নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঢাকা মঙ্গলবার। রাত ৯:৩০। ১ জুলাই, ২০২৫।

চাঁদা না পেয়ে দুই সেনাসদস্যের বাড়িতে আগুন, লুটপাট

জুন ১০, ২০২৫ ৪:৫৯
Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার, পুঠিয়া : রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় দুই সেনা সদস্যের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (৯ জুন) দুপুরে পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়নের হাতিনাদা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ‘পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে না পাওয়ায়’ এই হামলার ঘটনা ঘটে বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা।

ভুক্তভোগী দুই সেনাসদস্য হলেন- কক্সবাজারের রামু সেনানিবাসে কর্মরত তরিকুল ইসলাম এবং রাজশাহী সেনানিবাসে কর্মরত মো. আল-আমিন। তারা দুজন চাচাত ভাই। হাতিনাদা গ্রামে একজনের বাড়ি থেকে অন্যজনের বাড়ির দূরত্ব ৩০০ মিটার।

অভিযুক্ত ব্যক্তি রফিকুল ইসলাম রফিক, তিনি ঘটনার পর থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন। এ ঘটনায় তাকে প্রধান আসামি করে পুঠিয়া থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলায় মোট ১০ জন আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে, অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছেন আরও কিছু ব্যক্তি। সেনা সদস্য তরিকুল ইসলামের বাবা আবদুল হান্নান বাদী হয়ে থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন।

আরও পড়ুনঃ  রাজশাহীতে বিশেষ অভিযানে ১ জনসহ মোট গ্রেপ্তার ৭

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার দুপুরে রফিকুল ইসলাম রফিক তার লোকজন নিয়ে সেনা সদস্য তরিকুল ইসলামের বাড়িতে হামলা চালান। ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাটের পর বাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরে তারা চলে যাওয়ার সময় সেনা সদস্য আল-আমিনের বাড়ির কয়েকটি জানালার কাঁচ ভেঙে যান। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তরিকুলের বাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণ করেন।

তরিকুল ইসলামের পরিবারের অভিযোগ, তরিকুলের বাবা আবদুল হান্নান আওয়ামী লীগকে ভোট দেন। তবে মিছিল-মিটিংয়ে যান না। তিনি আওয়ামী লীগের সমর্থক বলে বানেশ্বর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি এবং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রফিকুল ইসলাম রফিক তাদের পরিবারের কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। চাঁদা না পেয়ে তিনি ক্ষুব্ধ ছিলেন। সোমবার দুপুরে এলাকার একটি চায়ের দোকানে আবদুল হান্নানের আরেক ছেলে মো. তুষার তাঁর মামাতো ভাইকে নিয়ে হাসাহাসি করছিলেন।

আরও পড়ুনঃ  রুয়েট ক্যাম্পাসে চাকরির হাতছানি: তরুণ প্রকৌশলীদের নিয়ে জমজমাট ক্যারিয়ার ফেয়ার

এটা দেখেই রফিকুল ইসলাম ধারণা করেন, তাকে কটাক্ষ করে হাসাহাসি করা হচ্ছে। এরপর তিনি তুষারকে মারধর করেন। তুষার বাড়িতে এসে বিষয়টি জানালে তার বাবা হান্নান রফিকুল ইসলামকে উদ্দেশ্য করে উচ্চস্বরে কিছু কথা বলেন। এর কিছুক্ষণ পরেই রফিকুল ইসলাম তার লোকজন নিয়ে হান্নানের বাড়িতে হামলা করেন। প্রাণভয়ে পরিবারের সদস্যরা তখন পালিয়ে যান।

সেনাসদস্য তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘রফিকুল আমার বাড়িতে এসে একাধিকবার চাঁদা দাবি করেছেন। চাঁদা না দেওয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ ছিলেন। হামলা করার একটা সুযোগ খুঁজছিলেন। দোকানে আমার ভাইকে মারধরের পর তিনি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাড়িতে হামলা চালান।’

তরিকুলের বাবা আব্দুল হান্নান বলেন, ‘রফিকুলের সঙ্গে আমাদের কোনো ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই। তবুও কেন আমার বাড়িতে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগানো হলো? আমার ছেলে সেনাবাহিনীতে চাকরি করে। ছুটিতে সে বাড়িতেই ছিল। তাকে নিয়ে আমরা চাতালে লুকিয়ে প্রাণ বাঁচাই। রফিকুল গালাগালি করেন এবং বলেন, তরিকুলকেও ধরে “সাইজ” করবেন।’

আরও পড়ুনঃ  দিনের শুরুতেই তাইজুল-রানার ৩ শিকার

ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ও বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম রফিক আত্মগোপনে রয়েছেন। তাঁর মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তাই তাঁর সঙ্গে কথা বলা যায়নি।

পুঠিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দুলাল হোসেন বলেন, ‘সেনাসদস্য তরিকুল ইসলামের বাবা আবদুল হান্নান বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলায় চাঁদা দাবির কথা বলা নেই। কথা কাটাকাটির জেরে হামলা বলে এজাহারে বলা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম। তিনিসহ অন্য আসামিরা পলাতক। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।