মঙ্গলবার, মার্চ ১৯, ২০২৪

নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল

আর ও খবর

ফুটবলকন্যা স্বপ্নার নতুন অধ্যায় শুরু

অনলাইন ডেস্ক : সাফজয়ী ফুটবলকন্যা সিরাত জাহান স্বপ্না গত বছর মে মাসে ‘হঠাৎ ছুটি’ নিয়ে বাফুফে ক্যাম্প ছাড়েন। এরপর আর মাঠে ফেরেননি জাতীয় দলের এই তারকা খেলোয়াড়।

সেই সময় থেকেই একটি গুঞ্জন শোনা যায়, স্বপ্না বিয়ে করছেন, আর ফুটবল খেলবেন না। অবশেষে সেই কথাই সত্য হলো।

ফুটবল মাঠ ছেড়ে জীবনের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছেন বাংলাদেশকে সাফ চ্যাম্পিয়ন করানোর অন্যতম এই কারিগর।

গতকাল শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) বিয়ের পিড়িতে বসেছেন সাফজয়ী ফুটবলার সিরাত জাহান স্বপ্না।

সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে জীবনের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করতে এদিন বধূ বেশে তাকে দেখা যায়।

পারিবারিকভাবে বিয়ের মাধ্যমে সঙ্গী করে নিয়েছেন পূর্ব পরিচিত প্রবাসী সুবহে সাদিক মুন্নাকে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় হবার ৪ বছরের মধ্যে বিয়ে করলেন তারা। স্বপ্নার বর মুন্না সৌদি আরব প্রবাসী।

তিনি ব্রাক্ষণবাড়িয়ার পায়রা চর গ্রামের সরকার বাড়ির ছেলে। প্রবাসী বাবার হাত ধরে মুন্না ৫ বছর ধরে সৌদি আরবের একটি কোম্পানিতে চাকরি করছেন।

বিয়ের পর দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন ফুটবল ছেড়ে সংসার জীবনের শুরু করতে যাওয়া সিরাত জাহান স্বপ্না।

নারী জাতীয় এবং বয়সভিত্তিক দলের বিভিন্ন সাফল্যের সাক্ষী স্বপ্না। এখন সংসারেও মনোযোগী হতে চান সিরাত জাহান।

নারী ফুটবলার স্বপ্না বলেন, আমাদের সম্পর্ক ৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে। কিন্তু উনি আমাকে চিনতেন আরও আগে থেকেই।

আমার খেলা সব সময় দেখতেন। আমার সম্পর্কে সব কিছুই জানতেন। কিন্তু আমি তাকে চিনতাম না। তার সঙ্গে কথা হওয়ার পরই চিনেছি।

তিনি ক্রীড়ামনস্ক মানুষ। তাই পারিবারিকভাবে তাকে বিয়ে করছি। আপনারা সবাই দোয়া করবেন আমাদের জন্য।

অন্যদিকে বর সুবহে সাদিক মুন্না বলেন, আমি সৌভাগ্যবান। কারণ স্বপ্না শুধু রংপুর কিংবা উত্তরবঙ্গের গর্ব নয়, স্বপ্না আমাদের বাংলাদেশের গর্ব। তাকে সম্মানের সঙ্গে রাখব ইনশাআল্লাহ।

গেল বছর সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়ের পথে চার গোল করেন সিরাত জাহান স্বপ্না।

পরে ঢাকায় ফিরে মে মাসে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) ক্যাম্প থেকে হঠাৎ ছুটি নিয়ে নিজ জেলা রংপুরের বাড়িতে চলে যান এই ফুটবলার। পরে ২৬ মে সোশ্যাল মিডিয়ায় ফুটবলকে বিদায় জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপাজয়ী সিরাত জাহান স্বপ্নারা তিন বোন। তার বড় দুই বোনের বিয়ে হয়েছে। স্বপ্নার বাবা মোকছার আলী একসময় বর্গাচাষী ছিলেন।

আর মা লিপি বেগম অভাব অনটনের সংসারে সন্তানদের মুখে একবেলা ভাত তুলে দিতে করেছেন ধান ভাঙার কাজ। সেই কষ্টের সংসারে স্বপ্না যেন ভাঙা ঘরে চাঁদের আলো।

চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার সময়ের ২০১১ সালে বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের মধ্য দিয়ে স্বপ্নার আত্মপ্রকাশ। এরপর তার খেলায় নজর পড়ে বাফুফের।

সিরাত জাহান স্বপ্না ২০১৩ সালে জাতীয় দলের ক্যাম্পে ডাক পায়। ২০১৪ সালে ঢাকায় খেলেন আঞ্চলিক বাছাইপর্ব।

২০১৫ সালে নেপালে এএফসি অনূর্ধ্ব–১৪ ফুটবলের আঞ্চলিক পর্বে বাংলাদেশ শিরোপা জিতেছিল। স্বপ্না ছিলেন সে দলের সদস্য।

অনূর্ধ্ব–১৬ এএফসি বাছাইয়েও খেলেছেন ২০১৬ সালে। সে বছরই শিলং–গুয়াহাটি এসএ গেমসে জাতীয় নারী দলের জার্সি পরেন।

সেই থেকে জাতীয় দলে খেলেছেন। ২০১৭ সালে নারী সাফে ৫ গোল করেছিলেন। ২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব–১৮ নারী সাফে ৮ গোল করেছিলেন তিনি।

সবশেষ সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে ৪ গোল করে দেশের জয়ে ভূমিকা রেখেছেন স্বপ্না। এই চার গোলের মধ্যে দুটিই ছিল ভারতের জালে।

সর্বাধিক পঠিত