নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঢাকা শুক্রবার। ভোর ৫:২৫। ২৭ জুন, ২০২৫।

নির্যাতিতদের সমর্থনে রাজশাহীতে অধিকারের মানববন্ধন

জুন ২৬, ২০২৫ ৭:০২
Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার : জাতিসংঘ ঘোষিত নির্যাতিতদের সমর্থনে আর্জাতিক সংহতি দিবস উপলক্ষে “নির্যাতন বিরোধী অপশোনাল প্রটোকল অব কনভেনশন এগেইনেস্ট টর্চার অনুস্বাক্ষর কর” এই দাবিতে মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’র রাজশাহীর কর্মীরা মানববন্ধন করেছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে মহানগরীর সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে মানবাধিকার অধিকার’র রাজশাহীর সমন্বয়ক ও দৈনিক আমার দেশ’র প্রতিনিধি মঈন উদ্দিন বলেন, ১৯৮৮ সাল থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই দিনটি পালিত হয়ে আসছে। যাঁরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নির্যাতন ও নিষ্ঠুর আচরণের শিকার হযেছেন তাঁদের প্রতি সংহতি জানাবার দিন এটি।

এ সময় অন্যান্য বক্তার বলেন, ‘রাষ্ট্রের অমানবিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে মানুষ নানাভাবে দমন-পীড়নের শিকার হচ্ছে। বিশ্ব যান্ত্রিক সভ্যতায় এগিয়ে গেলেও মানবিক সভ্যতা বেশিদূর এগুতে পারেনি। গত বছর জুলাই-আগষ্টের গণঅভ্যুত্থানে তৎকালীন ফ্যাসিষ্ট সরকারের বীভৎস দমন নীতির কারণে অসংখ্য প্রাণ ঝরে গেছে এবং হাজার হাজার ছাত্র-জনতা পঙ্গুত্ববরণ করেছে। বিগত নিষ্ঠুর ও কর্তৃত্ববাদী আওয়ামী সরকারের উৎপীড়নের বিকট রূপ দেখে সারাবিশ্ব হতভম্ব হয়েছে।’ তারা বলেন, নির্যাতিতদের সমর্থনে জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক দিবসটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ দিবসটির তাৎপর্য অপরিসীম।

আরও পড়ুনঃ  বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের কর্মশালা অনুষ্ঠিত

মানববন্ধনে অধিকার’র বিবৃতি পাঠ করেন, নির্যাতনে শিকার আয়না ঘর থেকে ফিরে আসা ব্যক্তি আল আমিন হোসেন। অধিকার’র বিবৃতি উল্লেখ করা হয়- ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর অধিকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই নির্যাতন প্রতিরোধ করা এবং এই ব্যাপারে কার্যকরী আইন প্রণয়ন ও এর পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নসহ মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে প্রচারাভিযান চালিয়ে আসছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর থেকে প্রতিটি সরকারের আমলে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। তবে শেখ হাসিনার সরকারের আমলে তা চরম আকার ধারন করে। গুম করে নির্যাতন, কারাগারে নির্যাতদের ঘটনা ঘটে। এ সময় র‌্যাব, পুলিশ এবং বিভিন্ন গেয়েন্দা সংস্থাকে ব্যবহার করে নির্যাতন, গুম এবং বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা ঘটে। অধিকারের সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী শেখ হাসিনা সরকারে আমলে ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট পর্যন্ত ১৮২ ব্যক্তি নির্যাতনের কারণে মৃত্যুবরণ করেন। অন্তবর্তীকালীন সরকারের আমলে ২০২৪ সালের ৯ আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের ২০ জুন পর্যন্ত ১০ ব্যক্তি নির্ঘাতনে মৃত্যুবরন করেন।

আরও পড়ুনঃ  ইরানে পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন বোমা

এসময় অধিকারের পক্ষ থেকে নির্যাতন বন্ধে অন্তর্বর্তী সরকারের নিকট কয়েকটি সুপারিশ পেশ করা হয়। সুপরিশগুরো হলোঃ ১ বাংলাদেশ সরকারকে অপশোনাল প্রটোকল অব কনভেনশন এগেইনেস্ট টর্চার অনুস্বাক্ষর করতে হবে। দেশে একটি জাতীয় প্রতিরোধ এবং প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা তৈরীসহ নির্যাতন বিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে অনস্বাক্ষরকারী রাষ্ট্র হিসেবে নির্যাতন বন্ধের ব্যাপারে বাধ্যবাধকতা মানতে হবে। ২ মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং নির্যাতন বন্ধে অবিলম্বে একটি স্বাধীন ও পৃথক তদন্তÍকারী প্রতিষ্ঠান গঠন করতে হবে। ৩ অবিলম্বে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন ২০১৩ বাস্তবায়নসহ সব ধরনের নির্যাতন, নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে এবং দোষীদের বিচারের সম্মুখীন করতে হবে। ৪। নির্যাতনের বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে বহাল দায়মুক্তির সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। ৫। নির্যাতনের লক্ষ্যে বিদেশ থেকে বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জামাদী আমদানি করা বন্ধ করতে হবে। ৬। বিচারিক প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার এবং হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। ৭। ২০০৩ সালে ব্লাস্ট বনাম বাংলাদেশ মামলায় দেয়া সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হবে। ৮। নির্যাতন প্রতিরোধে সচেতনয়া সৃষ্টির লক্ষ্যে মানবাধিকার রক্ষাকর্মীদের কর্মকান্ডে কোনভাবেই বাধা দেয়া চলবে না।

আরও পড়ুনঃ  শাপলা প্রতীক চেয়ে ইসিতে নিবন্ধনের আবেদন এনসিপি’র

প্রতিকূল আবহাওয়ায় বৃষ্টির মধ্যে রাজশাহী মহানগরীর প্রায় অর্ধশতাধিক সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী মানববন্ধনে উপস্থি ছিলেন।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।