অনলাইন ডেস্ক : টুর্নামেন্টজুড়ে নানা নাটকীয়তা উপহার দিয়েছে দুই ফাইনালিস্ট ভারত ও পাকিস্তান। আসর সমাপ্তির সময়েও থামেনি কোনো দলের নাটক। এমনকি টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন হলেও ট্রফি নেয়নি ভারত। যা নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
এসিসির সভাপতি মহসিন নাকভি পাকিস্তানি হওয়ায় তার হাত থেকে শিরোপা নিতে চায়নি ভারত। স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১০টায় ম্যাচ শেষ হয়। কিন্তু ভারতের দাবির মুখে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শুরু হতে বেশ দেরি হয়। এ সময় নানা গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। দীর্ঘ অপেক্ষার পর প্রায় মাঝরাতে শুরু হয় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। সেখানেও জন্ম নয় নতুন নাটকের।
পুরস্কার দিতে এসিসি সভাপতি নাকভিসহ অন্য অতিথিরা মঞ্চে আসার প্রায় ২০ মিনিট পর মাঠে আসে ভারতীয় দল। তবে তারা নাকভির হাত থেকে ট্রফি না নেওয়ার সিদ্ধান্ত অনড় ছিলেন। একপর্যায়ে মঞ্চ ছেড়ে চলে যান এসিসি সভাপতি। সেই সঙ্গে ট্রফি ও চ্যাম্পিয়ন দলের জন্য তৈরি মেডেলগুলো নিয়ে যান।
শেষ পর্যন্ত ট্রফি ছাড়াই উদযাপন করতে শুরু করে ভারতীয় দল। ফুটবল বিশ্বকাপ জয়ের পর লিওনেল মেসির সেই বিখ্যাত উদযাপনের মতো করে কল্পিত ট্রফি হাতে নিয়ে উদযাপন করেন ভারতের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। তবে বিষয়টি সহজভাবে নিতে পারেননি বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়ার (বিসিসিআই) সচিব দেভজিৎ সাইকিয়া।
বার্তা সংস্থা এএনআইকে সাইকিয়া বলেন, ‘ভারত একটি দেশের সঙ্গে যুদ্ধে আছে এবং আজকে ট্রফি দেওয়ার কথা ছিল সেই দেশের একজন নেতার। আমাদের সিদ্ধান্ত ছিল, এসিসি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে এশিয়া কাপের ট্রফি নেব না, যিনি পাকিস্তানের মূল নেতাদের একজন। এজন্যই তার কাছ থেকে ট্রফি নিতে চাইনি আমরা।’
এরপর তিনি বলেন, ‘তার মানে এই নয় যে, ওই ভদ্রলোক ট্রফি আর মেডেল নিজের সঙ্গে নিয়ে হোটেল রুমে চলে যাবেন! এটা খুবই অপ্রত্যাশিত। আমরা আশা করব, ট্রফি ও মেডেলগুলো যত দ্রুত সম্ভব ভারতে ফেরত পাঠানো হবে। আগামী নভেম্বরে দুবাইয়ে আইসিসির কনফারেন্স আছে। সেখানে এসিসি প্রধানের এই কাণ্ডের বিরুদ্ধে ভীষণ শক্ত প্রতিবাদ জানাব আমরা।’
পুরস্কার বিতরণীর পর ভারতীয় দলের সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করা হয়, ভারতীয় বোর্ডের পক্ষ থেকে নাকভির কাছ থেকে ট্রফি নেওয়া যাবে না এমন কোনো বার্তা এসেছিল কি না। জবাবে ভারতের অধিনায়ক সুর্যকুমার যাদব বলেন, ‘ই-মেইলের কিছু তো আমার জানা নেই। কেউ আমাদেরকে কিছু করতে বলেনি। এটা মাঠেই আমরা তখন সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যখন থেকে আমি ক্রিকেট খেলা শুরু করেছি, অনুসরণ করতে শুরু করেছি, এরকম কিছু কখনোই দেখিনি যে, চ্যাম্পিয়ন দলকে ট্রফি দেওয়া হয়নি। আমাকে যদি ট্রফির কথা জিজ্ঞেস করেন, আমার ট্রফি ড্রেসিং রুমেই আছে। আমার সঙ্গে দলের অন্য ১৪ ক্রিকেটার, সাপোর্ট স্টাফ, এশিয়া কাপের এই পথচলায় তারাই আমাদের সত্যিকারের ট্রফি।’
পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলি আগার মতে, নিজেদের কর্মফলেই ট্রফি পায়নি ভারত। তিনি বলেন, ‘এই ধরনের কিছু জীবনে প্রথম দেখলাম। এই টুর্নামেন্টে যা যা হলো, সবকিছুই ক্রিকেটের জন্য খারাপ। আশা করি, একটা পর্যায়ে এসব থামবে, কারণ ক্রিকেটের জন্য এগুলো ভালো নয়। জয়ী দলকে ট্রফি দেবে তো এসিসি সভাপতিই! তার কাছ থেকে ট্রফি না নিলে কার থেকে থেকে নেবেন?’
ভারত দলকে ট্রফি কবে দেওয়া হবে বা আদৌ দেওয়া হবে কি না এ বিষয়ে এসিসির পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি। সবকিছু মিলিয়ে বলা যায়, ট্রফি নিয়ে ভারতীয় দল ও এসিসির মধ্যে সহসাই বিরোধ মিটবে না।