স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীতে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্ট এবং বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্ট রাজশাহী জেলা শাখার উদ্যোগে এক আলোচনা ও পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় নগরীর বরেন্দ্র কলেজের সভাকক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়। সভায় ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষা, সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষা, আসন্ন দুর্গাপূজা এবং সংগঠনের কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন রাজশাহী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এবং বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অধ্যাপক বিশ্বনাথ সরকার।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। এখানে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের সমান অধিকার রয়েছে। গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত হলে সকল সম্প্রদায় স্বাধীনভাবে তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করতে পারবে। এজন্য জাতীয় ঐক্য দরকার। আমরা চাই, কেউ বৈষম্যের শিকার না হোক, সবাই শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করুক। ধর্মীয় সম্প্রীতি আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্য, তা রক্ষা করতে হবে।”
অধ্যাপক বিশ্বনাথ সরকার আরও বলেন,“বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা চলছে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা, মর্যাদা এবং অধিকার রক্ষার জন্য আমরা সব সময় সোচ্চার থাকব।”
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্ট রাজশাহী জেলা শাখারস দস্য সচিব সেন্টু কুমার সাহার সঞ্চালনায় সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক রমেশ কুমার দত্ত।
তিনি বলেন,“বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি বিশ্বের কাছে উদাহরণ। কিছু অপশক্তি এ সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা করছে। আমরা তা হতে দেব না। ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের সময় নিরাপত্তা জোরদার করতে প্রশাসনকে অনুরোধ করছি।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্ট রাজশাহী জেলা আহ্বায়ক অধ্যক্ষ সুকুমার সরকার।
তিনি বলেন,“এই ফ্রন্টের মূল লক্ষ্য হলো দেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষা, সমান মর্যাদা নিশ্চিত করা এবং সবার মাঝে সম্প্রীতির বন্ধন দৃঢ় করা। আমরা বিশ্বাস করি, সমতার ভিত্তিতেই প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আনন্দ কুমার মন্ডল, রাজশাহী মহানগর সভাপতি অচিন্ত্য কুমার বিশ্বাস এবং সাধারণ সম্পাদক অশোক কুমার সাহা।
তাঁরা বলেন, আসন্ন দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা অপরিহার্য। সেই সঙ্গে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তাঁরা।
সভায় আসন্ন দুর্গাপূজার নিরাপত্তা, সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক অংশগ্রহণ বৃদ্ধি, সংগঠনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং তরুণ প্রজন্মকে সম্প্রীতির চেতনায় উদ্বুদ্ধ করার প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। পাশাপাশি, মিথ্যা তথ্য বা গুজব ছড়িয়ে সহিংসতা উসকে দেওয়ার বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা তৈরির ওপর জোর দেওয়া হয়।