নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঢাকা শুক্রবার। দুপুর ১:৫০। ৪ জুলাই, ২০২৫।

ইউক্রেন যুদ্ধ ও ইরান ইস্যুতে ট্রাম্প-পুতিনের ফোনালাপ: আলোচনায় শান্তি, অস্ত্র, মধ্যপ্রাচ্য

জুলাই ৪, ২০২৫ ১:৪৪
Link Copied!

অনলাইন ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে ছয় নম্বর পরিচিত টেলিফোন সংলাপে উঠে এলো ইউক্রেন যুদ্ধ, ইরান পরিস্থিতি এবং মধ্যপ্রাচ্যসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বৃহস্পতিবারের এই ফোনালাপকে ‘খোলামেলা ও গঠনমূলক’ বলে অভিহিত করেছে ক্রেমলিন।

এই ফোনালাপ সম্পর্কে রুশ পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইউক্রেনে যুদ্ধের দ্রুত সমাপ্তির ওপর জোর দেন। জবাবে পুতিন কিয়েভের সঙ্গে আলোচনায় মস্কোর প্রস্তুতির কথা পুনরায় জানান, বিশেষ করে তিনি উল্লেখ করেন, পূর্বের তুরস্কভিত্তিক আলোচনাগুলো কিছু মানবিক ফল বয়ে এনেছিল।

তবে পুতিন একইসঙ্গে এও জানান, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া তাদের লক্ষ্য থেকে সরে আসবে না এবং সংঘাতের ‘মূল কারণ’ দূর করাই তাদের উদ্দেশ্য।
“রাশিয়া তাদের কৌশলগত লক্ষ্য অর্জন পর্যন্ত পিছপা হবে না,” বলেন উশাকভ।

পুতিন দাবি করেন, ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদানের আকাঙ্ক্ষা এবং রুশ ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তার হুমকি ঠেকাতে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি ইউক্রেনে সেনা পাঠান। যদিও কিয়েভ ও পশ্চিমা মিত্ররা এই দাবি বরাবরই প্রত্যাখ্যান করে এসেছে।
তিনি আবারও জোর দেন যে, সম্ভাব্য শান্তিচুক্তির ক্ষেত্রে ইউক্রেনকে অবশ্যই ন্যাটোতে যোগদানের আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করতে হবে এবং রাশিয়ার দখলকৃত অঞ্চলগুলোকে স্বীকৃতি দিতে হবে।

আরও পড়ুনঃ  বাগমারা উপজেলা পরিষদের উম্মুক্ত বাজেট ঘোষণা

এই ফোনালাপ এমন এক সময় হলো যখন পেন্টাগন নিশ্চিত করেছে, তারা ইউক্রেনে কিছু অস্ত্র সরবরাহ আপাতত স্থগিত রেখেছে। এই অস্ত্রের তালিকায় রয়েছে বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র, নিখুঁত নির্দেশিত গোলাবারুদ এবং আরও কিছু সরঞ্জাম। বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত একজন মার্কিন কর্মকর্তা এবং সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা নাম প্রকাশ না করে নিশ্চিত করেন, পেন্টাগন এখনো সরবরাহ স্থগিতের বিস্তারিত জানায়নি।

উশাকভ জানান, ট্রাম্প-পুতিন আলোচনায় এই অস্ত্র সরবরাহ স্থগিতের বিষয়টি উত্থাপিত হয়নি।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ডেনমার্কে ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর বলেন, “আশা করছি, আগামীকাল অথবা শিগগিরই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে আলাপ করতে পারব।”
তবে ট্রাম্প-পুতিন ফোনালাপ সম্পর্কে তার মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি নিশ্চিত নই তাদের মধ্যে খুব একটা মিল আছে বা আলোচনার মতো অনেক কিছু রয়েছে, কারণ তারা খুব ভিন্ন মানসিকতার মানুষ।”

আরও পড়ুনঃ  রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যানে রাসিক প্রশাসকের বৃক্ষরোপণ

ট্রাম্প-পুতিনের সর্বশেষ পরিচিত ফোনালাপটি হয়েছিল ১৪ জুন, ইসরায়েল যখন ইরানে হামলা চালায়, তার ঠিক একদিন পর। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে ট্রাম্প ও পুতিনের এই পুনরায় যোগাযোগ দুই নেতার সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের আগ্রহকেই ইঙ্গিত করে, যা ঠান্ডা যুদ্ধ পরবর্তী সময়ের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ পর্যায়ে পৌঁছেছিল।

উশাকভ আরও জানান, ট্রাম্প তাকে ৪.৫ ট্রিলিয়ন ডলারের কর ছাড় এবং ব্যয় সংকোচন বিলের কথা জানান, এতে পুতিন তার সাফল্য কামনা করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানান।

ইরান ও বৃহত্তর মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। পুতিন জোর দেন, এই অঞ্চলের সব মতবিরোধ শুধুমাত্র রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক উপায়ে সমাধান করতে হবে।
উভয় নেতা সম্মত হন, এই বিষয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ বজায় থাকবে।

আরও পড়ুনঃ  আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের ওয়েবসাইটে সাইবার হামলা

উল্লেখযোগ্যভাবে, ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়, যা কার্যত ইসরায়েলের তেহরানবিরোধী অভিযানে সরাসরি যুক্ত হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।

পাশাপাশি, পুতিন ও ট্রাম্প সিরিয়ার পরিস্থিতি এবং জ্বালানি খাত ও মহাকাশ গবেষণায় দ্বিপাক্ষিক প্রকল্পের সম্ভাবনা নিয়েও কথা বলেন। উশাকভ জানান, আলোচনায় পুতিন এমনকি এমন একটি প্রস্তাবও দিয়েছেন, যাতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া ‘ট্র্যাডিশনাল ভ্যালুজ’ বা ঐতিহ্যগত মূল্যবোধ তুলে ধরতে যৌথভাবে চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে পারে।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই পুতিন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে প্রায় তিন বছর পর প্রথম সরাসরি ফোনালাপে অংশ নেন।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।