৪। ১৭ মে, ২০২৫।

কোরবানির জন্য রাজশাহী বিভাগে প্রস্তুত ৪৩ লাখ পশু

মে ১৭, ২০২৫ ১১:৪৩ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী বিভাগে এবার কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে ৪৩ লাখেরও বেশি পশু। বিভাগের ৮ জেলার চাহিদা মিটিয়ে এসব পশু যাবে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের নানা প্রান্তে। বিভাগজুড়েও বসবে তিন শতাধিক পশুহাট। কোরবানির আগে এখন পশুর পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারিরা। আর কয়েকদিনের মধ্যেই হাটগুলো জমে উঠবে বলে মনে করছেন তারা।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এবার সবচেয়ে বেশি কোরবানিযোগ্য পশু মজুদ আছে রাজশাহী বিভাগে। বিভাগের আট জেলায় ৪৩ লাখ ৪৪ হাজার ৪৯টি গরু, মহিষ, ছাগল ও অন্যান্য কোরবানিযোগ্য পশু আছে। আর সবচেয়ে কম ৩ লাখ ৮ হাজার ৫১৫টি পশু আছে সিলেট বিভাগে।

এদিকে আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজশাহী বিভাগের ৩০২টি হাটে কোরবানির পশু বেচাকেনা হবে বলে জানিয়েছে বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তর। এসব হাটের মধ্যে ১৬১টি স্থায়ী এবং ১৪১টি অস্থায়ী। বৃহস্পতিবার এক সরকারি তথ্য বিবরণীতে এ কথা জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, বিভাগজুড়ে হাটগুলোর স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে গঠন করা হয়েছে ২১৩টি ভেটেরিনারি মেডিক্যাল টিম। এসব টিম গাভির গর্ভ পরীক্ষা ও পশুর স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধানে কাজ করবে। এছাড়া হাটে জাল টাকা শনাক্তকরণের ব্যবস্থা থাকবে। থাকবে ব্যাংকের বুথও। পাশাপাশি হাটের ইজারাদারদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বসানো হবে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা।

আরও পড়ুনঃ  বাগমারায় স্বর্ণ ব্যবসায়ী দম্পতিকে কুপিয়ে বাসায় লুটপাট

খামারিরা বলছেন, গোখাদ্যের লাগামছাড়া দামের কারণে কোরবানির পশুর বাজারে প্রভাব পড়বে। দাম বেশি না হলে লোকসান হবে। যদিও প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, রাজশাহী বিভাগে এবারও কোরবানির পশুর চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি। তাই দাম খুব একটা বাড়বে না। সহনীয় একটা দাম থাকবে, এতে ক্রেতা-বিক্রেতা কারও সমস্যা হবে না।

রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিয়ান গ্রামের খামারি মিজানুর রহমান জানান, তার খামারে ছয়টি গরু আছে, এর মধ্যে চারটি কোরবানির উপযোগী। তিনি বলেন, ‘গরুগুলো চার মাস ধরে লালন-পালন করছি। কোরবানির দুই সপ্তাহ আগে থেকে বিক্রি শুরু করব। খামার থেকেই বিক্রির চেষ্টা করব, না হলে হাটে তুলব।’ তিনি বলেন, ‘সব খাবারই কিনে খাওয়াতে হয়। গতবারের তুলনায় এবার গোখাদ্যের দাম অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে ঘাস, ভুট্টা, খৈল ও ভুসির দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে। দাম বাড়ার এ ধারা রীতিমতো চিন্তার বিষয়।’

আরও পড়ুনঃ  কোহলির অবসর ও অধিনায়কত্ব নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য কোচের

একই উপজেলার খামারি সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘কোরবানির সময় পশুর দাম কিছুটা বেশি থাকে, এটাও একটা বাড়তি আশার জায়গা। আমাদের গ্রামে এখন প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই একটি বা দুটি গরু আছে। মানুষ মাঠে কাজ করার পাশাপাশি সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে গবাদিপশু পালন করেন। তবে বাইরে থেকে যদি গরু না আসে, তাহলে স্থানীয় খামারিরা ভালো দাম পাবেন।’

বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক ডা. আনন্দ কুমার অধিকারী বলেন, ‘এখন আর ভারতীয় গরু আসে না। পর্যাপ্ত গবাদিপশুর মজুদ আমাদের নিজেদেরই আছে। বাইরের গরু আসে না বলে দাম কিছুটা বাড়তে পারে। আবার চাহিদার তুলনায় মজুদ বেশি থাকায় দাম খুব বেশি বাড়বেও না। ফলে ধরে নেওয়া যায় যে বাজারে এমন দাম হবে যেটা ক্রেতা-বিক্রেতা সবার জন্যই ভাল হবে। কয়েকদিনের মধ্যেই হাটগুলো জমে উঠবে। বিভাগের সবচেয়ে বড় পশুহাট রাজশাহীর সিটিহাট। এটা ইতোমধ্যেই জমে উঠতে শুরু করেছে।

আরও পড়ুনঃ  কোথায় আত্মগোপনে ছিলেন মমতাজ, যা জানা গেল

এদিকে পশুর হাট ঘিরে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে হাটের ইজারাদার ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সভা করেছেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান। তিনি জানান, ‘প্রতিটি হাটে সিসি ক্যামেরা, জেনারেটর, স্বেচ্ছাসেবক রাখতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি পানি ও পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে হাট ইজারাদারদের। হাসিল নিয়ে যেন কোনো দ্বন্দ্ব না হয়, সে বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

মহাসড়কের পাশে কোনো পশুর হাট বসানো যাবে না এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে পুলিশ কমিশনার বলেন, জাল টাকা শনাক্তকরণ বুথ স্থাপনের জন্য ব্যাংকগুলোকেও অনুরোধ করা হয়েছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হাটকেন্দ্রিক পুলিশ কন্ট্রোল রুম স্থাপন ছাড়াও বাড়ানো হবে গোয়েন্দা নজরদারি। চুরি, ছিনতাই ও চাঁদাবাজি ঠেকাতে নিয়মিত টহলের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল থাকবে।’

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।