অনলাইন ডেস্ক : এবারের এশিয়া কাপের আগে ভারত ও পাকিস্তানের মহারণ ঘিরে কম উত্তাপ ছড়ায়নি। সম্প্রতি দেশ দুটির মধ্যকার সংঘাত যেন আরও রসদ জুগিয়েছিল। তবে মাঠের লড়াইয়ে পাকিস্তানকে আরও একবার হতাশ করল ভারত। সালমান আলি আঘাদের নিয়ে ছেলেখেলা করলেন সূর্যকুমার যাদবরা।
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বিদের বিপক্ষে জয় সূর্য উৎসর্গ করলেন পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ও তাদের পরিবারকে। পাশাপাশি সম্মান জানালেন ভারতীয় সেনাবাহিনীকে।
খেলাশেষে পুরস্কার বিররণী অনুষ্ঠানে সঞ্চালক সঞ্জয় মাঞ্জরেকার জিজ্ঞাসা করেন, এই জয় কেমন লাগছে? জবাবে সূর্য বলেন, “এক দারুণ অনুভূতি। এই জয় ভারত ও ভারতবাসীকে দেওয়া আমার পাল্টা উপহার।”
সূর্যের সঙ্গে এই ম্যাচে ভারতের পারফরম্যান্স নিয়ে কথা বলেন মাঞ্জরেকার। তার কথা শুনে বোঝা যায়, পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলার জন্য আলাদা করে কোনো পরিকল্পনা তারা করেননি। এই ম্যাচকে বাকি সব ম্যাচের মতোই দেখেছেন। একই কথা শোনা যায় ম্যাচের সেরা কুলদীপ যাদবের মুখেও। তাদের কথায় স্পষ্ট, পাকিস্তানকে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হিসেবেও ভাবেননি তারা।
সবশেষে সূর্য বলেন, “কয়েকটা কথা বলতে চাই। এর থেকে ভালো সুযোগ হয়তো পাবো না। পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের পরিবারের পাশে আমরা রয়েছি। আমরা তাদের সমবেদনা জানাই।” পেহেলগামে হামলার প্রতিবাদে ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালিয়েছিল ভারতীয় সেনা। এদিন সেনাবাহিনীর প্রশংসাও শোনা গেল সূর্যর কণ্ঠে। তিনি বলেন, “এই জয় আমরা ভারতীয় সেনাবাহিনীকেও উৎসর্গ করছি। যে সাহস ওরা দেখিয়েছে তার তুলনা নেই। আশা করছি ভবিষ্যতেও ওরা এভাবেই আমাদের অনুপ্রাণিত করবে। যখনই সুযোগ পাব দেশবাসীর মুখে হাসি ফোটাতে চাই।”
খেলা শুরুর আগে টসের সময়ই উত্তাপ ছড়ায়। পাকিস্তানের অধিনায়ক সালমান আলি আঘার সঙ্গে হাত মেলাননি ভারতীয় অধিনায়ক। কেন তিনি হাত মেলাননি তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ম্যাচের পরে। সূর্য বলেন, “আমরা এখানে আসার সময়ই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে খেলতেই আসছি। আমরা জবাব দিতে চেয়েছিলাম। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড ও কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আমরা একমত।”
খেলা শেষেও পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের সঙ্গে হাত মেলাননি সূর্যরা। সতীর্থ শিবাম দুবেকে সঙ্গে নিয়ে সোজা সাজঘরে ফিরে যান তিনি। ভারতের বাকি ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফরা সাজঘর থেকে নামেননি। অথচ সালমানসহ গোটা পাক দল অপেক্ষা করছিল ভারতীয় ক্রিকেটারদের সঙ্গে হাত মেলাতে। পাকিস্তানের ক্রিকেটারেরা যাতে তাদের সাজঘরে যেতে না পারেন তার জন্য ভারতীয় ক্রিকেটাররা নিজেদের সাজঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন।
কেন তারা হাত মেলাননি তার কারণও জানিয়েছেন সূর্য। তিনি বলেন, “কিছু কিছু বিষয় খেলোয়াড়ি মানসিকতার থেকেও বেশি হয়। আমরা পেহেলগামে হামলায় নিহতদের পরিবারের পাশে রয়েছি। ভারতের সাহসী সেনাবাহিনীর পাশেও রয়েছি।” সূর্যর কথা থেকে পরিষ্কার, ইচ্ছা করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
ভারত অধিনায়কের সুরেই কথা বলেছেন প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীরও। খেলাশেষে তিনি বলেন, “দল হিসেবে পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের পরিবারের পাশে থাকতে চেয়েছিলাম। সেটাই করে দেখিয়েছি। অপারেশন সিঁদুরের জন্য ভারতীয় সেনার ওপর গর্বিত।”
প্রসঙ্গত, রোববার দুবাইয়ে এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে টস জিতে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে জাসপ্রিত বুমরাহ-কুলদীপ যাদবদের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি পাকিস্তানি ব্যাটাররা। ব্যাটিং ব্যর্থতার দিনে শেষ দিকে দারুণ এক ক্যামিও খেলেন শাহিন আফ্রিদি। তার ইনিংসে ভর করে ১২৭ রানের গড়পড়তা পুঁজি গড়ে পাকিস্তান। জবাবে সূর্য, অভিষেক ও তিলকের ব্যাটে ভর করে ৭ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে ভারত।