নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঢাকা সোমবার। রাত ৩:২২। ৭ জুলাই, ২০২৫।

সৎ উদ্দেশ্য থাকলে পিআর পদ্ধতি নি‌য়ে কারো আপত্তি থাকবে না

জুলাই ৬, ২০২৫ ৩:১৪
Link Copied!

অনলাইন ডেস্ক : পিআর পদ্ধতির নির্বাচনেই জনগণের সরকার ও সংসদ গঠিত হয় উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, প্রচলতি নিয়মে কোনো দল ৫১ শতাংশ ভোট পেয়ে সরকার গঠন করে। অপরদিকে অন্য দল ৪৯ শতাংশ ভোট পেলেও তার কোনো মূল্যায়ন হয় না। কিন্তু পিআর পদ্ধতির নির্বাচনে প্রতিটি ভোটের মূল্যায়ন হয়।

রোববার (৬ জুলাই) আশুরা উপলক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মুজিবুর রহমান ব‌লেন, একক কোনো দল স্বৈরাচার হয়ে উঠতে পারে না, ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে পারে না। ক্ষমতায় বসতে পারলে ফ্যাসিবাদ কায়েমের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয়ে কেউ কেউ পিআর পদ্ধতির নির্বাচন যেতে রাজি হচ্ছে না। সৎ উদ্দেশ্য থাকলে পিআর পদ্ধতির নির্বাচনে কারও আপত্তি থাকবে না।

তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, দখলবাজ, নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে যুদ্ধ করতে হবে। কারা সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে জনগণ তা জানে। জুলাই চেতনা বিনষ্টের চেষ্টা করলে ছাত্র-জনতা আবারো রাস্তায় নামবে। ছাত্র-জনতা রাস্তায় নামলে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, দখলবাজ, নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের সুযোগ থাকবে না। তাই মব সন্ত্রাস ছেড়ে নতুন বাংলাদেশ গড়তে তিনি সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানান।

আরও পড়ুনঃ  বাংলাদেশে ‘এক কিডনির গ্রাম’, দালাল চক্রের ফাঁদে নিঃস্ব দরিদ্র মানুষ

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ব‌লেন, আশুরার শিক্ষা হচ্ছে খেলাফত প্রতিষ্ঠা করা। ইসলাম থাকলে জাতীয়তাবাদ থাকতে পারে না, জাতীয়তাবাদ থাকলে কখনো ইসলামের বিধান প্রতিষ্ঠা হবে না। জাতীয়তাবাদ হচ্ছে জাতিসত্তার ওপর ভিত্তি করে বিচার করা। এর অর্থ হচ্ছে কেউ যদি জাতীয়তাবাদ স্বীকার করে, মেনে নেয় তাহলে সেই দলের ব্যক্তি অপরাধ করলেও তাকে শাস্তি দেওয়া হবে না। অথচ মহানবী (সা.) বলেছেন, আমার মেয়ে ফাতেমাও যদি চুরি করতো তবে আমি তার হাত কেটে দিতাম। এটাই ইসলামের বিধান।

তিনি বলেন, কারণ, ইসলামের বিধান সব মানুষের জন্য সমান। ইসলাম ব্যতিত সব ব্যবস্থায় বৈষম্য বিদ্যমান। কেবলমাত্র ইসলামী ব্যবস্থায় কোনো বৈষম্য নেই।

সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ইসলামী খেলাফত ব্যবস্থায় পরিবারতন্ত্র কিংবা রাজতন্ত্রের কোনো সুযোগ নেই। পরিবারতন্ত্রের কারণেই স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও মানুষ শোষণের শিকার হয়েছে। রাসূল (সা) বলেছেন, অত্যাচারী শাসকের সামনে সত্য বলা জেহাদ। ছাত্র-জনতা অত্যাচারী স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে শাহাদাতের তামান্নায় রাস্তা নেমে এসেছিল। ৩৬ জুলাইয়ের প্রতিদিনই লাখ-লাখ মানুষ রাস্তায় নেমেছিল। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে হাসিনা দলবল নিয়ে পালিয়ে গেছে। ছাত্র-জনতা শুধু একটি নির্বাচনের জন্য জীবন ও রক্ত দেয়নি। জুলাইয়ে চেতনা ছিল বৈষম্যহীন, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার একটি বাংলাদেশ।

আরও পড়ুনঃ  সদ্য যোগদানকৃত কনস্টেবলদের ওরিয়েন্টেশন কোর্সের ১৫তম ব্যাচের শুভ উদ্বোধন

তি‌নি আরও ব‌লেন, জুলাই চেতনা বাস্তবায়নের জন্য রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরের সংস্কার করতে হবে, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিটি খুন, গুম, হামলা-মামলা, জুলুম-নির্যাতনের সঙ্গে জড়িতদের বিচার করতে হবে। আওয়ামী লীগের অপশাসনের ১৫ বছরের প্রতিদিনই কারবালা দিনের মতো ভয়াবহ ছিল।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির বলেন, সংস্কার ও গণহত্যার বিচারের পাশাপাশি জনর্দুভোগ লাঘবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিতে হবে। এরপর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্ধারিত সময়ে পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিয়ে ভোটের যথাযথ মূল্যায়ন করে জনগণের সরকার ও সংসদ গঠন করতে হবে।

বিদ্যমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলার অবনতি জন্য একটি দল সরাসরি দায়ি। তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতার পরিবর্তে অপরাধীদের থানা থেকে ছিনিয়ে নেয়, থানা ভাঙচুর করে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে চরম নৈরাজ্যের সৃষ্টি করছে। অপরদিকে ছাত্র-জনতার প্রত্যাশিত নতুন বাংলাদেশ গড়তে জামায়াতে ইসলামী সহ বিভিন্ন শান্তিপ্রিয় রাজনৈতিক দল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সংস্কার কাজে সহযোগিতার চেষ্টা করছে।

আরও পড়ুনঃ  রাবিতে শিক্ষার্থীদের বাঁধায় রক্ষা পেল দুটি গাছ

তারা নিজেদের মতো করে সংস্কার চায়। সংস্কারের নামে নিজেদের দলীয় কুসংস্কার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা পরিহার করে নতুন বাংলাদেশ গড়তে জনগণের প্রত্যাশিত রাজনীতি করতে তিনি সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠা‌নে কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ড. আব্দুল মান্নানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য দেন- জামা‌য়ে‌তে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর, ঢাকা-৮ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি, ঢাকা-৯ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী কবির আহমেদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মো. শামছুর রহমান প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক নুর নবী মানিক, সৈয়দ সিরাজুল হক, শাহীন আহমেদ খান, সহকারী প্রচার সম্পাদক আবদুস সাত্তার সুমন, মহানগরীর সহকারী অফিস সেক্রেটারি মো. মুজিবুর রহমান, চক বাজার দক্ষিণ থানা আমীর মাওলানা আনিসুর রহমানসহ মহানগরীর ও বিভিন্ন থানা দায়িত্বশীল নেতারা।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।