নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বাংলাদেশ বুধবার। রাত ১১:১০। ১২ নভেম্বর, ২০২৫।

থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার সৈন্যদের ফের পাল্টাপাল্টি হামলা, নিহত ১

নভেম্বর ১২, ২০২৫ ৮:২৭
Link Copied!

অনলাইন ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় পৌঁছানো যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে নতুন সংঘাতে জড়িয়েছে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া। বুধবার দুই দেশের সৈন্যরা পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে। এ সময় থাইল্যান্ডের সামরিক বাহিনীর হামলায় কম্বোডিয়ায় অন্তত একজন নিহত হয়েছেন।

প্রতিবেশী দুই দেশের নতুন এই সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেস্তে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এর আগে, বুধবার সকালের দিকে থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, কম্বোডিয়া নতুন করে স্থল মাইন পুঁতে রাখায় সোমবার এক থাই সৈন্য আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় কম্বোডিয়ার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করার দাবি জানিয়েছে থাইল্যান্ড।

মঙ্গলবার থাইল্যান্ড মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপস্থিতিতে গত মাসে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দেয়। কম্বোডিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তারা নতুন কোনো মাইন পুঁতে রাখেনি এবং থাইল্যান্ডকে অক্টোবরের চুক্তি মেনে চলার আহ্বান জানায়। জুলাই মাসে দুই প্রতিবেশী দেশের পাঁচ দিনের সংঘর্ষ শেষে স্বাক্ষরিত প্রাথমিক যুদ্ধবিরতির ভিত্তিতে সম্প্রসারিত ওই চুক্তিতে পৌঁছায় থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া।

• বিবাদপূর্ণ সীমান্ত গ্রামে গুলিবিনিময়
কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, বুধবার স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে থাই সেনারা একটি বিতর্কিত সীমান্ত গ্রামের কাছে গুলি চালিয়েছেন। এ ঘটনায় একজন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

থাই সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল উইনথাই সুভারি বলেন, কম্বোডিয়ার সৈন্যরা প্রথমে থাইল্যান্ডের ভেতরে গুলি চালিয়েছেন। তিনি বলেন, থাই বাহিনী আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালিয়েছে। নিয়ম মেনে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে এই গুলি চালানো হয়েছে। এতে থাইল্যান্ডের সামরিক বাহিনীর কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। প্রায় ১০ মিনিট পর পরিস্থিতি শান্ত হয়।

বিতর্কিত একটি সীমান্ত এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উভয় দেশের পাল্টাপাল্টি দাবি রয়েছে। থাইল্যান্ড বলছে, এটি তাদের সা কেও প্রদেশের বান নং ইয়াও ক্যাও গ্রামের অংশ।আর কম্বোডিয়া বলছে, এটি তাদের বানতেয় মেনচে প্রদেশের প্রেই চান গ্রামের অন্তর্ভুক্ত।

থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নিকোর্নদেজ বালানকুরা সাংবাদিকদের বলেছেন, সোমবারের স্থল মাইন বিস্ফোরণের ঘটনায় থাইল্যান্ড কম্বোডিয়ার কাছে দুঃখপ্রকাশের দাবি জানিয়েছে। আমরা ঘটনাটির সত্যতা যাচাই এবং দায়ীদের শনাক্ত করার আহ্বান জানাই। পাশাপাশি ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।

তবে এই বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে কম্বোডিয়ার সরকার। গত জুলাই মাসে দুই দেশের সংঘর্ষে অন্তত ৪৮ জন নিহত ও প্রায় তিন লাখ মানুষ সাময়িক বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। ওই সময় দুই দেশ রকেট, ভারী কামানের গোলা ও বিমান হামলা চালায়।

সীমান্তের বিতর্কিত এলাকায় মাইন বিস্ফোরণ ঘিরে ওই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছিল। মাইন বিস্ফোরণে গত ১৬ জুলাইয়ের পর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত সাত থাই সৈন্য গুরুতর আহত হয়েছেন।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব মাইনের কিছু নতুন করে পোঁতা হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। থাই সেনাবাহিনীর সরবরাহ করা মাইনের আলামত বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা এই তথ্য জানিয়েছেন।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ৮১৭ কিলোমিটার স্থলসীমান্তের বিভিন্ন অনির্ধারিত অংশ নিয়ে শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে বিরোধ চলছে। ফরাসি ঔপনিবেশিক আমলে ১৯০৭ সালে দুই দেশের সীমান্তের প্রথম মানচিত্র তৈরি করা হয়েছিল।

সূত্র: এএফপি, রয়টার্স।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।