স্টাফ রিপোর্টার : ‘পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশে দল ছিল একটাই, আর ভোটার ছিলেন একজন। ওই একদলীয় শাসনেই দেশকে গভীর সংকটে ফেলেছে শেখ হাসিনার সরকার।’—এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শফিকুল হক মিলন।
শুক্রবার বিকেলে রাজশাহীর পবা উপজেলার পশ্চিম হরিপুর মাঠে পবা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত দোয়া ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এই সভার আয়োজন করা হয় শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রুহের মাগফিরাত কামনায়।
মিলন বলেন, অতীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে একদলীয় শাসন কায়েম করেছিলেন। সেখান থেকে দেশকে রক্ষা করে শহীদ জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন এবং দেশের উন্নয়নের জন্য ১৯ দফা দেন। সেই ১৯ দফা কর্মসূচি এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনুসরণযোগ্য উন্নয়নমডেল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, দেশ আবার সেই পুরোনো একনায়কতান্ত্রিক অবস্থায় ফিরে গেছে। রাষ্ট্রের সব যন্ত্র অচল হয়ে পড়েছে। সর্বত্র দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও দমননীতির রাজত্ব চলছে। মানুষ তার অধিকার হারিয়েছে। এই অবস্থার অবসানে বিএনপি দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছে এবং সেই আন্দোলন এখনো চলমান। কারণ দেশে এখনো জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার গঠিত হয়নি।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রে এই অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ৩১ দফা কর্মসূচি দিয়েছেন। এই ৩১ দফা বাস্তবায়ন হলে আর কোনো সংস্কারের প্রয়োজন থাকবে না বলেও জানান তিনি। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সংস্কার সংস্কার না করে, তালবাহানা না করে আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যেই নির্বাচন দিন।’
বক্তব্যে মিলন আরও বলেন, ‘এই দেশ নিয়ে ছিনিমিনি খেলার বিরুদ্ধে আন্দোলনে শত শত ছাত্র-জনতা প্রাণ দিয়েছে, হাজার হাজার মানুষ আহত ও পঙ্গু হয়েছে। বিএনপি ও তার অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছে, কেউ খুন, কেউ গুম হয়েছে, কারো বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে মিথ্যা মামলা।’ এসব ত্যাগের মূল্য দিয়ে হলেও ঘোষিত সময়ের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। সেইসাথে যেকোনো নতুন ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় নেতাকর্মীদের সজাগ থাকারও আহ্বান জানান তিনি।
আলোচনা সভা শেষে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পবা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মামুন আক্তারুজ্জামান। সভা পরিচালনায় ছিলেন হড়গ্রাম ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রহমতুল্লাহ মিঠু এবং যুগ্ম আহ্বায়ক রুবেল ইসলাম।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন পবা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব সহকারী অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ ও আব্দুস সালাম মাস্টার, মহানগর বিএনপির ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামীম রেজা, হরিয়ান ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক মজিবুর রহমান ও সদস্য সচিব বাদশা মিয়া, পারিলা ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক প্রভাষক রেজাউল করিম, বিএনপি নেতা রমজান আলী, হড়গ্রাম ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক নাজিম উদ্দিন ও সদস্য সচিব শাহীন রেজা সান্নান।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলা যুবদলের সদস্য সাহেব জাদা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাসুদুর রহমান লিটন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরফিন কনক, পবা উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেল রানা, জেলা মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আলহাজ বকুল হোসেন, নওহাটা পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক সোহেল রহমানসহ বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের অন্যান্য নেতাকর্মীরা।