নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঢাকা সোমবার। রাত ১১:০৩। ১৯ মে, ২০২৫।

দুই মাস পর গাজায় ঢুকছে মানবিক সহায়তা, থামেনি হামলা

মে ১৯, ২০২৫ ৩:৩১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

অনলাইন ডেস্ক : আন্তর্জাতিক চাপের মুখে এবার সামান্য পরিমাণ খাদ্য প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে ইসরাইল। রোববার ইরাইলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এই তথ্য জানিয়েছে। এর আগে দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে উপত্যকাটিকে পূর্ণ অবরোধ আরোপ করে রাখে তেল আবিব। সেসময় কোন ধরনের আন্তর্জাতিক ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা গাজায় প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।

ইসরাইলি সেনাবাহিনী গাজায় নতুন করে বড় ধরনের স্থল অভিযান শুরুর কয়েক ঘণ্টা পর এ ঘোষণা দেওয়া হয়। একই সময়ে হামাস ও নেতানিয়হু সরকারের মধ্যে যুদ্ধবিরতির সম্ভাব্য একটি চুক্তি নিয়ে পরোক্ষ আলোচনা চলছিলো।

প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়, “গাজা উপত্যকার বাসিন্দাদের খাদ্য সংকট এড়াতে মৌলিক কিছু খাদ্য প্রবেশের অনুমতি দেবে ইসরাইল।”

এতে আরও বলা হয়, মানবিক এই সহায়তা যাতে হামাসের হাতে না যায়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে তারা।

গত ২ মার্চ থেকে গাজায় ইসরাইলের এই অবরোধ চালু ছিল। যার লক্ষ্য ছিল হামাসকে চাপ দিয়ে কিছু দাবি আদায়ের চেষ্টা করছিল ইসরাইল। তবে জাতিসংঘের সংস্থাগুলো বারবার সতর্ক করে আসছিল যে, এই অবরোধের ফলে গাজায় খাদ্য, পানি, জ্বালানি ও ওষুধের মারাত্মক সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  রাজশাহী আসছেন পানি সম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা

এদিকে, ইসরাইলের সেনাবাহিনী রবিবার জানিয়েছে, তারা “গাজার উত্তর ও দক্ষিণে ব্যাপক স্থল অভিযান শুরু করেছে” এবং গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।

এই তীব্র অভিযান মূলত শুরু হয়েছে শনিবার থেকে। এই অভিযানের লক্ষ্য হচ্ছে হামাসকে পরাজিত করে জিম্মিদের মুক্ত করা। যদিও একই লক্ষ্য সামনে রেখে কাতারেও পরোক্ষ আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল ও হামাস।

নেতানিয়াহুর কার্যালয় আরও জানায়, প্রস্তাবিত চুক্তির মধ্যে থাকবে “সব জিম্মির মুক্তি, হামাস সন্ত্রাসীদের দেশত্যাগ এবং গাজা উপত্যকার নিরস্ত্রীকরণ।”

মার্চে যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর কাতার, মিশর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় বিভিন্ন আলোচনায় এখন পর্যন্ত কোনও চূড়ান্ত সমাধান আসেনি।

নেতানিয়াহু বলে আসছেন, হামাসকে পরাজিত না করে যুদ্ধ থামানো যাবে না। অপরদিকে হামাস তাদের অস্ত্র হস্তান্তর করতে নারাজ।

আরও পড়ুনঃ  নগরীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পদক্ষেপ চেয়ে বিএনপির স্মারকলিপি প্রদান

আলোচনার সঙ্গে জড়িত হামাসের এক সূত্র জানিয়েছে, “যদি একটি পূর্ণাঙ্গ ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতি হয়, তাহলে তারা সব ইসরায়েলি জিম্মিকে একসঙ্গে মুক্তি দিতে রাজি।” তবে ইসরাইল তাদের বন্দিদের এক বা দুই দফায় মুক্তির বিনিময়ে শুধু অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে আগ্রহী।

এদিকে, রবিবার বিকেলে দক্ষিণ ইসরাইলে সাইরেন বেজে ওঠে। পরে সেনাবাহিনী জানায়, গাজা থেকে ছোড়া দুটি ক্ষেপণাস্ত্রের একটি ভূপাতিত করা হয়েছে।

পরে ইসরাইলি বাহিনী গাজার কিছু এলাকায় লোকজনকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয় এবং জানায়, এসব এলাকা থেকে রকেট ছোড়া হলে কঠোর হামলা চালানো হবে।

গাজার সিভিল ডিফেন্স বিভাগের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানান, রবিবার বিকাল পর্যন্ত অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছেন।

তিনি আরো জানান, গাজার দক্ষিণের আল-মাওয়াসিতে আশ্রয় নেওয়া লোকজনের তাঁবুতে হামলায় ২২ জন নিহত এবং অন্তত ১০০ জন আহত হয়েছেন।

এএফপির ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, লোকজন ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্র খুঁজছে এবং আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ  নিয়ামতপুরে গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানায়, গত এক সপ্তাহে তারা গাজা জুড়ে ৬৭০টির বেশি হামাসের অবস্থান লক্ষ্য করে আঘাত হেনেছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মারওয়ান আল-হামস জানান, খাদ্য সহায়তা বন্ধের কারণে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৭ জন শিশু অপুষ্টিজনিত কারণে মারা গেছে এবং এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

তবে এএফপি স্বাধীনভাবে এই সংখ্যা যাচাই করতে পারেনি। এর আগে জাতিসংঘও গাজায় দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা জানিয়েছিল।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রবিবার জানায়, ইসরাইল ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতাল ঘিরে ফেলেছে এবং প্রবেশাধিকার বন্ধ করেছে। এতে হাসপাতালটি কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় গাজার উত্তরাঞ্চলে এখন আর কোনও সরকারি হাসপাতাল চালু নেই।

গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১৮ মার্চ থেকে ইসরাইল নতুন করে হামলা শুরু করার পর এখন পর্যন্ত ৩,১৯৩ জন নিহত হয়েছেন। আর পুরো যুদ্ধজুড়ে মোট প্রাণহানি দাঁড়িয়েছে ৫৩,৩৩৯ জনে।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।