অনলাইন ডেস্ক : প্রবল বর্ষণের জেরে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য টেক্সাসের গুয়াদালুপে নদীর দুই তীরে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। শুক্রবার ভয়াবহ এই বন্যা আঘাত হানার পর থেকে এ পর্যন্ত নদীর তীর ও আশপাশের এলাকা থেকে ২৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং এখনও নিখোঁজ আছে কমপক্ষে ২৫ জন।
নিহত এবং নিখোঁজরা সবাই মেয়ে এবং তারা সবাই স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী। টেক্সাস পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কয়েক দিন আগে গুয়াদালুপে নদীর দুই তীরে গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্পের উদ্দেশে এসেছিল প্রায় ৮০০ কিশোরী ও তরুণী। এটি ছিল পুরোপুরি মেয়েদের ক্যাম্প।
গুয়াদালুপে নদীর অবস্থান টেক্সাসের দক্ষিণাঞ্চলে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মধ্য ও দক্ষিণ টেক্সাসে বৃষ্টি শুরু হয়। বেলা গড়ানোর সঙ্গে বৃষ্টির মাত্রা বাড়তে থাকে এবং সন্ধ্যার পর তা রীতিমতো প্রবল বর্ষণে পরিণত হয়।
বর্ষণ অব্যাহত ছিল এবং এর জেরেই শুক্রবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টার দিকে নদীর দুই তীরে দেখা দেয় আকস্মিক বন্যা বা হড়কা বান।
নদীর দুই তীরেই সামার ক্যাম্পের তাঁবু ফেলা হয়েছিল। ভোর ৪টার দিকে যখন হড়কা বান নদীর দুই তীরে আঘাত হানে—সে সময় প্রায় সবাই ঘুমিয়ে ছিল। ফলে বন্যা আসার আগে কেউ নিরাপদ জায়গায় সরে যেতে পারেনি। যে কারণে নিখোঁজ-নিহতের সংখ্যাও বেড়েছে।
শনিবার টেক্সাসের উপ গভর্নর ড্যান প্যাট্রিক এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মাত্র ৪৫ মিনিটের মধ্যে গুয়াদালুপে নদীর পানি ২৬ ফুট বেড়ে এই ‘বিধ্বংসী বন্যা’ দেখা দিয়েছে। নিখোঁজদের সন্ধানে গুয়াদালুপে নদীর দুই তীরে ব্যাপক অনুসন্ধান শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ১৪টি হেলিকপ্টার, ১২টি ড্রোন, ৯টি উদ্ধারকারী দল এবং ভূখণ্ডে থাকা পাঁচশ কর্মী এ অনুসন্ধান টিমে আছেন এবং ইতোমধ্যে কয়েক জনকে উদ্ধারও করা হয়েছে।
তবে আগামী কয়েক ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন তিনি।
গুয়াদালুপে নদীর তীরে যেখানে সামার ক্যাম্প হয়, সেই এলাকাটি ক্যাম্প মিস্টিক নামে পরিচিত। ১৯২৬ সালে প্রতিষ্ঠিত ক্যাম্প মিস্টিক একটি বেসরকারি খ্রিস্টান গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্প; যা কেবল মেয়েদের নির্মিত। এটি কারভিল শহর থেকে ১৮ মাইল উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত।
বিবিসি বলছে, প্রবল বর্ষণ, ভূমিধস এবং বন্যার কারণে মধ্য ও দক্ষিণ টেক্সাসের অনেক সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে ক্যাম্পে যেসব কিশোরী ও তরুণী এসেছিলেন, তাদের অনেকের মা-বাবা এখনও ক্যাম্প মিস্টিকে পৌঁছাতে পারেননি।
সূত্র : রয়টার্স।