স্টাফ রিপোর্টার : বৈশ্বিক ও জাতীয় অর্থনীতিতে ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি মোকাবিলা এবং ব্যাংকিং খাতকে অবৈধ অর্থ লেনদেন থেকে সুরক্ষিত রাখতে দিনব্যাপী এক নিবিড় প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করেছে এনসিসি ব্যাংক পিএলসি।
শনিবার (২৬ জুলাই) রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত হয় “মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ” শীর্ষক এ কর্মশালা।
নগরের আলুপট্টিতে এনসিসি ব্যাংকের রাজশাহী শাখার কনফারেন্স হলে আয়োজিত এ কর্মশালায় উত্তরাঞ্চলের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বানেশ্বর, বগুড়া, নওগাঁ এবং পাবনা শাখার ৬২ জন নবীন ও অভিজ্ঞ নির্বাহী ও কর্মকর্তা অংশ নেন। ব্যাংকিং কার্যক্রমে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রাখার লক্ষ্যেই এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়।
কর্মশালার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের উপ-প্রধান মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ পরিপালন কর্মকর্তা এবং এএমএল অ্যান্ড সিএফটি বিভাগের প্রধান মো. বাকের হোসেন। তিনি বলেন, “মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন শুধু দেশের অর্থনীতিকেই দুর্বল করে না, এর ফলে সমাজ ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তাও চরম ঝুঁকিতে পড়ে। ব্যাংকিং খাত এসব অপরাধের প্রধান প্রবেশপথ হওয়ায় ব্যাংকারদের সর্বোচ্চ সতর্কতা ও পেশাদারিত্বে কাজ করতে হবে।”
তিনি ব্যাংকারদের বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)-এর নির্দেশনাবলী কঠোরভাবে অনুসরণের পরামর্শ দিয়ে বলেন, “মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫), সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০১২ এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা জরুরি। শুধু কেওয়াইসি, লেনদেন পর্যবেক্ষণ, সন্দেহজনক লেনদেন প্রতিবেদন বা কার্যকলাপ প্রতিবেদন জানলেই হবে না—প্রতিদিনের কাজে এসব সঠিকভাবে প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উত্তরাঞ্চলের আঞ্চলিক প্রধান মো. ওমর শরীফ বলেন, “প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়িয়ে গ্রাহকের আস্থা অর্জনের দিকেই এনসিসি ব্যাংকের অগ্রাধিকার। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষতা গড়ে তোলার জন্য ডিজিটাল ব্যাংকিং ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার শেখা সময়ের দাবি।”
কর্মশালার সভাপতি ও রাজশাহী শাখার ব্যবস্থাপক মো. সাইফুল্লাহ আল আমিন বলেন, “রাজশাহী এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অঞ্চল। এখানকার আর্থিক প্রবাহের সঙ্গে সঙ্গে ঝুঁকিও বাড়ছে। আমাদের কর্মকর্তারা যেন এসব ঝুঁকি মোকাবিলায় সক্ষম হন, সে লক্ষ্যেই এই আয়োজন।”
বগুড়া শাখার একজন অংশগ্রহণকারী প্রশিক্ষণকে “অত্যন্ত ফলপ্রসূ” উল্লেখ করে বলেন, “বিশেষ করে ট্রেড-বেইজড মানি লন্ডারিং এবং ডিজিটাল মাধ্যমে সন্দেহজনক লেনদেন শনাক্তকরণে যে বাস্তব কৌশলগুলো শেখা হয়েছে, তা ভবিষ্যতে খুবই কাজে লাগবে।”
দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ শেষে অংশগ্রহণকারীদের মূল্যায়ন করা হয় এবং তাদের হাতে সনদপত্র তুলে দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা জানান, এই উদ্যোগ ব্যাংকিং খাতে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।