অনলাইন ডেস্ক : আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার ত্রাণবাহী জাহাজ বহরকে আটকাতে ব্যর্থ হয়েছে ইসরায়েলের নৌবাহিনী। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার বাসিন্দাদের জন্য খাদ্য ও ত্রাণসামগ্রী বহন করে নিয়ে যাওয়া এই জাহাজ বহরটি বর্তমানে গাজার কাছাকাছি আছে।
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার অন্যতম মুখপাত্র ওয়ায়েল নাওয়ার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করা এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন।
ফ্রিডম ফ্লোটিলা ফাউন্ডেশন, গ্লেবাল মুভমেন্ট টু গাজা, মাগরেব সুমুদ ফ্লোটিলা এবং সুমুদ নুসানতারা—এই চার আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবীর ঐক্যমঞ্চ গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা। গত ৩১ আগস্ট স্পেনের বন্দর থেকে খাদ্য ও ত্রাণসামগ্রীতে পূর্ণ ৫৫টি জাহাজ নিয়ে গাজার উদ্দেশে রওনা দেয় গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা। জাহাজগুলোতে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে আছেন ৪৪টি দেশের নাগরিক।
২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় অভিযান শুরুর পর এ পর্যন্ত যত ত্রানের বহর গাজায় পৌঁছেছে, সেগুলোর মধ্যে ফ্লোটিলার এই বহরটি সবচেয়ে বড়।
এই বহরটিকে নেতৃত্ব দেওয়া জাহাজটির নাম অ্যালমা। ফেসবুক পোস্টে ওয়ায়েল নাওয়ার জানান, ভূমধ্যসাগরে পৌঁছানোর পর গতকাল ইসরায়েলের নৌবাহিনী প্রথমেই অ্যালমাকে আটকে দেয়। কিন্তু এতে বহরে থাকা বাকি ৫৪টি জাহাজ নিজেদের গতিরোধ না করে এগিয়ে যেতে থাকে। এর পর এক সময় অ্যালমাকে ছেড়ে দেয় নৌবাহিনী, কিন্তু কয়েক ঘণ্টার পর বহরের আরেক জাহাজ সাইরিয়াসকে আটকে দেয় নৌবাহিনী। সেবারও বাকি জাহাজগুলো না থেমে এগিয়ে যেতে থাকে।
এভাবে কয়েক ঘণ্টা চলার পর বিভিন্ন দিক থেকে তাড়া দিয়ে ফ্লোটিলার জাহাজবহরকে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার চেষ্ট করে ইসরায়েলের নৌবাহিনী। এতে কিছু সময়ের জন্য জাহাজগুলো পরস্পর থেকে দূরে সরে গেলেও ফের একসাথে হয়।
ফেসবুক পোস্টে ওয়ায়েল নাওয়ার বলেন, “জায়নবাদী শাসকদের নৌবাহিনী আমাদের জাহাজের বহর আটকানোর চেষ্টা করেছিল, তারা আমাদের অগ্রবর্তী জাহাজ অ্যালমাকে কিছুক্ষণের জন্য আটকেও রেখেছিল— তবে শেষ পর্যন্ত তারা ব্যর্থ হয়েছে, এবং আমরা এখন গাজার পথে আছি।”
গত দু’দিন আগে ইসরায়েলের নৌবাহিনীর জাহাজ যখন ফ্লোটিলার জাহাজবহরকে অনুসরণ করা শুরু করেছিল— তখনই জাহাজের ক্রুরা বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছিলেন। সে সময় আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে রীতিমতো আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল সেই ঘটনা।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিনিধিরা ফ্লোটিলার জাহাজবহরের সঙ্গে আছেন। তারা বলেছেন, ইসরায়েলের নৌবাহিনীর সদস্যরা জাহাজটি আটকে প্রথমেই সেটির যোগাযোগের সব ব্যবস্থা জ্যাম করে দিয়েছিল। তারপর কয়েক ঘণ্টা অবস্থানের পর তারা জাহাজটি ছেড়ে চলে যায়।
বর্তমানে ইসরায়েলের নৌবাহিনী ভূমধ্যসাগরের ওই এলাকায় আর নেই বলে জানা গেছে। ফ্লোটিলার জাহাজ বহরও গাজার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। আগামী কালের মধ্যেই হয়তো গাজার উপকূলে ভিড়বে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার জাহাজবহর।
সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি