অনলাইন ডেস্ক : ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ করেছে চীন। এই হামলার নিন্দা জানিয়ে বেইজিং বলেছে, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি করছে যুক্তরাষ্ট্র।
রোববার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বিবৃতিতে অবিলম্বে ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘ইরানে মার্কিন হামলা এবং আইএইএর নিরাপত্তা তত্ত্বাবধানে থাকা পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে বোমাবর্ষণের কঠোর নিন্দা জানায় চীন।”
বিবৃতিতে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘‘যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের কার্যকলাপ জাতিসংঘ সনদের উদ্দেশ্য, নীতিমালা এবং আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন করেছে। এই হামলার কারণে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বেড়েছে।’’
চীন সব পক্ষ—বিশেষ করে ইসরায়েলকে দ্রুত যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে, বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বেইজিং বলেছে, ‘‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে একসাথে কাজ করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে চীন; যাতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি এবং স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারে যৌথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়।’’
শনিবার রাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে বলে জানান। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, তেহরান শান্তিতে রাজি না হলে আরও বিধ্বংসী হামলার মুখোমুখি হবে।
এদিকে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়া। একই সঙ্গে ইরানে মার্কিন এই হামলাকে ‘‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’’ ও আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন বলেও অভিহিত করেছে মস্কো।
রোববার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘যেকোনও যুক্তিই দেখানো হোক না কেন, একটি সার্বভৌম দেশের ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমা হামলা চালানোর মতো এই দায়িত্বজ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘ সনদ এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবনার স্পষ্ট লঙ্ঘন।’’
রুশ লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপিআর) নেতা লিওনিদ স্লুটস্কি বলেছেন, এই হামলার কোনও সামরিক কারণ ছিল না এবং আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় এর কোনও বৈধতা নেই।
রাশিয়ার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ স্টেট দুমার ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স কমিটির প্রধান লিওনিদ বলেন, এই উত্তেজনার ফলাফল শুধু এই অঞ্চলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। ওয়াশিংটন জানে, তেহরানের জবাব অবধারিত। এসব কিছু সংঘাতের চক্রকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এবং তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে।
সূত্র: এএফপি, বিবিসি।