নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর নিয়ামতপুরে প্রায় এক বছর ধরে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার পদ খালি রয়েছে। এতে চরম ব্যাঘাত ঘটছে উপজেলার শিক্ষা কার্যক্রমে। ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শিক্ষকদের।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে সাতটি পদ সংখ্যা থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন তিন জন। তাদের পদগুলো হলো হিসাব রক্ষক কাম ক্লার্ক, অফিস সহকারী, অফিস সহায়ক। এর মধ্যে হিসাব রক্ষক কাম ক্লার্ক গত ১০এপ্রিল যোগদান করলেও নিয়মিত অফিসে করেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। উল্লেখ্য নিয়ামতপুরে ৪৪টি মাধ্যমিক স্কুল ও ২৬টি মাদ্রাসা আছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নিয়ামতপুরে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার পদে দায়িত্বে ছিলেন আব্দুস সালাম। তিনি গত বছরের ৯ সেপ্টম্বর অবসরে যাওয়ার পর আর কোনো শিক্ষা কর্মকর্তা যোগদান করেননি। শিক্ষা কর্মকর্তা অবসরে যাওয়ার প্রায় চার মাস পরে নওগাঁর মান্দা উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ আলম শেখকে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে নিয়ামতপুরে পদায়ন করে জেলা শিক্ষা অফিস। তবে এতে শিক্ষা কার্যক্রমে যে ব্যাঘাত হচ্ছে তা পুরোপুরি কাটেনি। ফলে শিক্ষা ক্ষেত্রে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যাহত হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা গেছে, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা না থাকায় প্রধান শিক্ষকদের কাজে সহযোগিতা করা, সরকারি নির্দেশনা ও পরামর্শ অনুসরণ এবং বাস্তবায়ন করা, চাহিদাভিত্তিক শিক্ষকদের পেশাগত উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ ও মাধ্যমিক শিক্ষার নতুন নতুন ধ্যান-ধারণা-পাঠদান বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া, বিভিন্ন বিদ্যালয় পরিদর্শন করা, বিদ্যালয়ের পাঠদানের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য শিক্ষকদের পরামর্শ দেওয়া, বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির ব্যবস্থা করা ইত্যাদি। এছাড়া উপজেলায় প্রতিটি স্কুলে পরীক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রেও স্থবিরতা সৃষ্টি হয়েছে।
নিয়ামতপুর সরকারি বহুমুখী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, বিগত প্রায় এক বছর থেকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা না থাকায় স্কুলগুলোর অফিসিয়াল কাজ থেকে শুরু করে শিক্ষার উন্নয়নের ক্ষেত্রে নানান সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। উপজেলায় প্রায় স্কুল মাদ্রাসা সহ ৭০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বেতন পেতে যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে। তাছাড়া অতিরিক্ত শিক্ষা কর্মকর্তা থাকলেও স্যারের সাথে প্রায় মুঠোফোনে যোগাযোগ করতে হয়। এতে করে ঠিকমত স্কুলের কাগজপত্রের জমা দেওয়া ও শিক্ষা ব্যবস্থা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে নানান পরামর্শ থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছেন শিক্ষকরা। নিয়ামতপুর উপজেলার পিছিয়ে পড়া শিক্ষার মান উন্নয়নে নিয়মিত মাধ্যমে শিক্ষা কর্মকর্তা পদায়নের জোর দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে নিয়ামতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. মুর্শিদা খাতুন বলেন, দীর্ঘ সময় নিয়ামতপুর উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার পদ খালি রয়েছে। এ কারণে এখানে মান্দা উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তা অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব পালন করছেন। আমি এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।