হেলাল উদ্দীন, বাগমারা : রাজশাহীর বাগমারায় জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও উপজেলা চালকল মালিক কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান চঞ্চলকে শারীরিক নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়ে উপজেলা কৃষকদল কর্তৃক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। এ সময় তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজনদের শাস্তি এবং অপপ্রচার বন্ধের দাবি জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় বাগমারা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে কৃষকদলের নেতাকর্মীরা জানান, গত ৭ সেপ্টেম্বর উপজেলার ভবানীগঞ্জ সরকারি খাদ্য গোডাউনে নিম্নমানের চালের সন্ধান পাওয়ার পর সেখানকার চাল পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সরকারি কর্মকর্তাদের উপস্থিতি ঘটে। এ ঘটনায় চালকল মালিকদের দায়ী করে একটি মহল থেকে অপপ্রচার শুরু হয়। এরপর মনিরুজ্জামান চঞ্চল গোডাউন পরিদর্শনে যান, যেখানে ভবানীগঞ্জ পৌরসভা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেকের উপস্থিতিতে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব ডিএম শাহীন এবং জাতীয়তাবাদী তাঁতীদলের আহ্বায়ক মামুনুর রশীদ মামুন তাকে পরিকল্পিতভাবে লাঞ্ছিত করেন।
সংবাদ সম্মেলনে মনিরুজ্জামান চঞ্চল লিখিত বক্তব্যে বলেন, “এই ঘটনা কেবল আমার ব্যক্তিগত নির্যাতন নয়, বরং চালকল শিল্পের মালিকদের বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্রের অংশ। আমরা এর প্রতিবাদে দলীয় স্তর থেকে প্রশাসনের কাছে বিচার দাবি করছি।” তিনি আরও জানান, লাঞ্ছনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়ায় উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। গত ৯ সেপ্টেম্বর বিএনপি, স্বেচ্ছাসেবক দল ও তাঁতীদলের পক্ষ থেকে একটি সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে, যদিও তারা ধাক্কাধাক্কির ঘটনা স্বীকার করেছে।
উল্লেখ্য, মামুনুর রশীদ মামুন ও ডিএম শাহীন শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তারা দাবি করেছেন, ঘটনাটি ছিল সাধারণ তর্কাতর্কির মধ্যে সীমাবদ্ধ।
মনিরুজ্জামান চঞ্চল ছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, মাষ্টার জিল্লুর রহমান ও সান্টু মোল্লাহ যুগ্ম আহবায়ক উপজেলা কৃষক দল, দ্বীপপুর ইউনিয়ন কৃষক দলের সভাপতি সেকেন্দার আলী, ঝিকরা ইউনিয়ন কৃষক দলের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, যোগীপাড়া ইউনিয়ন কৃষক দলের সভাপতি মোজাফফর আলী, গনিপুর ইউনিয়ন কৃষক দলের সভাপতি আফজাল হোসেন, মাড়িয়া ইউনিয়ন কৃষক দলের সভাপতি দিপু মেম্বার, যোগীপাড়া ইউনিয়ন কৃষক দলের সাধারন সম্পাদক আলম সাহেব প্রমুখ।
বক্তারা তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তি এবং অপপ্রচার বন্ধের দাবি জানিয়ে বলেন, “এমন ঘটনা কৃষক সম্প্রদায়ের মর্যাদাকে আঘাত করে। আমরা বিএনপি, স্বেচ্ছাসেবক দল, তাঁতীদলের শীর্ষ নেতাদের কাছেও বিচার দাবি করছি।”
এ সময় কৃষকদলের নেতারা জানান, ঘটনার পর থেকে এলাকায় উভয় পক্ষের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। তারা আশা প্রকাশ করেন, প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনবে।