নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বাংলাদেশ বৃহস্পতিবার। সন্ধ্যা ৬:১৮। ২৮ আগস্ট, ২০২৫।

বাবার সামনে এক ভাইয়ের চোখ তুলে নিল অন্য দুই ভাই

আগস্ট ২৮, ২০২৫ ১০:০৬
Link Copied!

অনলাইন ডেস্ক : গচ্ছিত টাকা ও স্বর্ণালংকার ফেরত চাইতে গিয়ে বাবার সামনেই দুই ভাইয়ের হাতে চরম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন আরেক ভাই। নির্মমভাবে তার দুই চোখ উপড়ে ফেলা হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার (২২ আগস্ট) গভীর রাতে বরিশালের মুলাদী উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের সাহেবেরচর গ্রামের ব্যাপারী বাড়িতে। তবে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয় শনিবার রাতে। এরপরই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

বর্তমানে গুরুতর আহত অবস্থায় ভুক্তভোগী রিপন ব্যাপারী (৩৬) বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। অভিযুক্তরা হলেন— ভুক্তভোগীর মেজ ভাই রোকন ব্যাপারী ও ছোট ভাই স্বপন ব্যাপারী।

বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার শরীফুল ইসলাম বলেন, পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরেই এই ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে। আশেদ ব্যাপারীর দুই ছেলে মিলে সেজ ছেলে রিপনের দুই চোখ উৎপাটন করেছে। আমরা এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে পুলিশ যোগাযোগ করেছে। অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুনঃ  অনুমোদন হলো জকসুর পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা

স্থানীয়রা জানায়, রিপন দীর্ঘদিন ঢাকায় বসবাস করতেন এবং বিভিন্ন সময়ে চুরি, ছিনতাই ও প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল টাকা ও স্বর্ণালংকার সংগ্রহ করেছেন। তিনি প্রায় ৩৫ লাখ টাকা ও ২০ ভরি স্বর্ণ মেজ ভাই রোকনের কাছে গচ্ছিত রেখেছেন বলে দাবি করে আসছিলেন।

প্রায় তিন মাস আগে রিপন সেই টাকা ও স্বর্ণ ফেরত চান। কিন্তু রোকন অস্বীকার করলে তাদের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। এ নিয়ে এলাকায় একাধিকবার সালিস বৈঠকও হয়, তবে সমাধান আসেনি।

আরও পড়ুনঃ  তানোরে সাংবাদিকদের সাথে জামায়াত প্রার্থীর মতবিনিময় সভা

গত শুক্রবার বিকেলে রিপন ঢাকা থেকে বাড়ি আসেন। সন্ধ্যায় ফের টাকা চাইলে দুই ভাইয়ের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। রাত ১১টার দিকে আবার ঝগড়া শুরু হয়। তখন বাবা আশেদ ব্যাপারী ক্ষিপ্ত হয়ে রিপনকে মারধর করেন এবং চোখ উৎপাটনের নির্দেশ দেন। বাবার নির্দেশে রোকন ও স্বপন মিলে রিপনকে অমানবিক নির্যাতন করে চোখ উপড়ে ফেলে বাবার হাতে তুলে দেয়।

রিপনের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে আশুকাঠি হাসপাতালে, পরে শের-ই-বাংলা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। ঘটনার পর থেকে আশেদ ব্যাপারী, রোকন ও স্বপন পলাতক রয়েছেন।

রিপনের ছেলে আব্দুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, আমার বাবার গচ্ছিত ৩৫ লাখ টাকা আর ২০ ভরি স্বর্ণ আত্মসাৎ করার জন্যই আমার চাচারা বাবাকে অন্ধ করে দিয়েছে। আগে অনেকবার মারধর করেছে, এবার চোখই তুলে নিল।

আরও পড়ুনঃ  অপরাধ দমন ও মাদক নির্মূলে কাজ করে যাচ্ছে র‍্যাব : অধিনায়ক পারভেজ

বড় ভাই খোকন ব্যাপারী বলেন, বাবার সামনেই এই ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে। বাবা নিজে নির্দেশ না দিলে রোকন আর স্বপন এতটা করতে পারত না।

মুলাদী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ বলেন, ঘটনার পর অভিযুক্তরা পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। তবে তদন্ত চলছে।

থানা সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী রিপনের বিরুদ্ধেও ঢাকার রমনা থানায় চুরি-ছিনতাইয়ের ৮টি মামলা এবং মুলাদী থানায় হত্যা মামলাসহ অন্তত ২০টি মামলা রয়েছে।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।