স্টাফ রিপোর্টার : সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, বাংলাদেশে বিরাজমান পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার ফলে নারীদের প্রতি যে বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে উঠেছে, তা আজ সমাজের প্রতিটি স্তরে নারীর নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
তিনি আজ নিজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা বলেন। সাংবাদিক সম্মেলনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ এনডিসি উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, সমাজে আমাদের শিশুরা নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতন হচ্ছে, আশ্রয়হীন, নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ছে। এর থেকে মাদ্রাসায় পড়া ছেলে শিশুরাও যৌন সহিংসতার হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। সমাজে নৈতিকতার অবক্ষয় ও ধর্মীয় মূল্যবোধ আমাদের মধ্যে কমতে থাকায় পুরুষদের হাতে নারীরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে বেশি।
তিনি বলেন, আমি এ মন্ত্রণালয় দায়িত্ব নিয়ে আসার পর এ সকল নির্যাতন, ধর্ষণ, সহিংসতা বন্ধে সুনির্দিষ্ট কোন কাঠামো দেখতে পায়নি। নারী ও শিশুর প্রতি নির্যাতন বন্ধে একটি সুষ্ঠু কাঠামো তৈরির উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে দেশের সকল জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন এবং জাতীয় পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সেলের মাধ্যমে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে । এরাই ধারাবাহিকতায় মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কুইক রেসপন্স টীম এবং কুইক রেসপন্স টেস্কফোর্সের মাধ্যমে এ কাঠামোর কার্যক্রম তৃণমূল পর্যন্ত পরিচালিত হবে । এবং আমি আশা করছি কুইক রেসপন্স টীম অনেক অ্যাপ্রোসিয়েট হবে । তিনি আরো বলেন , আমাদের ইউনিয়নের যতগুলো গ্রাম আছে প্রত্যেকটি গ্রামে এই কুইক রেসপন্স টীম কার্যকরী ভূমিকা রাখবে এবং আমরা রিচ করতে পারবো।
কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলা দিয়ে আমি নিজে উপস্থিত থেকে এই কুইক রেসপন্স টিমের কমিটির কার্যক্রম শুরু করেছি উল্লেখ করে বলেন, দেশের সকল উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদেরকে নিয়ে আলোচনা করে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে কুইক রেসপন্স টীমের কার্যক্রমের গতি বাড়ানো হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর আইন থাকলেও এ ধরনের অপরাধ প্রত্যাশিত মাত্রায় বেড়ে যাচ্ছে। নারী ও শিশুের প্রতি পরিবার, কর্মক্ষেত্রে,পাবলিক স্পেস, অনলাইনসহ নানাভাবে বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা ও অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে। নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধের আইনের ১৪ ধারা এবং হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও অনেক সময় মিডিয়ায় ভিকটিমের ছবি প্রকাশিত হয়। আপত্তিকর ভিডিও ক্লিপ প্রচার করা হয়, যা আইনবিরোধী কাজ। বরং যে অপরাধী, ধর্ষক, নারী নিপীড়ক তাদের ছবি পরিচয়সহ প্রকাশ করতে হবে। তিনি বলেন, নারী এবং তাদের নিজেদের প্রতি হওয়া অন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে হবে ঐক্যবদ্ধভাবে। একই সাথে আমি মিডিয়ায় কাজকরা সাংবাদিক ভাইয়ের উদ্দেশ্যে বলছি, আওয়াজ তুলতে হবে, আপনাদেরকেউ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। এজন্য আমি আপনাদের সহযোগিতা চাই।