স্টাফ রিপোর্টার : নানা আয়োজনে টেস্ট ক্রিকেটের ২৫ বছর উদযাপন করছে রাজশাহী। রোববার দিনভর রাজশাহী বিভাগীয় স্টেডিয়ামে বর্ণাঢ্য আয়োজনে চলছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের টেস্ট মর্যাদা প্রাপ্তির এই রজতজয়ন্তী উদযাপন। ভবিষ্যত প্রজন্মের ক্রিকেটারদের অনুপ্রাণিত করতে আয়োজন করা হয়েছে অনূর্ধ্ব-১২ ক্রিকেট উৎসব, পেসার ও স্পিন হান্ট, ছবি আঁকার প্রতিযোগিতা।
টেস্ট ক্রিকেটের ঐতিহাসিক মুহূর্ত নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে দেখানো হয় ভিডিও ও ছবি। বিসিবির ভাষ্য, কেন্দ্র থেকে প্রান্তিকে ক্রিকেটকে ছড়িয়ে দিতেই এ আয়োজন।
২০০০ সালের জুন মাসে ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণ টেস্ট খেলার মর্যাদা পেয়েছিল বাংলাদেশ। সেই টেস্ট মর্যাদা প্রাপ্তির ২৫ বছর স্মরণীয় করে রাখতে ৭ বিভাগে নানা আয়োজনে উৎসব করছে বিসিবি। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার সকালে রাজশাহী বিভাগীয় স্টেডিয়ামে আয়োজনের উদ্বোধন করেন বিসিবি সভাপতি ও বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে প্রথম সেঞ্চুরি করা ব্যাটার আমিনুল ইসলাম বুলবুল। তিনি বলেন, ক্রিকেটকে সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে এ আয়োজন। রাজশাহীসহ ৭ বিভাগীয় স্টেডিয়ামে এ উৎসব হবে।
রাজশাহীর স্টেডিয়াম নিয়ে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘এখানে যে গ্রাউন্ড ফিল্ড আছে, এমন গ্রাউন্ড ফিল্ড অনেক দেশের নেই। এত সুন্দর উইকেট নেই। এখন রাজশাহীতে প্রথম শ্রেনীর খেলা হয়। আমার যেটা করবো রাজশাহী বিভাগের মধ্যে প্রিমিয়াল লীগ চালু করবো। ক্রিকেট এ্যক্টিভিটি আরো বাড়াবো। ট্রেনিং, কোচিং ও অম্পোয়ারিং প্রোগ্রম বাড়াবো। বয়স ভিত্তিক খেলা আমার দুই দিনের জন্য করেবা।’
গ্রাইন্ড ও বিপিএল চেয়ারম্যান মাহবুব আনাম এ সময় বলেন, ‘রাজশাহীর এ মাঠে অন্তর্জাতিক ম্যাচ করার জন্য কিছু ফ্যাসিলিটি উন্নয়ন করা দরকার। সেই ব্যপারে আমার ন্যাশনাল স্পোর্টস কাউন্সিলের সাথে আলাপ আলোচনা করেছি।প্রস্তবনা দিয়েছি। আগামী বছর বড় আন্তর্জাতিক বা বিপিএলের খেলা আমার দেখতে পাবো আশা করি।’
এ সময় তিনি, প্রিমিয়ার লিগ, বিপিএল, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের খেলা বেশি বেশি অনুষ্ঠিত করার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উদ্বোধনের পর টেস্টের সেই সাদা জার্সি গায়ে চাপিয়ে মাঠের ক্রিকেটে অংশ নেন অনূর্ধ্ব ১২ এর খুদে ক্রিকেটাররা। মাঠের দুটি অংশে ৬ ওভারের খেলায় ছেলেদের ৬ টি ও মেয়েদের ৬ টি মোট ১২টি দল অংশ নেয়। প্রতি দলের হয়ে ৬ জন ক্রিকেটার মাঠে দক্ষতা আর নৈপুণ্য দেখান। স্কুলের পর্যায়ের ক্রিকেটাররা লীগ ভিত্তিক এই ক্রিকেট উৎসবে অংশ নিয়ে দারুন উচ্ছ্বসিত।
খুদে খেলোয়াড় রাফান হোসেন বলেন, ‘এখাবে খেলতে পেরে বেশ ভালো লাগছে। আমি টেস্ট প্রথম সেঞ্চুরি করা ব্যাটার আমিনুল ইসলাম বুলবুল স্যারের সাথে হাত মিলিয়েছি। খুব বড় পাওয়া মনে হচ্ছে আমার কাছে।’
অভিভাবক আহম্মেদে আলী বলেন, ‘রাজশাহী থেকে আগে নিয়মিত জাতীয় দলের খেলোয়াড় ছিলো। এখনো আছে। তবে আবারো রাজশাহী ছেলেরা নেতৃত্ব দিতে পারবে, যদি এমন ভাবে তাদরে খেলার সুযোগ করে দেয়। ’
স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য হয় পেসার ও স্পিনার হান্ট। বলের লাইন লেন্থ ঠিক রেখে গতির ঝড় তোলার পাশাপাশি জাদুকরি ঘূর্ণির পরীক্ষা দেন অংশগ্রহণকারীরা।
এদিকে টেস্ট ক্রিকেটের ঐতিহাসিক মুহূর্তগুলোর ছবির প্রদর্শনী ও সেই ছবি আঁকার জন্য হয়েছে প্রতিযোগিতার। দর্শক অভিভাবকদের জন্য ছিল হিট দ্য স্টাম্প চ্যালেঞ্জ। কমেন্ট্রি বুথে টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক মুহূর্তের ভিডিও দেখে ধারাভাষ্য দিয়েছেন কেউ কেউ। আনেকেই ‘গুড লাক উইশ’ বোর্ডে বিশেষ বার্তা ও শুভকামনা জানিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে। বিভিন্ন ইভেন্টে জয়ীদের মধ্যে সনদ ও মেডেল প্রদান করে বিসিবি।